চিৎমরঙে নতুন সেনা ক্যাম্প স্থাপন, উক্ত ক্যাম্প কর্তৃক ৪ জনকে আটক ও হয়রানি

হিল ভয়েস, ১০ গস্ট ২০২০, রাঙ্গামাটি:  রাঙ্গামাটি জেলার চিৎমরং ইউনিয়নে তিনজন ব্যক্তির ৫.০ জায়গা দখল করে ‘চিৎমরং অস্থায়ী ক্যাম্প’ নামে একটি নতুন ক্যাম্প স্থাপন এবং স্থাপনের পর উক্ত নতুন ক্যাম্পের সেনাবাহিনী কর্তৃক এযাবৎ অন্তত চারজন নিরীহ গ্রামবাসীকে আটক করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায় যে, ১৯৯৭ সালের পার্বত্য চুক্তিকে লঙ্ঘন করে চিৎমরং ইউনিয়নের অন্তর্গত চিৎমরং বৌদ্ধ বিহারের প্যাগোডার প্বার্শে একটি পাহাড়ে দুই মাস পূর্বে সেনাবাহিনীর একটি অস্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে।

অস্থায়ীভাবে চিৎমরম সেনা ক্যাস্পের জায়গার মালিকরা হচ্ছে মংশৈপ্রু মারমা, ক্যক্যমং চৌধুরী ও নির্মল দাস নামে তিনজন গ্রামবাসীর বন্দোবস্তকৃত ৫.০ একর জায়গা দখল করে উক্ত অস্থায়ী সেনা ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এই ক্যাম্পসহ ২০২০ সালের মধ্যে রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়ি জেলায় মোট ৪টি নতুন ক্যাম্প স্থাপন করা হলো। উল্লেখ্য যে, পার্বত্য চুক্তিতে সকল অস্থায়ী ক্যাম্প প্রত্যাহারের বিধান থাকলেও এখনো পার্বত্য চট্টগ্রামে চার শতাধিক অস্থায়ী ক্যাম্প রয়েছে। সেই সাথে আরো নতুন নতুন ক্যাম্প করা হচ্ছে।

বর্তমানে সদ্য স্থাপিত উক্ত চিৎমরং সেনা ক্যাম্পে ৫০ জনের মতো সেনা রয়েছে।এই সেনা ক্যাম্প স্থাপনের পর থেকে ক্যাম্পের সেনা সদস্যরা চিৎমরং বাজারে আসা জুম্মদেরকে নানাভাবে হয়রানি, আটক মারধর করে আসছে। যার ফলে এলাকার লোকজন আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছে।

গত ৮ আগস্ট ২০২০ শনিবার জনসংহতি সমিতির চিৎমরং ইউনিয়ন কমিটির অর্থ সম্পাদক মংনুচিং মারমা (৫৬) ও চাক্কুয়া পাড়ার অধিবাসী আথোয়াইমং মারমা (৩২) চিৎমরং বাজারে কলাছড়া বিক্রি করতে গেলে চিৎমরং ক্যাম্পের সেনারা তাদের দুজনকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়।পরবর্তীতে আথোয়াইমং মারমাকে ছেড়ে দিলেও মংনুচিং মারমাকে এখনো সেনাবাহিনীর হেফাজতে রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে।

এর আগে গত ২৮ জুলাই ২০২০ মঙ্গলবার উক্ত চিৎমরং ক্যাম্পের সেনারা চিৎমরমের চাক্কুয়া পুর্নবাসন পাড়া নিবাসী হ্লাব্রে মারমা (৩৫) ও বটতলি পাড়া নিবাসী মংশৈউ মারমা (৫৩) নামে দুই নিরীহ ব্যক্তিকে  আটক করে। নানা হয়রানি ও জিজ্ঞাসাবাদের পর তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হয় বলে জানা গেছে।

জনসংহতি সমিতির মতে, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করা, পার্বত্য চট্টগ্রাম পরিস্থিতিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করা, সর্বোপরি পার্বত্য চুক্তি বিরোধী ও জুম্ম স্বার্থ পরিপন্থী কার্যক্রম নির্বিঘেœ বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে আন্দোলনরত জুম্মদেরকে ক্রিমিলাইজেশনের অংশ হিসেবে চলমান কোভিড-১৯ মহামারীর মধ্যেও সেনাবাহিনী, বিজিবি, গোয়েন্দা বাহিনী ও পুলিশ পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনা অভিযান, ধরপাকড়, তল্লাসী, হয়রানি ইত্যাদি মানবতা বিরোধী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।

More From Author