হিল ভয়েস, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, বান্দরবান: বান্দরবানের রুমা উপজেলায় বমপার্টি খ্যাত কেএনএফ সন্ত্রাসী গাড়ি আটকিয়ে এবং কাজে যাওয়ার পথে কমপক্ষে ৮ জন লোককে মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আজ রবিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৭:০০টার দিকে বমপার্টি নামে খ্যাত কেএনএফ এর অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা রুমা উপজেলা সদরের বেথেল পাড়ার (বম পাড়া) কাছাকাছি পলি পাড়া (মারমা পাড়া) শ্মশান এলাকা থেকে লুপ্রু মারমা (৫৬), পিতা- মৃত আলুংমং মারমা, সাং- রুমা বাস স্টেশন–কে ধরে নিয়ে বেধম মারধর করে আহত করে। লুপ্রু মারমা বর্তমান রুমা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান উহ্লাচিং মারমার ছোট ভাই এবং রুমা বাস স্টেশনের টিকেট কাউন্টারের লাইনম্যান হিসেবে কর্মরত।
তিনি বাসের লাইনম্যানের দায়িত্ব পালনের জন্য সকাল ৭:০০ টার দিকে সদরঘাট থেকে রুমা বাজারে যাচ্ছিল। এসময় সাঙ্গু কলেজ থেকে পলি পাড়া মাঝপথে তার গতিরোধ করে কেএনএফ সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা বেধড়ক পিটিয়ে আহত করে। পরে আধা ঘন্টার পর তাকে ছেড়ে দেয় কেএনএফ সন্ত্রাসীরা।
আরো জানা যায়, সকাল ৭.৩০ টার দিকে রুমা বগালেক সড়কে সাত কিলোমিটার এলাকায় কেএনএফ সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা যাত্রি নিয়ে ১১ কিলোমিটার যাওয়ার পথে তিনটি মোটর সাইকেল আটকিয়ে চালক ও যাত্রি (৬ জনকে) উভয়কে বেধড়ক পিটায়। এই জায়গায় আটকিয়ে রাখা নিরীহ লোকদের এখনো ছাড়া হয়নি।
এদিকে সকালে ৭:০০ টার সময় জুমে কাজ করতে যাওয়ার পথে রুমা উপজেলার ২নং রুমা সদর ইউনিয়নের ক্যাম্বওয়া পাড়াবাসী নুসিংথোয়াই মারমা (২৩), পিতা- ক্যসিংমং মারমা নামে এক যুবকের কাছ থেকে মোবাইল ছিনিয়ে নেয় এবং পিটিয়ে আহত করে।
উল্লেখ্য আজ সকাল থেকে সব ধরণের যানবাহন চলাচল বন্ধ করেছে দিয়েছে বম পার্টি খ্যাত কেএনএফের সশস্ত্র সদস্যরা। এই অবস্থায় রুমা-বান্দরবান সড়কসহ রুমা উপজেলার অভ্যন্তরীণ সড়কগুলোতে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।
উল্লেখ্য, কেএনএফ সন্ত্রাসীদের কর্তৃক রুমা উপজেলায় বিভিন্ন সম্প্রদায়ের জুম্ম গ্রামবাসীদের উপর নিপীড়ন, নির্যাতন, চাঁদাবাজি, অপহরণ ও ১৩ ফেব্রুয়ারি রেজুক পাড়া নিবাসী উহ্লাচিং মারমাকে গুলি করার প্রতিবাদে গত ১৩ ও ১৪ ফেব্রুয়ারি, রুমা উপজেলা সদরে সর্বস্তরের জনগণের এক বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশ শেষে দুপুর ১২.৩০ টার সময় উত্তেজিত জনতা রুমার বম হোস্টেলের পার্শ্ববর্তী বমদের মোট ৪টি বাড়ি ও ২টি দোকানে হামলা ও ভাঙচুর করে। এসময় জৌসাং লুসাই (৬৫) নামে এক ব্যক্তি মাথায় আঘাত পেয়ে গুরুতর আহত হন।
অন্যদিকে উক্ত বিক্ষোভ শেষে বাড়ি ফেরার পথে কেএনএফ সন্ত্রাসীরা তিনজন মারমাকে মারধর করেছে, যা রুমায় আবারো উত্তেজনাকে উস্কে দিয়েছে বলে স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে। ১৩ ফেব্রুয়ারি পর থেকে এ নিয়ে কেএনএফ কর্তৃক ১১ জনকে মারধর করলো।
সাম্প্রতিক সময়ে বমপার্টি সন্ত্রাসীরা মারমাদের উপর হামলা জোরদার করেছে। হামলার অজুহাত হিসেবে তুলে ধরা হচ্ছে পার্বত্য চুক্তি পক্ষীয় গ্রুপের সাথে সম্পর্ক রাখা, গ্রামে তাদেরকে থাকতে দেয়া, এবং পার্বত্য চুক্তি পক্ষীয় গ্রুপকে খোঁজে দেয়া এবং তাদের আস্তানা দেখিয়ে দেয়া ইত্যাদি। ফলে রুমা এলাকার মারমারা আতঙ্কে রয়েছে।