হিল ভয়েস, ৩০ জুলাই ২০২০, ঢাকা: করোনাকালে প্রান্তিক মানুষের জীবনের দুঃখ-দুর্দশা নিয়ে গতকাল ২৯ জুলাই ২০২০ বুধবার মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন একটি অনলাইন আলোচনা সভা আয়োজন করে। সেখানে এমজেএফের সহযোগী সংগঠনগুলো তাদের প্রকল্প এলাকা থেকে বেশ কিছু তথ্য তুলে ধরে।
সেখানে বলা হয়, ২১ হাজার ৮২৬ দলিত ও হরিজন, ২৯ হাজার ৬৩১ প্রতিবন্ধী, ৪৯ হাজার ২৩৯ জেলে এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত সরকারি কোনো সহায়তা পায়নি। অন্যদিকে, তিন পার্বত্য জেলা ও সমতলের আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীর মাত্র ৪ হাজার ১০০ পরিবার সরকারি সুবিধা পেয়েছে, যা শতকরা ২৫ শতাংশ।
অনলাইন আলোচনা সভায় শাহীন আনামের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। বিশেষ অতিথি হিসেবে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের বিশেষ ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য ও চাকমা সার্কেলের রাজা দেবাশীষ রায়, রিসার্চ ইনিশিয়েটিভসের নির্বাহী পরিচালক মেঘনা গুহঠাকুরতা, সাংসদ অ্যারোমা দত্ত ও নাগরিক উদ্যোগের নির্বাহী পরিচালক জাকির হোসেন প্রমুখ।
এমজেএফ জানায়, সরকার করোনাকালে ৫০ লাখ দুস্থ মানুষের মাঝে বিতরণের জন্য ১ হাজার ২৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে এবং এই বিতরণকাজ চালানোর জন্য ৮ কোটি টাকা ব্যয় বরাদ্দও ধরা হয়েছিল। কিন্তু ৭ জুলাই পর্যন্ত মাত্র ১৬ লাখ মানুষ এই টাকা পেয়েছেন। বাকি ৩৪ লাখ মানুষ এখনো সেই সহায়তা পায়নি।
বৈঠকে প্রধান অতিথি পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর প্যাকেজ সবার জন্য। কারও বাদ থাকার কোনো কারণ নেই। নতুন করে যারা দরিদ্র হয়েছে, তারা অস্থায়ী। কয়েক মাসের জন্য। এ অবস্থা তারা দ্রুতই কাটিয়ে উঠবে। এরা স্থায়ী দরিদ্র না। তিনি আশা করছেন, এর মধ্যে এই নতুন দারিদ্র্যের সংখ্যা কমেও এসেছে।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের বিশেষ ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, নতুন করে দরিদ্র লোকের সংখ্যা বেড়েছে। অনেক ধরনের পদক্ষেপ এই মানুষগুলোর জন্য নিতে হবে। এই মানুষদের সম্পর্কে তথ্য থাকতে হবে এবং তাদের সহায়তার কাজগুলোর জবাবদিহি থাকতে হবে।
চাকমা সার্কেলের প্রধান রাজা দেবাশীষ রায় পার্বত্য অঞ্চলে সরকারি সহায়তা অপ্রতুল উল্লেখ করে তা বাড়ানোর সুপারিশ করেন।
বৈঠকের সঞ্চালক ও মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম বলেন, প্রান্তিক গোষ্ঠীকে সহায়তার জন্য সরকারের সদিচ্ছা আছে। কিন্তু তা সুষ্ঠু বণ্টনের চ্যালেঞ্জ অনেক।
বৈঠকে আরও বক্তব্য দেন ডিএফআইডির বাংলাদেশ প্রতিনিধি জুডিথ হারবার্টসন, রিসার্চ ইনিশিয়েটিভসের নির্বাহী পরিচালক মেঘনাগুহ ঠাকুরতা, সাংসদ অ্যারোমা দত্ত ও নাগরিক উদ্যোগের নির্বাহী পরিচালক জাকির হোসেন, আদিবাসী ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিরা।