হিল ভয়েস, ২৩ নভেম্বর ২০২৩, বিশেষ প্রতিবেদক: এই দূর্ভাগা দেশে প্রধান দুটি রাজনৈতিক দলের পারস্পরিক অবিশ্বাস ও বিরোধী দলের নির্বাচনী প্রক্রিয়ার প্রতি অনাস্থার কারণে প্রতি পাঁচ বছর অন্তর নির্বাচন আসন্ন হলে সাধারণ মানুষ সাংঘর্ষিক পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়। এ বছর নুতন করে যুক্ত হয়েছে বিদেশি রাষ্ট্রের ক্রমাগত অযাচিত হস্তক্ষেপ। আমরা এই অসহনীয় পরিস্থিতির অবসান চাই।
গতকাল বুধবার (২২ নভেম্বর) এ দাবি জানিয়ে সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক সালেহ আহমেদ স্বাক্ষরিত প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে দেশের ২৭ জন বিশিষ্ট নাগরিক এ দাবি জানিয়েছেন।
উক্ত বিবৃতিতে আরো বলা হয় যে, দেশের রাজনীতিতে গণতন্ত্র চর্চা ও আদর্শবাদী ধারার দূর্বলতার সুযোগে, রাজনৈতিক দলগুলোর অভ্যন্তরীন সংকটের পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী সাম্প্রদায়িক চক্র, লুটেরা ও অসাধু চক্র সমাজ ও রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তারের সূযোগ পেয়েছে। মূলত দেশে নির্বাচনী ব্যবস্থার দূর্বলতার সূযোগে নিকট অতীতেও নানা ধরনের ধ্বংসাত্মক ঘটনা বিশেষ করে, মানুষের জানমালের ক্ষয়ক্ষতি, মানুষ হত্যা, অগ্নিসংযোগ, ভাংচুর, লুটপাট, ট্রেন, বাস, লঞ্চসহ পরিবহন ধ্বংস করা, সংখ্যালঘু, আদিবাসী, নিরীহ মানুষের উপর নিপীড়ন, অত্যাচার, ধর্ষন করে দেশ থেকে বিতাড়িত করার মতো বেদনাদায়ক ঘটনা ঘটেছে।
এবারও পূর্বোক্ত ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটবে না এর নিশ্চয়তা নেই। ইতোমধ্যে দেশের বেশ কয়েকটি এলাকায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে ভাংচুরের খবর বিভিন্ন গণমাধ্যমে বেরিয়েছে। অতি সম্প্রতি বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে সাম্প্রদায়িক অপশক্তি সম্পর্কে সতর্ক থাকা ও সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায় বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবী জানানো হয়েছে। আমরা মনে করি মহান মুক্তিযুদ্ধের অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে সমুন্নত রাখার স্বার্থে নির্বাচনী কমিশনকে অধিকতর শক্তিশালী ও নিরপেক্ষ ভূমিকা রাখতে হবে। দেশের সকল সম্প্রদায়ের মানুষের স্বাভাবিক জীবন যাত্রার নিশ্চয়তা দিতে হবে। সকল ধরনের সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে কঠোরভাবে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
রাজনৈতিক দলসমুহের কাছে আমাদের আহ্বান সংঘাত-সহিংসতা নয়, সমঝোতা ও আলোচনার পথ উম্মুক্ত রাখতে হবে। দেশের রাজনীতিতে গণতান্ত্রিক চর্চা ও আদর্শবাদি ধারার দূর্বলতার সূযোগে, রাজনৈতিক দলগুলোর অভ্যন্তরীন সংকটের পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী সাম্প্রদায়িক মাফিয়া চক্র, লুটেরা ও অসাধু চক্র সমাজ ও রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তারের সূযোগ পেয়েছে। মূলত দেশে নির্বাচনী ব্যবস্থার দূর্বলতার সূযোগে নিকট অতীতেও নানা ধরনের ধ্বংসাত্মক ঘটনা বিশেষ করে মানুষের জানমালের ক্ষয়ক্ষতি, আক্রমণ, মানুষ হত্যা, অগ্নিসংযোগ, ভাংচুর, লুটপাট, ট্রেন, বাস, লঞ্চসহ পরিবহন ধ্বংস করা, সংখ্যালঘু, আদিবাসী, নিরীহ মানুষের উপর নিপীড়ন, অত্যাচার, ধর্ষন ইত্যাদি করে দেশ থেকে বিতাড়িত করার মতো বেদনাদায়ক ঘটনা ঘটানো হয়েছে।
এই বিবৃতির মাধ্যমে দেশের সচেতন নাগরিক সমাজের পক্ষে দেশের অগ্রগতি, অগ্রযাত্রা, স্থিতিশীলতাকে অক্ষুন্ন রাখার স্বার্থে জাতীয় সংকট নিরসনে সকলকে সচেষ্ট হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।
বিবৃতিতে স্বাক্ষরদাতা বিশিষ্ট নাগরিক হলেন- এডভোকেট সুলতানা কামাল, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা; রাশেদা কে. চৌধুরী, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা; রামেন্দু মজুমদার, প্রেসিডিয়াম সদস্য, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন; ডা. সারওয়ার আলী, ট্রাস্টি, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর; অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, সভাপতি, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন; ড. নুর মোহাম্মদ তালুকদার, সভাপতি, কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি; কাজল দেবনাথ, প্রেসিডিয়াম সদস্য, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন; আর এম দেবনাথ, অর্থনীতিবিদ; ডা. অসিত বরন রায়, রাজনীতিবিদ; মেসবাহউদ্দিন আহমেদ, সভাপতি, জাতীয় শ্রমিক জোট; ডা. ফওজিয়া মোসলেম, সভাপতি, মহিলা পরিষদ; খুশী কবির, মানবাধিকার কর্মী; অ্যাডভোকেট রানা দাশ গুপ্ত, সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ; এম. এম. আকাশ, অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়; রোবায়েত ফেরদৌস, অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়; আব্দুল্লাহ আল মামুন চৌধুরী, অধ্যাপক, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়; ড. জোবায়দা নাসরিন, অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়; সালেহ আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন; পারভেজ হাসেম, অ্যাডভোকেট, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট; ড. সেলু বাসিত, গবেষক ও সংস্কৃতি কর্মী; এ কে আজাদ, প্রধান সংগঠক, আনন্দন; জহিরুল ইসলাম জহির, সংগঠক, খেলাঘর; জাহাঙ্গীর আলম সবুজ, সমাজ কর্মী; অলক দাস গুপ্ত, সংস্কৃতি কর্মী; আব্দুর রাজ্জাক, শ্রমিক সংগঠক; সেলিম রেজা, আহ্বায়ক, সংস্কৃতি মঞ্চ; এবং অতুলন দাস আলো, সভাপতি, বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রী ।