হিল ভয়েস, ৬ মে ২০২৫, চট্টগ্রাম: আজ ৬ মে ২০২৫ দুপুর ১২ ঘটিকায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আদিবাসী শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে ক্যাম্পাসের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে বান্দরবানে এক আদিবাসী খেয়াং নারীকে ধর্ষণ ও নির্মমভাবে হত্যার প্রতিবাদে ও ধর্ষকদের বিচারের দাবিতে এক বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে অনুত্তর চাকমা,শিক্ষার্থী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এক স্বাক্ষরিত বার্তা প্রদান করা হয়।
বার্তায় উল্লেখ করা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষার্থী ও বাংলাদেশ মারমা স্টুডেন্ট কাউন্সিল, চবি শাখার যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শৈ মংসাইন মারমা বলেন, ঐতিহাসিক কাল থেকে পাহাড়ের আদিবাসী জনগণ নিপীড়ন অত্যাচারের মধ্যে বেঁচে আছে। বর্তমান বাংলাদেশেও সে প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। তার প্রমাণ গতকাল বান্দরবানে আদিবাসী খেয়াং নারীকে ধর্ষণের পর হত্যা করার মতো নৃশংস ঘটনা
তিনি আরও বলেন, ১৯৯৭ সালে পাহাড়ের সমস্যাকে রাজনৈতিকভাবে সমাধানের লক্ষ্যে পার্বত্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিলো। এই চুক্তি বাস্তবায়ন না হওয়ায় পাহাড়ে অপরাধসমূহ বাড়ছে। অতিদ্রুত চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন করে পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা করার দাবি জানান এবং খিয়াং নারী ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় দোষীদের বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থী মেথুইচিং খেয়াং বলেন, আমরা বেশি কিছু বলতে চাই না। আজকে যেখানে আমাদের রুমে বসে ক্লাস করার কথা সেখানে আমাদের মা বোনের উপর হওয়া নৃশংসতা প্রতিবাদে তীব্র রোদে আমাদের সমাবেশ করতে হচ্ছে। পাহাড়ে আমাদের জীবনকে বোঝাতে এটাই যথেষ্ট। পাহাড়ে নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এ পর্যন্ত যতগুলো ধর্ষণ ঘটনা ঘটেছে তার সুষ্ঠু বিচার করা হোক।
সংহতি বক্তব্যে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন চবি সংসদের প্রতিনিধি মো. সোহেল রানা বলেন, আমরা জানতে পেরেছি আদিবাসী খিয়াং নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পর নির্মম ভাবে হত্যা করা হয়েছে। যা একটি বিকৃত মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ। পাহাড়ে এ ধরনের ঘটনা নতুন নয়।
তিনি আরও বলেন, ধর্ষকের কোনো জাত কিংবা ধর্ম নেই,ধর্ষকের পরিচয় সে একজন অপরাধী। সেই অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যাবস্থা করতে হবে।
সংহতি বক্তব্যে চট্টগ্রাম পলিট্যাকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী সোহেল খেয়াং বলেন, পাহাড়ে এযাবৎ যতগুলা ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে তার কোনোটির সুষ্ঠু বিচার হয়নি। এই বিচারহীনতা অপরাধীদের আরও অপরাধ সংঘটিত করতে উৎসাহিত করছে। ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী রিবেক চাকমার সঞ্চালনায় সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী নুখ্যইমং মারমা। উক্ত সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ আদিবাসী শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের প্রতিনিধিরা বক্তব্য রাখেন। প্রতিবাদ সমাবেশে স্বাগত বক্তব্য রাখেন চবির ২৩-২৪ সেশনের শিক্ষার্থী চৈহ্লাপ্রু খেয়াং।
পরিশেষে সমাবেশের সভাপতি নুখ্যইমং মারমার সমাপনী বক্তব্যের মধ্য দিয়ে প্রতিবাদ সমবেশটি সমাপ্ত হয়। সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে শহীদ মিনার প্রাঙ্গন থেকে প্রশাসনিক ভবন হয়ে ঘুরে এসে বুদ্ধিজীবী চত্বরে এসে শেষ হয়।
+ There are no comments
Add yours