হিল ভয়েস, ১৬ আগস্ট ২০২১, রাঙ্গামাটি: বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি দল রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলাধীন কাপ্তাই উপজেলার রাইখালী ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) এর নির্বাচিত এক জুম্ম সদস্যকে ইউপি কার্যালয় থেকে টেনে হিচড়ে সেনা ক্যাম্পে নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গতকাল ১৫ আগস্ট ২০২১ দুপুর আনুমানিক ১২:৩০ টার দিকে এই ঘটনা ঘটে।
ঘটনার শিকার ইউপি সদস্যের নাম সুইচাপ্রু মারমা (৪৫), পীং-মৃত ক্যজউ মারমা। তার বাড়ি রাইখালী ইউনিয়নের অধীন ৮নং ওয়ার্ডের পানছড়ি পাড়া গ্রামে। তিনি ৮নং ওয়ার্ডের একজন নির্বাচিত ইউপি সদস্য।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল ১২:৩০ টার দিকে কাপ্তাই সেনা জোনের অধীন রাইখালী ইউনিয়নের নারানগিরি মুখ পাড়া নামক স্থানে নতুন স্থাপিত সেনা ক্যাম্পের কম্যান্ডার সুবেদার মো: নাজমুল এর নেতৃত্বে সেনাবাহিনীর একটি দল রাইখালী ইউনিয়ন পরিষদের কার্যালয়ে প্রবেশ করে। এসময় সেনা সদস্যরা সেখানে দায়িত্ব পালনরত ইউপি সদস্য সুইচাপ্রু মারমাকে অন্যায়ভাবে টেনে হিচড়ে ও মারধর করে গাড়িতে তুলে নারানগিরি মুখ পাড়ার নতুন সেনা ক্যাম্পে নিয়ে যায়।
কী কারণে সেনাবাহিনী ইউপি সদস্য সুইচাপ্রু মারমাকে এমন অমানবিকভাবে তুলে নিয়ে গেল তা জানা যায়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন গ্রামবাসী বলেন, সেনাবাহিনীর এই আচরণ চরম সাম্প্রদায়িক এবং জাতিগত হিংসাপ্রসূত। তারা সেনাবাহিনীর এই আচরণে তীব্র নিন্দা জানান এবং ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
স্থানীয় সূত্রে আরও জানা গেছে, এই ঘটনার পূর্বেও একবার গত ২৭ এপ্রিল ২০২০ পার্শ্ববর্তী মিটিঙ্গ্যাছড়ি পাড়া এলাকায় স্থাপিত নতুন সেনা ক্যাম্পের কম্যান্ডার সেকেন্ড লেঃ মাহবুব এর নেতৃত্বে একদল সেনা সদস্য সুইচাপ্রু মারমাকে সেনা ক্যাম্পে নিয়ে যায়। পরে সেখান থেকে সুইচাপ্রু মারমাকে কাপ্তাই সেনা জোনে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে প্রায় এক সপ্তাহ আটক রেখে এবং শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে সুইচাপ্রু মারমাকে গুরুতরভাবে আহত করা হয়। পরে ৩ মে ২০২০ বিকাল ৪:০০ টার দিকে সুইচাপ্রু মারমার স্ত্রী ও ছোট ভাইকে ডেকে তাদের জিম্মায় শর্তসাপেক্ষে সুইচাপ্রু মারমাকে ছেড়ে দেয় সেনাবাহিনী।
গতকাল আটকের পর এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সুইচাপ্রু মারমাকে ছেড়ে দেয়নি সেনাবাহিনী।