চবিতে শহীদ ছাত্রনেতা আনন্দ তঞ্চঙ্গ্যার ১৫তম মৃত্যুবার্ষিকীতে স্মরণসভা ও মোমবাতি প্রজ্জ্বলন

হিল ভয়েস, ৩ জুন ২০২৫, চবি: আজ ৩ জুন ২০২৫ খ্রি: (মঙ্গলবার) সন্ধ্যা ৬:০০ ঘটিকায় শহীদ ছাত্রনেতা আনন্দ তঞ্চঙ্গ্যার ১৫তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বুদ্ধিজীবী চত্বরে পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ (পিসিপি), চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ২নং গেইট শাখার উদ্যোগে এক স্মরণসভা ও মোমবাতি প্রজ্জ্বলন অনুষ্ঠিত হয়।

পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ২নং গেইট শাখার সহ-সাধারণ সম্পাদক বিপুল চাকমার সঞ্চালনায় এবং সভাপতি অপূর্ব চাকমার সভাপতিত্বে স্মরণসভায় বক্তব্য রাখেন পিসিপি, চবি শাখার সাধারণ সম্পাদক সুমন চাকমা এবং এতে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন পিসিপি, ২নং গেইট শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক প্রেনঙি ম্রো। সভার শুরুতে শহীদ ছাত্রনেতা আনন্দ তঞ্চঙ্গ্যাসহ জুম্ম জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে যারা আত্মাহুতি দিয়েছেন তাদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

প্রেনঙি ম্রো তার স্বাগত বক্তব্যে বলেন, শাসকগোষ্ঠীর সৃষ্ট পাহাড়ে জুম্ম স্বার্থ পরিপন্থী ও পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তিবিরোধী ইউপিডিএফ সন্ত্রাসীর হামলায় ছাত্রনেতা আনন্দ তঞ্চঙ্গ্যা শহীদ হন। পার্বত্য চট্টগ্রামে আমরা শাসকগোষ্ঠীর নানাধরনের জুম্ম স্বার্থবিরোধী ষড়যন্ত্র প্রতিনিয়ত দেখতে পাই। তারই অংশ হিসেবে চুক্তি পক্ষের ছাত্র-কর্মীদের নানা প্রক্সি দল দিয়ে হত্যা, হুমকি, অপহরণের মাধ্যমে চুক্তি বাস্তবায়নের আন্দোলনকে তারা স্তিমিত করে দিতে চায়। কিন্তু জুম্ম ছাত্র সমাজ সহজে থেমে যাওয়ার নয়, তারা বরাবরই শাসকগোষ্ঠীর এসব ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সোচ্চার এবং চুক্তি বাস্তবায়নের আন্দোলনের মাধ্যমে জুম্মদের অধিকার আদায়ের জন্য নিজেকে বিলিয়ে দিতে প্রস্তুত।

সুমন চাকমা বলেন, শহীদ ছাত্রনেতার আত্মবলিদান আমাদের জুম্ম ছাত্রসমাজকে যুগে যুগে অনুপ্রেরণা দিয়ে যাবে। জুম্ম জনগণের অধিকার আদায়ের সনদ পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের আন্দোলনের বিপরীতে শাসকগোষ্ঠীর নানামুখী ষড়যন্ত্র প্রতিনিয়ত বেড়েই যাচ্ছে। এসব ষড়যন্ত্রের অংশ হচ্ছে চুক্তিবিরোধী নানা দল উপ-দল সৃষ্টি করে দেওয়া। আজকের সচেতন তরুণ সমাজকে এসব ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। যারা জুম্ম স্বার্থের বিরুদ্ধে পার্বত্য চট্টগ্রামে নানা অপকর্ম, চুক্তিবিরোধী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে তাদের ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে অপূর্ব চাকমা বলেন, চুক্তিবিরোধী নব্য বিভেদপন্থী ইউপিডিএফের সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের হামলায় ছাত্রনেতা আনন্দ তঞ্চঙ্গ্যার মৃত্যু হয়। শাসকগোষ্ঠীর সৃষ্ট চুক্তিবিরোধী এই গোষ্ঠী শুধু আনন্দ তঞ্চঙ্গ্যা নয়, চুক্তি পরবর্তী সময়েও আমরা দেখতে পাই নিরস্ত্র সাবেক শান্তিবাহিনী সদস্যদেরও তারা হত্যা করার মধ্য দিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে জুম্ম জাতীয় ঐক্যের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করে। যে দলের আদর্শ জুম্ম জনগণের স্বার্থের বিপক্ষে তারা ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হবেন।

সভাপতির বক্তব্যের মধ্য দিয়ে আয়োজিত মোমবাতি প্রজ্জ্বলন ও স্মরণসভার সমাপ্তি ঘটে।

More From Author