হিল ভয়েস, ৩০ জুন ২০২১, খাগড়াছড়ি: বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কর্তৃক এবার খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলাধীন গুইমারা উপজেলার সিন্দুকছড়ি ইউনিয়নের ঠান্ডাছড়ি নামক স্থানে নঞ্জয় ত্রিপুরা(৩৫), পীং-মৃত পজিন কুমার ত্রিপুরা, নামে এক জুম্মর জুমঘর পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
আজ ৩০ জুন ২০২১ বুধবার মধ্যরাত ২:০০ টার দিকে এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে।
ভুক্তভোগী ও এলাকাবাসীর সূত্রে জানা গেছে, গত ২/৩ মাস আগে থেকে ঠাণ্ডাছড়িতে সেনাবাহিনীর একটি দল তাদের পরিত্যক্ত একটি পোষ্টে আবার নিয়মিত অবস্থান করতে শুরু করে। সেনা সদস্যরা এর পার্শ্ববর্তী নঞ্জয় ত্রিপুরাকে (৩৫) জুম চাষ না করার জন্য ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে। নঞ্জয় ত্রিপুরা জীবিকার দায়ে তাদের ভয়-ভীতিতে ভীত না হয়ে জুম চাষ করে। এতে সেনাসদস্যরা নঞ্জয় ত্রিপুরার নিকট ক্ষোভ প্রকাশ করে।
সেনা পোস্টে অবস্থানরত ক্ষীপ্ত সেনা সদস্যরা আজ দিবাগত মধ্যরাত আনুমানিক ২:০০টার দিকে নঞ্জয় ত্রিপুরার জুমঘরে গিয়ে তার জুম ঘরে রাখা চাউল, হাড়ি-পাতিল, লেপ, কাপড়-চোপড়সহ ঘরের সব জিনিসপত্র বের করে দিয়ে ঘরটি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। এ সময় নঞ্জয় ত্রিপুরার পরিবার জুমঘরে ছিলেন না। তারা কেবল দুপুরের খাবার খেয়ে জুমঘরে বিশ্রাম নিতেন।
ভুক্তভোগী হিল ভয়েসকে বলেন, আমাকে গত কয়েক মাস আগে সেনাবাহিনীর সদস্যরা জুম চাষ না করার জন্য ভয় দেখান। আমি তাদের কথা মানিনি, মানতে পারি না। তাই আমার জুমঘরটা তারা পুড়ে দিয়েছে। আনি এই ঘটনার যথাযথ বিচার চাই।
উল্লেখ্য, সেনাবাহিনী কর্তৃক গত ১২ জুন ২০২১ রাতের আঁধারে সিন্ধুকছড়ির পুঙখি মুড়োতে সনে রঞ্জন ত্রিপুরা নামে এক জুম্মর নির্মাণ করা ঘর ভেঙে দিয়ে তার ভোগদখলীয় জায়গাটি দখল করা হয়। এরপর সেই জায়গায় সেনাবাহিনী ষড়যন্ত্রমূলকভাবে তড়িঘড়ি করে একটি ‘কমিউনিটি ক্লিনিক’ স্থাপন করার ঘোষণা দেয়। এর সাথে একটি সেনা চৌকিও নির্মাণ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
এই ঘটনায় জমির মালিক সনে রঞ্জন ত্রিপুরা প্রধানমন্ত্রীর বরাবরে স্মারকলিপি দিলেও এখনো কোন সুরাহা মিলছে না। তারপর থেকে পুঙখি মুড়া ও তার আশেপাশের এলাকায় সেনা নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে বলে জানা গেছে।