হিল ভয়েস, ৬ এপ্রিল ২০২০, কক্সবাজার: গত ৫ এপ্রিল ২০২০ কক্সবাজার জেলাধীন উখিয়া উপজেলার ইনানী এলাকার আদিবাসী চাকমা অধ্যুষিত মনখালি চাকমা পাড়ায় প্রতিবেশী বাঙালি মুসলিমদের একটি দল কর্তৃক সাম্প্রদায়িক হামলা চালানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে।
হামলায় মনখালি চাকমা পাড়ার বাসিন্দা নেপাল চাকমা (১৮) নামে কক্সবাজার সরকারি কলেজের এক আদিবাসী ছাত্র গুরুতর আহত হয়েছে। এছাড়া হামলাকারীরা কয়েকজন চাকমা ছেলেকে মারধর করে, ইমন তঞ্চঙ্গ্যা নামে এক যুবকের মোবাইল কেড়ে নেয় এবং কয়েকটি বাড়িতে ইটপাটকেল ছুড়ে ও জিনিসপত্র তছনছ করে দেয়।
জানা গেছে, ৫ এপ্রিল ২০২০ সন্ধ্যা আনুমানিক ৬:০০ টার দিকে মনখালি চাকমা পাড়ার কয়েকজন ছেলে পার্শ্ববর্তী শওকত আলীর দোকানে কিছু জিনিস কিনতে যায়। এসময় কোন কারণে দোকানদার ও ঐ ছেলেদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এর পরপরই দোকানদার শওকত আলী পার্শ্ববর্তী কিছু মুসলীম বাঙালিকে উস্কানিমূলকভাবে ফোন করে জানায় যে, চাকমারা মসজিদ ভাঙচুর করছে।
উল্লেখ্য, শওকত আলীর দোকানের পাশেই একটি নির্মাণাধীন মসজিদ রয়েছে। বলাবাহুল্য, ‘চাকমারা মসজিদ ভাঙছে’ এই কথা শুনেই বাছবিচার না করে পার্শ্ববর্তী মুসলিম বাঙালিরা সন্ধ্যা ৬ টার দিকে দলে দলে এসে মনখালি চাকমা পাড়ায় সমবেত হয় এবং হামলা চালায়।
হামলাকারীরা প্রায় রাত ১০ টা পর্যন্ত মনখালি চাকমা পাড়াটি অবরুদ্ধ করে রাখে, বিভিন্ন উস্কানিমূলক ও সাম্প্রদায়িক কথাবার্তা বলে এবং হামলা পরিচালনা করে। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং হামলাকারীদের সরে যেতে বাধ্য করে।
এলাকাবাসীরা বলেন, ঝগড়া হয়েছে শওকত আলী ও ছেলেদের মধ্যে। সেটা আলোচনা করেই সমাধান করা যেত। কিন্তু এভাবে সম্পূর্ণ বানোয়াট অভিযোগ এনে এবং সাম্প্রদায়িক আবরণ দিয়ে এ ধরনের সাম্প্রদায়িক হামলা ও উস্কানি অত্যন্ত দুঃখজনক ও উদ্বেগজনক।
এলাকাবাসী এই সাম্প্রদায়িক হামলা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং এর জন্য দায়ী ও হামলাকারীদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।