হিল ভয়েস, ৩ এপ্রিল ২০২০, রাজশাহী: কোভিড-১৯-এর সংক্রমণ রোধে চলমান লকডাউনের কারণে গাইবান্ধার প্রায় ১২০০টি সাঁওতাল পরিবার ও রাজশাহীতে ২০০০টি সাঁওতাল, পাহাড়ীয়া ও ওড়াও পরিবার মানবেতর জীবন-যাপন করছে। রাজশাহী মেট্রোপলিটন এলাকায় বিভিন্ন পাড়া যেমন- বাগান পাড়া, পশ্চিম টালি পাড়া, শেখ পাড়া, মোল্লা পাড়া, আলীগড়, মিয়াপুর, কলিমনগর, পবা নতুন পাড়া, বড় বন গ্রাম শেখ পাড়া, রওদাপাড়া কুসর সেন্টার, কইকুরি, হলদিবোনা, সন্তোষপুর, গোপালপুর, আন্ধ্যারকোঠা পাড়া। এ সমস্ত গ্রামে সাঁওতাল, পাহাড়ীয়া ও উড়াওদের ২০০০টি পরিবার বসবাস করেন। এদের মধ্যে কেউ কেউ দিনমজুর করে দিনে আনে দিনে খায়, কেউ রিক্সা-ভ্যান চালায়, কেউ কেউ কৃষি শ্রমিক। তারা সবাই কোভিড-১৯ এর লকডাউনে ঘরবন্দি ও কর্মহীন হয়ে বাড়িতে অবস্থান করছেন। তাদের যেটুকু সঞ্চয় ছিল তাও শেষ বা শেষের পথে। তারা এখনও সরকারি ত্রাণ সহায়তা পায়নি।
অন্যদিকে, গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার তিন গ্রামের প্রায় ১২০০ সাঁওতাল পরিবার করোনার লকডাউনে কর্মহীন হয়ে পড়েছে। গ্রামগুলো হচ্ছে- কুয়ামারা, মাদারপুর ও জয়পুরপাড়া। জানা যায়, করোনা আতঙ্কে এ তিন গ্রামের অধিকাংশ মানুষ বাড়িতে বসে আছেন। তারা প্রশাসনের কাছ থেকে কোন ধরণের সাহায্য পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ রয়েছে। তারা অভিযোগ করেন- পুলিশ প্রশাসন ও রংপুর চিনি মিল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সংঘর্ষের পর থেকেই স্থানীয় সরকার তাদের কোন সহায়তা করে নি। সাহেবগঞ্জ-বাগদা ফার্ম এলাকার সাঁওতালরা অভিযোগ করেছেন, তারা এখনও কোন ত্রাণ সহায়তা পাননি।
তবে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার রামকৃষ্ণ বর্মন বলেন, সরকারের কাছ থেকে পাওয়া বরাদ্দগুলো ইতোমধ্যে ইউপি চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে বিতরণ করা হয়েছে। সাহেবগঞ্জ-বাগদা খামার এলাকার ২৫-৩০ টি পরিবারের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। আরও ৩০০-৪০০ সাঁওতাল পরিবারকে ত্রাণ দেওয়া হবে।
প্রাসঙ্গিকভাবে উল্লেখ্য যে, ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর সাহেবগঞ্জ-বাগদা ফার্ম এলাকায় বিতর্কিত জমি থেকে আদিবাসীদের উচ্ছেদ করা নিয়ে সাঁওতাল, রংপুর সুগার মিলের কর্মচারী এবং পুলিশের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় সংঘর্ষ হয়। এ সংঘর্ষে তিনজন সাঁওতাল মারা যান ও নয় জন পুলিশসহ ২০ জন আহত হন।