হিল ভয়েস, ২৬ মার্চ ২০২২, বান্দরবান: খোদ বান্দরবান জেলা শহরেই সেনাবাহিনীর মদদপুষ্ট ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে অস্ত্র দেখিয়ে নিরীহ জনগণের উপর চাঁদাবাজি, হয়রানি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়া শহরে বসবাসকারী জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) এর বিভিন্ন নেতাকর্মীদের নাম ধরে খোঁজ করছে বলেও জানা গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল ২৫ মার্চ ২০২২ রাত ১১:০০ টার দিকে মংএনু মারমা ও কালাচোখা চাকমা অটল এর নেতৃত্বে ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) সন্ত্রাসীদের কয়েকজন সদস্য নেশাগ্রস্ত অবস্থায় বান্দরবান শহরস্থ মগ বাজারের আহমেদ গুলিতে আসে।
এসময় সন্ত্রাসী মংএনু মারমা ও কালাচোখা চাকমা অটল ক্যসাপ্রু মারমা, পীং-পাইসাথুই মারমা ও হ্লাসিংঅং মারমা, পীং-ঐ এর ঘর-কাম-দোকানে দরজা ভেঙে প্রবেশ করে এবং হাতে থাকা পিস্তল দেখিয়ে ১ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে।
এসময় ঘরে শুয়ে থাকা ক্যসাপ্রু মারমা ও হ্লাসিংঅং মারমার স্ত্রী-কন্যারা ভয়ে চিৎকার করে উঠলে আশেপাশের জনগণ ঘটনাস্থলে এগিয়ে আসে। এক পর্যায়ে সন্ত্রাসীরা পিস্তল দিয়ে পরপর ছয় রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুঁড়লে জনগণের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়।
কিছুক্ষণ পর ঘটনাস্থলের দিকে সেনাবাহিনীর একটি টহল গাড়ি আসতে দেখে সন্ত্রাসীরা স্থানীয় জনগণকে বিভিন্ন হুমকি দিতে দিতে সেখান থেকে দ্রুত সরে যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রত্যক্ষদর্শী এক বাঙালি অভিযোগ করে বলেন, সন্ত্রাসী মংএনু মারমা ও কালাচোখা চাকমা অটল, এদের চাঁদাবাজি ও হয়রানিতে এলাকার জনগণ অতিষ্ঠ। প্রতিবার বাজারের দিনে তারা ডাকাতের মত জোরপূর্বক জনগণের কাছ থেকে টাকা কেড়ে নেয় বা আদায় করে।
তিনি বলেন, প্রশাসনের নাকের ডগায় এমন চাঁদাবাজি ও হয়রানির ঘটনা সত্যি দুঃখজনক।
স্থানীয় জনগণ আরো জানান, প্রায় সময়ই ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) ও সংস্কারপন্থী সন্ত্রাসীদের মগ বাজারের হেবান নামে এক মদের দোকানে জড়ো হতে এবং গভীর রাত পর্যন্ত আশেপাশের এলাকায় ঘোরাঘুরি করতে দেখা যায়। প্রায় সময় এই সন্ত্রাসীরা নেশাগ্রস্ত অবস্থায় মগ বাজার ও উজানী পাড়া এলাকার বিভিন্ন অলিগলিতে জেএসএস’এর বিভিন্ন নেতাকর্মীদের নাম ধরে খোঁজ করতে থাকে।
ইতোমধ্যে একাধিকবার শহর এলাকায় বসবাসকারী সম্ভু কুমার তঞ্চঙ্গ্যা, জলিমং মারমা, উছোমং মারমা, উচসিং মারমা, অংশৈমং মারমা, মস্তু মারমা প্রমুখ জেএসএস নেতাকর্মীদের সন্ত্রাসীদের কর্তৃক খোঁজ করা হয়েছে বলে জানা যায়।
অভিযোগ রয়েছে, পার্বত্য চুক্তির পক্ষের জেএসএস কর্মী ও জনগণের বিরুদ্ধে ব্যবহার করার জন্য সেনাবাহিনী ও স্থানীয় আওয়ামীলীগ এইসব সন্ত্রাসীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় ও মদদ দিয়ে থাকে।
এই অবস্থায় সন্ত্রাসীদের নিয়ে জনগণের মধ্যে গভীর উদ্বেগ ও আতঙ্ক বিরাজ করছে বলে জানা গেছে।