শরৎ জ্যোতি চাকমা
৪০ বছরের ১০ নভেম্বর ১৯৮৩
সান্তনার ভাষা নেই, বাতাসে তাজা বারুদের ঝাঁঝালো গন্ধ
পক্ষীকূলের নির্বাক আনাগোনা
সে দিন সঞ্চারণশীল মেঘমালার শীতল হাওয়ার আঘাত
বৃক্ষরাজির ডালপালায় ছন্দহীন নাচন
আসে ১০ নভেম্বর ১৯৮৩, জুম্ম জাতির কালো অধ্যায়
জুম্ম জাতীয় চেতনার অগ্রদূত প্রিয় নেতার রক্তাক্ত দেহখানি পড়ে আছে বিছানায়
বনবাদাড়ে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান নেতার আট সহযোদ্ধারনিথর দেহ
মেজর পরিমল বিকাশ চাকমা, সুভেন্দু প্রবাস লারমা,
অর্পণা চরণ চাকমা,কল্যাণ ময় খীসা,
মনিময় দেওয়ান, অমর কান্তি চাকমা, অর্জুন ত্রিপুরা আর সৌমিত্র চাকমা
লাল সালাম, তোমাদের স্মৃতি অমর হোক
তোমাদের রক্তের ঋণ ভুলেনি জুম্ম জাতি।
শোক প্রদর্শন
৪০ বছরের ১০ নভেম্বর, জনতার বুকে কালো কাপড়,
কুয়াশাময় প্রভাত ফেরির নিরব যাত্রায় শামিল হয় মানুষ
নারী-পুরুষ, শতে শত অধিকারকামী মানুষ,
হাজার পেরোই নিমিষে,জুম তারুণ্যের অগ্নিকন্ঠে জনতার সাহস জাগে
ওরা সবাই প্রিয় নেতা এম এন লারমার কথা বলে,
ওরা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের কথা বলে।
৪০ বছরের ১০ নভেম্বর ১৯৮৩
ঐ তো প্রিয় নেতা এম এন লারমা, এক নিষ্পাপ শিশুর হাতে,
ছবি হয়ে শহীদ বেদীমুলে শ্রদ্ধার পুষ্পেবর্ষিত
যেন ছবি নয়, কী যেন বলার ভঙ্গিমায়
পুষ্পভরা শহীদবেদী ঘিরে কত বিপ্লবী বন্ধু, আমজনতা
সবাই আসে। আসে সহযোদ্ধারা, একখানা ফুল নিয়ে
আসে বড়দি জ্যোতি প্রভা লারমা মিনু
আসে আদরের ছোটভাই জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা তুঙ
আসে সম্ভাবনার নিযুত তরুণ, কন্টকাকীর্ণ পথযাত্রায় যারা এখন সংগ্রামী
ওরাও অগ্নিঝরা কন্ঠে প্রিয় নেতা এম এন লারমার কথা বলে,
ওরা অগ্নিঝরা কন্ঠে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের কথা বলে।
৪০ বছরের ১০ নভেম্বর ১৯৮৩
মঙ্গল প্রদীপের ঝলসানিতে অন্ধকার দূরীভূত হোক
সন্ধ্যার আকাশে প্রতিটি প্রদীপের বিচ্ছুরিত আলোয় অশুভ শক্তি নিপাত যাক
জুম্ম জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের লাল সালাম
১০ নভেম্বর ১৯৮৩ অমর হোক
এম এন লারমার বিপ্লব দীর্ঘজীবী হোক।