হিল ভয়েসে ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, রাঙ্গামাটি: অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সংবিধান সংশোধন, সংযোজন বা নতুন সংবিধান প্রণয়নের আলোচনা চলছে। দেশ সংস্কারের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে সেখানে যেন পাহাড়ি মানুষদের বঞ্চিত না করা হয় সেই আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করেছেন সাবেক সংসদ সদস্য ও জেএসএসের সহ-সভাপতি ঊষাতন তালুকদার।
রাঙ্গামাটিতে মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার ৮৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ঊষাতন তালুকদার এসব কথা বলেছেন। গতকাল ১৫ সেপ্টেম্বর সকালে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির রাঙ্গামাটি জেলা কমিটির উদ্যোগে জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির রাঙ্গামাটি জেলা শাখার সভাপতি ডা. গঙ্গামানিক চাকমা। এছাড়াও বিশেষ অতিথি ছিলেন, বিশিষ্ট শিক্ষক ও সাংস্কৃতিক কর্মী শিশির চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম আদিবাসী ফোরামের আহ্বায়ক প্রকৃতি রঞ্জন চাকমা, সিএইচটি হেডম্যান নেটওয়ার্কের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট ভবতোষ দেওয়ান ।
সভায় ঊষাতন তালুকদার বলেন, “অন্তবর্তীকালীন সরকার দেশ সংস্কারের জন্য বিভিন্ন প্রকার পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। কিন্তু পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে আশান্বিত হওয়ার মতো কোনো পদক্ষেপ আমাদের চোখে পড়েনি। চুক্তি স্বাক্ষরের দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও কোনো সরকারই চুক্তি বাস্তবায়নে আন্তরিকতা দেখায়নি।
তাই এই সরকারের কাছে দাবি থাকবে দ্রুততম সময়ের মধ্যে চুক্তির মৌলিক ধারাগুলো বাস্তবায়নে উদ্যোগ গ্রহণ করবেন। যাতে পাহাড়ে মানুষ শান্তিতে বসবাস করতে পারে। সংবিধানে পাহাড়ের মানুষের বঞ্চিত রাখা হয়েছিলো। অতীতের মতো পাহাড়ের জনগণ যাতে বঞ্চিত না হয় এবং পাহাড়ের মানুষের আশা-আকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটে সেই বিষয়ে দৃষ্টি রাখার আহ্বান রইল।
তিনি আরও বলেন, চুক্তি নিয়ে আর গোল পাকাবেন না। এটাকে স্বাভাবিকভাবে এগিয়ে নিন। উদার মন নিয়ে এগিয়ে আসুন। আপনারা যদি মনে করেন জুম্ম জনগণ দুর্বল হয়ে গেছে, তাদের নিয়ে যা খুশি তাই করা যাবে, তাহলে মহা ভুল করা হবে। মনে রাখবেন পাহাড়ের মানুষের মনে তুষের আগুনের মত আগুন জ্বলছে। যে জাতি একবার লড়াই করেছে, রক্ত দিয়েছে, যে জাতি রক্ত দিতে জানে সে জাতিকে এভাবে অবহেলা করবেন না।
এসময় আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন আদিবাসী ফোরমের সভাপতি প্রকৃতি রঞ্জন চাকমা, এম এন লারমা মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশনের সহ-সভাপতি ডা: কনিস্ক চাকমা, বিশিষ্ট শিক্ষক ও সাংস্কৃতিক ব্যাক্তিত্ব শিশির চাকমা, সিএইচটি হেডম্যান নেটওয়ার্কের সহ-সভাপতি অ্যাড. ভবতোষ দেওয়ান, পার্বত্য চট্টগ্রাম হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক উইলোচিং মারমা।
বক্তারা বলেন, এমএন লারমা শুধু পাহাড়ের নেতা ছিলেন না। তাঁর জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত মানব জাতির কল্যান কাজ করে গেছেন। আমাদের উচিত তাঁর জীবন দর্শন মেনে চলা। তিনি পাহাড়ের মানুষের জন্য অনেক কিছু করে গিয়েছেন। অনেক কিছু করার পরিকল্পনা ছিলো। তাঁর স্বপ্নের বাস্তবায়ন জন্য আমাদের কাজ করে যেতে হবে।