হিল ভয়েস, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, চবি: গত ১৬ এপ্রিল ২০২৫ সকাল আনুমানিক ৬:৩০ ঘটিকায় খাগড়াছড়ি সদরস্থ গিরিফুল এলাকা থেকে অপহৃত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ জন শিক্ষার্থীকে অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি ও অপহরণকারীদের শাস্তির দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত আদিবাসী শিক্ষার্থীরা।
আজ ১৯ এপ্রিল ২০২৫ বিকাল ৪ ঘটিকায় চাকসু, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়- “গত বুধবার (১৬ এপ্রিল) সকাল আনুমানিক ৬:৩০ ঘটিকায় খাগড়াছড়ি সদরস্থ গিরিফুল এলাকা থেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ জন শিক্ষার্থী অপহরণের শিকার হয়। অপহৃত শিক্ষার্থীরা হলেন- চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মৈত্রীময় চাকমা ও একই বিভাগ ও একই শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী অলড্রিন ত্রিপুরা, নাট্যকলা বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী দিব্যি চাকমা, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রিশন চাকমা, প্রাণীবিদ্যা বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী লংঙি ম্রো।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায় যে, ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) এ অপহরণ ঘটনার সাথে জড়িত। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ জন শিক্ষার্থীর অপহরণের ঘটনায় আমরা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আদিবাসী শিক্ষার্থীরা অপহৃতদের নিঃশর্ত দ্রুত মুক্তির দাবি জানাচ্ছি এবং একই সাথে অপহরণকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শান্তির দাবি জানাচ্ছি।
দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা, প্রগতিশীল ব্যক্তি ও ছাত্র সংগঠনসমূহ তীব্র নিন্দা এবং অপহৃতদের নিঃশর্ত দ্রুত মুক্তির দাবি জানাচ্ছে।”
এতে আরো বলা হয়, “চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ শিক্ষার্থীর অপহরণের আজ ৩ দিন (৮০ ঘন্টা) পেরিয়ে গেলেও অপহৃতদের এখনো কোন হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। অপহরণ ঘটনা বিষয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সম্যকভাবে অবগত হলেও এখন অবধি দৃশ্যমান কোন কার্যকরী পদক্ষেপ পরিলক্ষিত হচ্ছে না। এমতাবস্থায় আমরা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় আদিবাসী শিক্ষার্থীবৃন্দ গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি। পরবর্তীতে তাদের সাথে কি কথা হয়েছে আমরা এখনও জানতে পারিনি। এমনকি তাদের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না।
অপহরণের ৩ দিন পেরিয়ে গেলেও এখনো অপহৃত ৫ শিক্ষার্থীর সন্ধান না পাওয়া এবং প্রশাসনের পক্ষ থেকে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের উদ্যোগ দেখতে না পাওয়ায় আমরা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আদিবাসী শিক্ষার্থীবৃন্দ আন্দোলনে যেতে বাধ্য হচ্ছি। আমরা আগামীকাল থেকে একযোগে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসসহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, তিন পার্বত্য জেলা শহর, মহানগরে সচেতন, মানবিক ও প্রগতিশীল ছাত্র ও নাগরিক সমাজকে আমাদের আন্দোলনে সংহতি ও সহযোগিতা প্রদানের জন্য উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।”
এই সময় ছাত্রদের পক্ষ থেকে প্রশাসনের কাছে নিম্নোক্ত দাবি জানানো হয়-
১। অবিলম্বে অপহৃত ৫ শিক্ষার্থীকে নিঃশর্তে ও সুস্থ শরীরে মুক্তি দিতে হবে।
২। শিক্ষার্থীদের উদ্ধারে প্রয়োজনীয় ও যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
৩। অপহরণের সাথে যুক্ত সবাইকে গ্রেফতারপূর্বক শাস্তির আওতায় আনতে হবে।