হিল ভয়েস, ২৮ অক্টোবর ২০২০, রাঙ্গামাটি: রাঙ্গামাটি জেলার বিলাইছড়ি উপজেলা থেকে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া আদিবাসী জুম্ম শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের জন্য আয়োজিত বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি বিষয়ক সেমিনারে সেনা ও প্রশাসন বাধা দিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১২:০০ টার দিকে উপজেলার একমাত্র সরকারী হাই স্কুলে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ মঙ্গলবার সকাল ১০:০০ টার দিকে বিলাইছড়ি সরকারি হাই স্কুলে এ বছর বিলাইছড়ি উপজেলা থেকে বিভিন্ন সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিচ্ছু জুম্ম শিক্ষার্থীদের জন্য বিলাইছড়ি উপজেলা থেকে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া আদিবাসী জুম্ম শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে একটি বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি বিষয়ক সেমিনার আয়োজন করে। আয়োজনের জন্য গত ২০ সেপ্টেম্বর ২০২০ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছ থেকে মৌখিক অনুমতিও লাভ করে।
সকাল ১০:০০ টায় শুরু হয়ে সেমিনারও ঠিকঠাক চলছিল। সকাল ঠিক ১০:৫০ টায় গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআই এর দুইজন লোক আসে। কাউকে কিছু না জানিয়ে ছবি তুলে নিয়ে যায়। এরপর ১১:৩০ টার দিকে ১০/১৫ জনের সেনাবাহিনীর একটি দল নিয়ে দীঘলছড়ি সেনা জোনের জোন কমান্ডার সেমিনার কক্ষে এসে উপস্থিত হয়। তার পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার পারভেজ চৌধুরীর নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে দীঘলছড়ি জোনের জোন কমান্ডার ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার ব্যানারে লেখা আদিবাসী নিয়ে প্রশ্ন তুলে। দুইজনেই বলেন, আদিবাসী শব্দটি একটা নিষিদ্ধ শব্দ। তোমরা এরকম স্বাধীনতা বিরোধী ও সংবিধান পরিপন্থী লেখা ব্যানারে লিখতে পার না। তারপর আরেকটি প্রশ্ন তোলা হয়, এখানে পাহাড়ি ছাত্রছাত্রী বাদে আর কাউকে রাখা হয়নি কেন?
এসময় আয়োজকদের পক্ষ থেকে বলা হয়, আদিবাসী কোন অসাংবিধানিক শব্দ না। সংবিধানে আদিবাসী বলা যাবে না মর্মে কোন লাইন লেখা নেই। আমরা এই সেমিনার করছি উপজেলা থেকে বিভিন্ন সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিচ্ছু সকল ছাত্রছাত্রীদের জন্য। কেবল পাহাড়ি শিক্ষার্থীদের জন্য করছি ব্যানারেও লেখা নেই। আমরা সবাইকে আহ্বান করেছিলাম। এটি আয়োজন করার জন্য আমরা উপজেলা প্রশাসনকে জানিয়েছিলাম।
এসময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার পারভেজ চৌধুরী বলে উঠেন, তোমরা যে ব্যানার ব্যবহার করবা সেটাতো আমাকে জানাওনি।
দীর্ঘক্ষণ বাকবিতন্ডার পর দীঘলছড়ি জোনের জোন কমান্ডার ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার পারভেজ চৌধুরী সেমিনার শেষ করার জন্য নির্দেশ দেয় এবং ‘আদিবাসী’ শব্দটি ব্যবহারের জন্য ক্ষমা চেয়ে আয়োজক কমিটিকে আরেকটি দরখাস্ত দিতে বাধ্য করা হয়।