হিল ভয়েস, ১৩ আগস্ট ২০২০,রাজশাহী : রাজশাহী সদর সাব–রেজিস্ট্রারের কার্যালয় থেকে একটি দলিলের ভলিউম বহি গায়েব হয়ে গেছে। বারবার আদালত তলব করলেও ভলিউম বহিটি পাঠানো হচ্ছে না। বলা হচ্ছে, সেটি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। শুধু এই ভলিউম বহির কারণে বছরের পর বছর আদিবাসী কৃষকের মামলা শেষ হচ্ছে না।
ভুক্তভোগী এই কৃষকের নাম অনিল কুমার মাহাতো। চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার মাধবপুর গ্রামে তার বাড়ি। তার বাবা মৃত বিরেন্দ্র মাহাতো মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতে চলে যান। রেখে যান বেশ কিছু ধানি জমি। সেসব জমি অনিল কুমার মাহাতো ভোগদখল করে আসছিলেন। ২০০৭ সালে এলাকার কিছু ব্যক্তি দাবি করেন, বিরেন্দ্র ১৯৬৪ সালে এসব জমি তাদের কাছে বিক্রি করে গেছেন।
এ নিয়ে দেখা দেয় জটিলতা। অনিল কুমার মাহাতো নাচোল সহকারী জজ আদালতে মামলা করেন। ২০১৪ সালে মামলার রায় হয় বিবাদীদের পক্ষেই। অনিল কুমার মাহাতো চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা জজ আদালতে আপিল করেন। এরপর আদালত কয়েক দফা ১৩ মে ১৯৬৪ সালের ৮৩৬৯ নম্বর দলিলের ১১১ ভলিউমের ৬৬ থেকে ৬৯ পর্যন্ত পৃষ্ঠা তলব করেন। কিন্তু রাজশাহী সদর সাব–রেজিস্ট্রারের কার্যালয় থেকে তা পাঠানো হয়নি। প্রত্যেকবার সদর সাব–রেজিস্ট্রার চিঠি দিয়ে আদালতকে বলেছেন, তলবি সমন প্রাপ্তির পর থেকে এ পর্যন্ত ভলিউম বহি খুঁজে না পাওয়ায় বিজ্ঞ আদালতে উপস্থাপন করতে না পারায় আন্তরিকভাবে দুঃখিত ও ক্ষমাপ্রার্থী। ভলিউম বহিটি পাওয়ামাত্র আদালতে পাঠানো হবে।
ভুক্তভোগী অনিল কুমার মাহাতো বলছেন, বিবাদীপক্ষ নকল কবলা দলিল দেখিয়ে তাদের পক্ষে রায় নিয়েছে। সাব–রেজিস্ট্রারের কার্যালয়কে প্রভাবিত করেছে। যার কারণে ভলিউম বহি পাঠানো হচ্ছে না। তার আপিল মামলাও শেষ হচ্ছে না। অনিল বলেন, ভলিউম বহি আদালতে উপস্থাপন করা হলে তিনি মামলায় জিতবেন। তিনি এর সমাধান প্রত্যাশা করেন। জানতে চাইলে সদর সাব–রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত সাব–রেজিস্ট্রার বাদল কৃষ্ণ বিশ্বাস বলেন, ভলিউম বহি হারিয়ে যাবে কোথায়? নিশ্চয় আছে। তবে এ বিষয়টি আমি জানি না। ভুক্তভোগী কৃষক এলে আমি সেটি খুঁজে দেখার ব্যবস্থা করব।
সূত্র : দৈনিক যুগান্তর