হিল ভয়েস, ৩ মার্চ ২০১৯, চবি প্রতিনিধি: গত ৩ মার্চ ২০১৯ দুপুর ২:০০ ঘটিকার সময় পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা কর্তৃক চবিতে অধ্যয়নরত আদিবাসী ছাত্রদের নিয়ে মহান নেতা মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা স্মৃতি ক্রিকেট টুর্নামেন্ট ২০১৯ এর সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান চবি কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চবির প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো: সাইদুল ইসলাম। এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চবির প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. কাঞ্চন চাকমা, চবির ইতিহাস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আনন্দ বিকাশ চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির শরৎ জ্যোতি চাকমা, পিসিপি কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক রামভাই পাংখোয়া, পিসিপি কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক বাবলু চাকমা প্রমুখ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পিসিপি চবি শাখার সভাপতি মিন্টু চাকমা ও সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক কৃতি চাকমা। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মহান নেতা মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা স্মৃতি ক্রিকেট টুর্নামেন্ট ২০১৯ এর আয়োজক কমিটির আহবায়ক ও পিসিপি চবি শাখার সহ-সাধারণ সম্পাদক শ্রাবণ চাকমা।
টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলায় হিল ব্রাদার্স (২০১৬-১৭ সেশন) ও হিল গ্যাং (২০১৫-১৬ সেশন) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। অনুষ্ঠানটির শুরুতে মহান নেতা মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমাসহ পার্বত্য চট্টগ্রামের জুম্ম জাতীয় অস্তিত্ব রক্ষার সংগ্রামে যারা শাহাদাৎ বরণ করেছেন তাদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
খেলায় প্রথম ইনিংসে হিল ব্রাদার্স ব্যাটিং করে হিল গ্যাং’কে ১৫২ রানের টার্গেট প্রদান করে। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে হিল গ্যাং ৮৯ রান সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়। ফলে হিল ব্রাদার্স চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে এবং রানার্স আপ হয় হিল গ্যাং। এছাড়াও ম্যান অফ দ্যা ফাইনাল হিল ব্রাদার্স এর খেলোয়াড় কিরন চাকমা (ব্যক্তিগত ৫৫ রান, ৩ উইকেট), টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারী হিল ব্রাদার্স এর খেলোয়াড় লেমন চাকমা (ব্যক্তিগত ৩০২ রান), টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী উইন চাকমা (ব্যক্তিগত ৯ উইকেট) নির্বাচিত হন।
এরপরে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, পিসিপি চবি শাখা চবিতে অধ্যয়নরত আদিবাসী শিক্ষার্থীদের ভ্রাতৃত্বের বন্ধন সুদৃঢ় করার জন্য নানা কর্মসূচি গ্রহণ করে থাকে। খেলার মাধ্যমে প্রত্যেকের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ অবস্থান সৃষ্টি করার জন্য এই টুর্নামেন্টের আয়োজন। বক্তারা আরো বলেন, পিসিপির জন্ম হয়েছে লড়াই সংগ্রামের মাধ্যমে। বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সচেতন শিক্ষার্থী হিসেবে পার্বত্য চট্টগ্রামকে নিয়ে জানতে হবে। পাহাড়ের মানুষের উপর শোষণ-নির্যাতনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। পিসিপির সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত থাকতে না পারলেও অধিকার আদায়ের আন্দোলন সংগ্রামে স্বত:স্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করতে হবে। আন্দোলন করা শুধুমাত্র পিসিপির কর্মীদের দায়িত্ব নয়, সকল সচেতন শিক্ষার্থীকে আন্দোলনে অংশ নিতে হবে। রাজনৈতিক দল ছাড়া বিপ্লব সংঘটিত করা সম্ভব নয়। মহান নেতা মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা শুধুমাত্র পাহাড়ের মানুষের জন্য নয়, সারা দেশের মেহনতি মানুষের জন্য সংগ্রাম করেছেন। মহান নেতা সেইসময় অসাম্প্রদায়িক চেতনার একটি দেশের স্বপ্ন দেখেছেন।
এরপর চ্যাম্পিয়ন দলকে চ্যাম্পিয়ন ট্রফি ও মেডেল এবং রানার্স আপ দলকে রানার্স আপ ট্রফি ও মেডেল তুলে দেয়া হয়। সেই সাথে ম্যান অফ দ্যা ফাইনাল, সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারী, সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী পুরস্কার প্রদান করা হয়। উল্লেখ্য যে, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ হতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত আদিবাসী শিক্ষার্থীদের সেশন ভিত্তিক ১২টি দলের অংশগ্রহণে মহান নেতা মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা স্মৃতি ক্রিকেট টুর্নামেন্ট ২০১৯ শুরু করা হয়।