হিল ভয়েস, ২৬ জুন ২০২৩, ঢাকা: নতুন জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার আলোচিত নেতা শামীম মাহফুজ ও তার স্ত্রী ফাতেমাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম বিভাগ (সিটিটিসি)।
গত শুক্রবার (২৩ জুন ২০২৩) রাত সাড়ে ১০টার দিকে রাজধানীর ডেমরার একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে শামীম মাহফুজ ও তার স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে এক প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে খবরটি জানান সিটিটিসি-এর প্রধান মো: আসাদুজ্জামান।
সিটিটিসি ইউনিটের তথ্য মতে, গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে বিদেশি অস্ত্র ও বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয় বলে সিটিটিসির অতিরিক্ত উপকমিশনার ইমরান হোসেন জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য যে, ২০২২ সালের ২৩ আগস্ট কুমিল্লা থেকে আট তরুণ নিখোঁজ হয়েছিলেন। ওই ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া নামে নতুন জঙ্গি সংগঠনের তথ্য পায়।
আরো উল্লেখ্য যে, গঠিত হওয়ার পর এই ইসলামী জঙ্গী সংগঠন মাসিক ত্রিশ লাখ টাকার বিনিময়ে পাহাড়ে আশ্রয় ও সামরিক প্রশিক্ষণের জন্য বান্দরবানে এককালে সেনা-মদদপুষ্ট কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সঙ্গে চুক্তি করে। তিন বছরব্যাপী এ প্রশিক্ষণের বিষয়ে ২০২১ সালে কেএনএফের প্রতিষ্ঠাতা নাথান বমের সঙ্গে জঙ্গিদের চুক্তি হয়েছিল।
জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার প্রতিষ্ঠাতা শামীম মাহফুজের মোবাইল ফোনে একটি কথোপকথনের রেকর্ড পেয়েছে পুলিশের সিটিটিসি ইউনিট। সেখানে সংগঠনটির শুরা সদস্য এবং কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) প্রধান নাথান বমের বক্তব্য রয়েছে।
কেএনএফ কর্তৃক রুমায় তাদের গোপন আস্তানায় জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার সদস্যদের আশ্রয় ও সামরিক প্রশিক্ষণ প্রদানের খবর প্রকাশিত হলে সেনাবাহিনী, র্যাব, এসএসএফ ও সিটিটিসি গত ২০২২ অক্টোবর থেকে এই ইসলামী জঙ্গী সংগঠন ও জঙ্গীদের আশ্রয় প্রদানকারী বমপার্টি খ্যাত কেএনএফের বিরুদ্ধে কম্বিং অভিযান শুরু করে।
কম্বিং অপারেশনের ফলে উভয় গোষ্ঠী চাপে পড়লে কেএনএফ কর্তৃক জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার সদস্যদেরকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণের প্রস্তাব দিলেও তা নাকচ করেন শামীম মাহফুজ। তিনি উল্টো সশস্ত্র জিহাদ করার তাগিদ দিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর হামলার নির্দেশনা দেন।
উল্লেখ্য যে, এর আগে ২০১১ সালের ২৮ মার্চ থানচির বলিপাড়ার কলাইপাড়া এলাকা থেকে শামীম মাহফুজ ও তাঁর সহযোগী ইসমাইল হোসেন পুলিশের কাছে আটক হন। সে সময় তিনি জাময়াতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) দলনেতা ছিলেন। ওই সময় অস্ত্রসহ বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক উদ্ধারের ঘটনায় বান্দরবানজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়।
এর দুই বছর পর জামিনে মুক্তি পান। এরপর ২০১৪ সালে তিনি আবার গ্রেপ্তার হন রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থেকে। হাই কোর্টের আদেশে জামিনে মুক্তি পান ২০১৮ সালে। মুক্তি পাওয়ার পর জেলে অন্তরীণ ইসলামী জঙ্গী নেতাদের পরামর্শক্রমে জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া নামক জঙ্গী সংগঠন করেন শামীম মাহফুজ। সংগঠনটির সদস্যদের গোপন আশ্রয় লাভ এবং সামরিক প্রশিক্ষণ গ্রহণের জন্য বমপার্টি খ্যাত কেএনএফের মাধ্যমে বান্দরবানের রুমা ও রোয়াংছড়ির পাহাড়কে বেছে নেন তিনি।
আরো পড়ুন
https://hillvoice.net/bn/%e0%a6%87%e0%a6%b8%e0%a6%b2%e0%a6%be%e0%a6%ae%e0%a7%80-%e0%a6%9c%e0%a6%99%e0%a7%8d%e0%a6%97%e0%a7%80%e0%a6%a6%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%b8%e0%a6%be%e0%a6%ae%e0%a6%b0%e0%a6%bf%e0%a6%95-%e0%a6%aa/