লামায় ১৭ ত্রিপুরা পরিবারের বাড়িঘর পোড়ানোর ঘটনায় পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলনের উদ্বেগ

হিল ভয়েস, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ঢাকা: বান্দরবানের লামা উপজেলার সরই ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের পূর্ব তংগাঝিরি পাড়া গ্রামের ১৭ ত্রিপুরা গ্রামবাসীর বাড়িঘরে আগুন দিয়ে ভস্মিভূত করে দেওয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও নিন্দা জানিয়েছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলনের যুগ্ম সমন্বয়কারী মানবাধিকার কর্মী জাকির হোসেন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. খায়রুল ইসলাম চৌধুরী।

বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলনের সদস্য মুর্শিদা আক্তার ডেইজীর স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, তংগাঝিরি পাড়া গ্রামে ১৯ ত্রিপুরা পরিবারের বাস। উক্ত গ্রামবাসীরা খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বী এবং নিজেদের গ্রামে গির্জা না থাকায় বড়দিনের আগে পার্শ্ববর্তী গ্রামে আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে যান। সেই সুযোগে বড় দিনের দিনই একদল দুর্বৃত্ত দিবাগত রাত ১ টার দিকে অগ্নিসংযোগ করে বাড়িগুলো পুড়িয়ে দেয়। এতে ১৯ পরিবারের মধ্যে ১৭ পরিবারের ঘর-বাড়ি পুড়ে গিয়ে এখন সর্বশান্ত হয়েছে বলে জানা গেছে।

বিবৃতিতে যুগ্ম সমন্বয়কারী উদ্বেগ জানিয়ে বলেন, আমরা জানতে পেরেছি বিগত চার-পাঁচ বছর আগে একদল লোক নিজেদের ‘এসপির লোক’ পরিচয় দিয়ে জোরপূর্বক পাড়াটি উচ্ছেদ করে বাগান করে। গত ৫ আগষ্ট আওয়ামী সরকারের পতনের পর দখলদাররাও পাড়া ছেড়ে চলে যান এবং জায়গাটিতে পূর্বে উচ্ছেদকৃত মূল বসবাসকারী ১৯টি ত্রিপুরা পরিবার পুনরায় পাড়ায় এসে ঘর তৈরী করে বসবাস করতে শুরু করে। উক্ত পাড়াটি পুলিশের সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের স্ত্রীর নামে ইজারা দেওয়া হয়েছে বলেও জানা গেছে।

এ বিষয়ে তাঁরা আরো বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যার অন্যতম হল- ভূমি সমস্যা। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির মাধ্যমে গঠিত পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের মাধ্যমে এ সমস্যার সমাধান হওয়ার কথা ছিল কিন্তু পার্বত্য চুক্তি যথাযথ বাস্তবায়ন না হওয়ায় এভাবে প্রায়ই আদিবাসীদের ভূমি দখল বিরোধ এর সমস্যা লেগেই আছে। ফলে নানাভাবে নিপীড়ন ও মানবাধিকার লংঘনের শিকার হচ্ছেন আদিবাসীরা। পাহাড়ের আদিবাসীদের ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি ও এ অঞ্চলে স্থায়ী শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য অনতিবিলম্বে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন করার আহ্বান জানাচ্ছি।

যুগ্ম সমন্বয়কারীদ্বয় এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থ ত্রিপুরা আদিবাসীদের যথাযথ ও দ্রুত ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা গ্রহন করে গ্রামবাসীর মনে ভয় ও শংকা দূর করার জন্য এলাকায় দ্রুত নিরাপত্তা জোরদার করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নিকট দাবি জানান। এবং উক্ত ঘটনার যথাযথ তদন্ত করে দোষীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার জন্য আহ্বান জানানো হয়।

More From Author