হিল ভয়েস, ২৯ জানুয়ারি ২০২৪, চবি : আজ ২৯ জানুয়ারি ২০২৪ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে(চবি) অধ্যয়নরত আদিবাসী শিক্ষার্থীদের সাংস্কৃতিক সংগঠন রঁদেভূ শিল্পীগোষ্ঠী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক মিলনমেলা-২০২৪ ও ৬ষ্ঠ কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়স্থ বোটানিক্যাল গার্ডেন প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত কাউন্সিল অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সংগঠনটির ২০২৪-২৫ মেয়াদের নতুন কমিটি গঠন করা হয়। সজীব তঞ্চঙ্গ্যাকে সভাপতি, পহেলা চাকমাকে সাধারণ সম্পাদক ও নুখ্যাই মং মারমাকে সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত করে ২৩ সদস্য বিশিষ্ট কার্যকরী কমিটি গঠিত হয়।
রঁদেভূ শিল্পীগোষ্ঠী’র বিদায়ী কমিটির সভাপতি বর্ষা চাকমার সভাপতিত্বে এবং সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ভুবন চাকমার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের আলোচনা সভায় সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চবি আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক জেসী ডেইজী মারাক, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রভাষক শাংথুই প্রু, কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের প্রভাষক (ইংরেজি) নৈরঞ্জনা চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ(পিসিপি), চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি নরেশ চাকমা, ত্রিপুরা স্টুডেন্টস ফোরাম(টিএসএফ), চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সভাপতি পাভেল ত্রিপুরা, বাংলাদেশ মারমা স্টুডেন্টস কাউন্সিল(বিএমএসসি),চবি শাখার সাংস্কৃতিক কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক, উছাইঅং মারমা, বাংলাদেশ তঞ্চঙ্গ্যা স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার ফোরাম(বিটিএসডব্লিউএফ), চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় অঞ্চলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক রচনা বাবু তঞ্চঙ্গ্যাসহ প্রমুখ।
আলোচনা সভার শুরুতে কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের ইংরেজি ইংরেজি বিভাগে নবনিযুক্ত প্রভাষক ও অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি নৈরঞ্জনা চাকমা’কে রঁদেভূ শিল্পীগোষ্ঠীর পক্ষ থেকে সম্মাননা স্মারক প্রদান করে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
শাং থুই প্রু বলেন, “পাহাড় ও সমতলের আদিবাসীদের মধ্যে যোগসূত্র তৈরি করেছে রঁদেভূ শিল্পীগোষ্ঠী তার একীভূত সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের মাধ্যমে। চিন্তা ও মননে সংস্কৃতিকে ধারণ করে স্ব স্ব ঐতিহ্য রক্ষায় সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।”
নৈরঞ্জনা চাকমা বলেন, “সাহিত্য ও সংস্কৃতি চর্চার মধ্যে অস্তিত্ব রক্ষার ভিত্তি রয়েছে। রঁদেভূ বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর বৈচিত্র্যপূর্ণ সংস্কৃতি উপস্থাপন করে যা আদিবাসীদের ঐতিহ্যকে সমৃদ্ধ করে। সকল জাতিসত্তাসমূহের ঐক্যবদ্ধ বন্ধন এই রঁদেভূ। সাহিত্য ও সংস্কৃতিকে আরও সমৃদ্ধ ও প্রসার করতে রঁদেভূ’র প্রয়োজনীয়তা অতূলনীয়।”
নরেশ চাকমা বলেন, “রঁদেভূ শিল্পীগোষ্ঠী ভিন্ন ভাষাভাষী সকল আদিবাসীসমূহের এক মিলনক্ষেত্র। নিজ স্বকীয় অস্তিত্বকে তুলে ধরতে সংস্কৃতি ও সাহিত্য চর্চার বিকল্প নেই। সংস্কৃতি চর্চা ও লালনের মধ্য দিয়ে আমাদের অধিকারের কথা তুলে ধরতে হবে। পৃথিবীর যে প্রান্তে থাকি না কেন শেকড়ের পিছুটানে বারে বারে ফিরে আসতে হবে এবং শেখড়ের উপর গ্রাস করা অশুভ শক্তিকে প্রতিহত করতেও সংস্কৃতিকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে হবে।”
দিনব্যাপী আয়োজনের সকালে বিভিন্ন খেলাধুলাসহ উপস্থিত সকলের মধ্যে পরিচয় পর্ব সম্পন্ন হয় এবং বিকালের পর্বে মূল আলোচনা সভার পরবর্তীতে বিদায়ী কমিটির সভাপতি বর্ষা চাকমা নবগঠিত কমিটিকে দায়িত্ব হস্তান্তর করেন।
পরবর্তীতে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা, লটারি ড্র ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে বার্ষিক মিলনমেলা ও কাউন্সিল অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হয়।