বাজেট-২০২০: আদিবাসীদের জন্য ১১ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের দাবি

হিল ভয়েস, জুন ২০২০, ঢাকাঅ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এএলআরডি) আয়োজনে গবেষণা প্রতিষ্ঠান এইচডিআরসি সহযোগিতায় গতকাল রোরবার জাতীয় বাজেট-২০২০ ‘গ্রামীণ নারী, আদিবাসী জনগোষ্ঠী ও ভূমি সংস্কারের জন্য জাতীয় বাজেটে বরাদ্দ’ শীর্ষক এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে নিজেরা করি’র সমন্বয়কারী খুশী কবিরের সভাপতিত্বে প্যানেল আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং, চাকমা সার্কেলের উপদেষ্টা য়েন য়েন, সাংবাদিক আবু সাঈদ খান, মোবিন জিন্নাহ, সিরাজুল ইসলাম, শামসুল ইসলাম, থিওফিল নকরেক প্রমুখ।

সূচনা বক্তব্য রাখেন, এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা। তিনি বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তী ৫০ বছরে দেশের উন্নয়নে যাদের অবদান সবচেয়ে বেশি সেই শ্রমজীবী, কৃষিজীবী মানুষের কোনো প্রতিফলন নেই জাতীয় পরিকল্পনা, বাজেট বরাদ্দসহ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই। এরজন্য দৃষ্টিভঙ্গির পরির্বতন জরুরি।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অর্থনীতিবিদ আবুল বারকাত। তিনি বলেন, মাথাপিছু গড় বাজেট বরাদ্দের তুলনায় দেশের সব অঞ্চলের আদিবাসীদের জন্য ২৬ থেকে ২৭ শতাংশ কম এবং সমতলের আদিবাসীদের জন্য ৪৬ থেকে ৪৭ শতাংশ কম বরাদ্দ দেওয়া হয়।

তিনি আরও বলেন, জাতীয় বাজেটে আদিবাসীদের জন্য সুনির্দিষ্ট কোনো প্রকল্প নেই। যে নামেই বরাদ্দ দেয়া হোক তার সামান্য অংশই তাদের কাছে পৌঁছায়। প্রত্যেক আদিবাসীর জন্য জাতীয় মাথাপিছু গড় বরাদ্দের তিনগুণ বরাদ্দ অর্থাৎ ১১ হাজার ১৪৯ কোটি টাকা আসন্ন বাজেটে বরাদ্দের প্রস্তাব করেন তিনি।

প্যানেল আলোচনায় চাকমা সার্কেলের উপদেষ্টা য়েন য়েন বলেন, আগামী অর্থবছরের বাজেটে কোভিড ও কোভিড পরবর্তী পরিস্থিতিকে বিবেচনায় এনে প্রান্তিক ও আদিবাসী মানুষের জন্য বিশেষ বরাদ্দ দেওয়া প্রয়োজন। হতদরিদ্র ও প্রান্তিক মানুষেরজন্য অন্তত পাঁচ থেকে ছয় মাসের জন্য রেশনিং ব্যবস্থা এবং পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দুর্গম অঞ্চলগুলোতে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থার জন্য বর্ধিত হারে বাজেট বরাদ্দের দাবি জানান তিনি।

সাংবাদিক আবু সাঈদ খান বলেন, প্রান্তিক মানুষের জন্য বিদ্যমান রাষ্ট্রীয় সুরক্ষা বলয়কে দ্বিগুণ করতে হবে।

বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সঞ্জীব দ্রং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে বিশেষ এলাকার জন্য উন্নয়ন সহায়তা প্রকল্প পরিচালনায় আদিবাসী জাতিগোষ্ঠী-বান্ধব প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানান।

অন্যান্য বক্তারা বলেন, কোভিড-১৯ এর এই মহামারিতে এসব আদিবাসী জাতিসমূহের মানুষের অবস্থা আরও সঙ্গীন হয়ে গেছে। তাদের জন্য ১১ হাজার কোটি টাকার বেশি বরাদ্দ দরকার। এসব আদিবাসী সম্প্রদায়ের দরিদ্র মানুষের জন্য রেশন চালু করার দাবিও তোলেন।

More From Author