হিল ভয়েস, ১৮ জুলাই ২০২৫, নিজস্ব প্রতিবেদক: খাগড়াছড়ি জেলাস্থ ভাইবোনছড়ায় সেটেলার বাঙালি কর্তৃক আদিবাসী শিক্ষার্থীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের প্রতিবাদে এবং ধর্ষণকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে দেশের একযোগে রাঙ্গামাটি, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি, চট্টগ্রাম, ঢাকা, রাজশাহীতে অবস্থানরত আদিবাসী শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশে আদিবাসী শিক্ষার্থী নেতৃবৃন্দ ক্ষোভ প্রকাশ করে যতদ্রুত সম্ভব দোষীদের আইনের আওতায় নিয়ে এসে কঠোরতরভাবে শাস্তি প্রদান করার জন্য রাষ্টের নিকট আহ্বান জানান।
উল্লেখ্য, গত ২৭/০৬/২০২৫ তারিখ দুপুর অনুমানিক ০২.০০ ঘটিকার সময় ভুক্তভোগী (১৪) রথযাত্রা পূজা উৎসব পালন করার জন্য খাগড়াছড়ি সদর থানাধীন ভাইবোনছড়া বাজার সংলগ্ন জগন্নাথ মন্দিরে যায়। পূজা অনুষ্ঠান শেষে জগন্নাথ মন্দির হতে ফেরার পথে তার চাচার বাসায় যায়। খাগড়াছড়ি সদর থানাধীন ভাইবোনছড়া উন্নয়ন বোর্ড বাসভবন এর পাশে ভাড়া বাসায় যাওয়ার পথে ধর্ষকরা তাকে অনুসরণ করে। পরবর্তীতে একইদিন রাত অনুমানিক ০৯.৩০ ঘটিকার সময় ধর্ষকরা তার চাচাত ভাইয়ের ভাড়া বাসায় জোর পূর্বক প্রবেশ করে উভয়কে প্রাণে হত্যা করার ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। অতঃপর তার চাচাত ভাইকে এক রুমে নিয়ে গিয়ে আটক করে রাখে এবং অপর একটি রুমে নিয়ে গিয়ে ভিক্তিমকে প্রাণ নাশের হুমকী দিয়ে জোরপূর্বক পালাক্রমে ধর্ষণ করে গুরুতর আহত এবং অজ্ঞান অবস্থায় রেখে পালিয়ে যায়। এমনকি ঘটনার সময় ধর্ষকরা পার্শ্ববর্তী রুমের ভাড়াটিয়াদের রুমের দরজা বাহির থেকে লাগিয়ে দেয়, যাহাতে কোন লোক রুমের ভিতর হতে বাহির হতে না পারে।
পরের দিন অর্থাৎ গত ২৮/০৬/২০২৫ তারিখ সকাল অনুমানিক ০৭.৩০ ঘটিকার সময় ভুক্তভোগীর জ্ঞান ফিরে আসলে সে নিজ বাড়িতে চলে যায়। একপর্যায়ে উক্ত ঘটনায় সে দারুন মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়লে ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে বিগত ১২/০৭/২০২৫খ্রিঃ তারিখ সন্ধ্যা সময়ে নিজেকে প্রাণে শেষ করার চেষ্টা করে। পরিবারের লোকজন তাকে চিকিৎসার জন্য খাগাড়াছড়ি আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। বর্তমানে ভুক্তভোগী এখনো আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছে বলে চিকিৎসারত ডাক্তার জানান।
এই ঘটনায় পুলিশ চারজনকে গ্রেপ্তার করলেও দুই জনকে এখনো ধরতে পারেনি।
এর আগেও গত ৫ মে ২০২৫ তারিখে বান্দরবান পার্বত্য জেলাধীন থানচি উপজেলার তিন্দু ইউনিয়নে ৮নং ওয়ার্ড এলাকায় চিংমা খিয়াং (২৯) নামে এক আদিবাসী খিয়াং নারী সেটেলার বাঙালি কর্তৃক গণধর্ষণের পর নির্মমভাবে হত্যার শিকার হয়। এই হত্যার তিন মাসের অধিক সময় অতিক্রান্ত হলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে পোস্টমোর্টাম রিপোর্ট ভিক্তিমের পরিবারের কাছে হস্তক্ষেপ না করা এবং দোষীদের আইনের আওতায় নিয়ে আসাসহ কোনো প্রকার মামলার অগ্রগতির নজির দেখা যায় না।
শুধু চিংমা খিয়াংয়ের বিচারিক কার্য নয় পাহাড়ে ঘটমান এই পর্যন্ত আদিবাসী জুম্ম নারীদের সেটেলার বাঙালি কর্তৃক সহিংসতার ঘটনা একটিরও সুষ্ঠু বিচার এই পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।
যার ফলে এই থেকে স্পষ্ট প্রমাণিত হয়, পার্বত্য চট্টগ্রামে এই ঘটনার পেছনে রাষ্টই সব কিছুই নীরবে মদদ দিয়ে যাচ্ছে।
+ There are no comments
Add yours