আলিকদমে টাকার বিনিময়ে তৈনফা মৌজার হেডম্যান কর্তৃক বহিরাগত লোকজনকে জমি দখল দেওয়ার অভিযোগ

হিল ভয়েস, ২১ মে ২০২৫, বান্দরবান: বান্দরবান জেলার আলিকদমে থানচি সড়কের ১৩/১৪ কিলো এলাকার লিপ ঝিরির আশেপাশে ২৯১ নং তৈনফা মৌজার লাংড়ি কার্বারী পাড়া ও তলু কার্বারী পাড়ায় মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে ঢাকার বাসিন্দা রাশেদ মোর্শেদ নামে হেডম্যান প্রতিবেদন মূলে পাহাড়ের জমি দখল করে দেওয়ার অভিযোগ উঠছে হেডম্যান রেংপুং ম্রোর বিরুদ্ধে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিগত ২০২১ সালে অবৈধভাবে জমি দখলের বিরুদ্ধে স্থানীয় ম্রো ও ত্রিপুরা জনগোষ্ঠির অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা প্রশাসন নির্বাহী কর্মকর্তা অভিযান চালিয়ে তাদের সকল কার্যক্রম বন্ধ করে দেন। তাদেরকে উক্ত পাহাড়ে কোন ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা না করতে বিধিনিষেধ করেন। পরর্বতীতে পূনরায় স্থানীয় বাসিন্দার চথুই প্রু মার্মা বাবলির সহযোগিতায় আবার দখল করে সেগুন চারা রোপন করা হয়েছে বলে জানা যায়।

তৈনফা মৌজার হেডম্যান কর্তৃক বহিরাগত বাঙালি লোকজনকে দেওয়া জমি।

স্থানীয় বাসিন্দা  লেংরিং ম্রো ও ককলাম ম্রো বলেন, বহিরাগত লোক রাশেদ মোর্শেদ নামে এক ব্যক্তিকে রেংপুং ম্রো হেডম্যান থেকে টাকার বিনিময়ে রিপোর্ট নিয়ে জমিগুলো ২০২১ সালে এসে দখল করেন। দুই এক বছর তাদের কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও এখন আমরা ধান চাষ বা জুম চাষ করতে গেলেও তাদের লোকজন এসে আমাদের জমিতে সেগুন চারা রোপন করে বলে দাবি করেন তারা। তারা আরও বলেন, আমাদের জুমের জমি ও পাহাড়গুলো তাদের টাকা দিয়ে হেডম্যান থেকে রিপোর্ট মূলে কিনেছে বলে দাবি করেন। তারা আমাদেরকে জুম চাষ না করতে বাধা দিচ্ছে এবং জমিগুলো দখল করে নিতে মরিয়া হয়ে উঠে।

তৈনফা মৌজার হেডম্যান কর্তৃক বহিরাগত বাঙালি লোকজনকে দেওয়া জমি।

২৯১ নং তৈনফা মৌজার স্থানীয় বাসিন্দরা বলেন, এ মৌজার হেডম্যান অনেক বয়স্ক ব্যক্তি হওয়ার কারণে তিনি তেমন কিছু বুঝেন না। তবে হেডম্যানের মুহুরি আলিকদম বাজার চৌধুরী আবু বক্কর এ অনিয়মগুলো করেন। তারা আরও বলেন, কোন যোগ্য ব্যাক্তিকে হেডম্যান-এর দায়িত্ব দেওয়ার জন্য জোর দাবি করেন তারা।

থানচি সড়কের ১৩/১৪ কিলো এলাকায় জমি নেওয়ার বিষয়ে রাশেদ মোর্শেদ-এর কেয়ারটেকার আরিফ (বাবু) নামে একজন বলেন, বাবলির মাধ্যমে আমার স্যার রাশেদ মোর্শেদ টাকা দিয়ে হেডম্যানের প্রতিবেদন মূলে এখানে ১৫ একর জমি কিনেছে। তিনি আরও বলেন, এখন আমার স্যারের জমিতে ৮/১০ হাজার সেগুন চারা রোপন করেছি বলে জানান তিনি।

২৯১ নং তৈনফা মৌজার হেডম্যান রেংপুং ম্রোর কাছে বহিরাগত লোকজনকে কিসের ভিত্তিতে রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার কাছে চথুই প্রু মারমা বাবলি নামে একজন ব্যক্তি রাশেদ মোর্শেদকে নিয়ে আমার কাছে আসেন। তখন তারা একটি কটেজ করার জন্য কিছু জমি খোঁজেন। এরপর তাদেরকে আমি রিপোর্ট মূলে ৫ এককর জমি দিয়েছি, বাকি জমিগুলো কিভাবে নিয়েছে আমি জানি না।

টাকা দিয়ে জেলার বহিরাগত লোকজনকে কেন রিপোর্ট দিলেন জানতে চাইলে তিনি ফোন কেটে দেন এরপর আর কল রিসিভ করেন নাই।

More From Author

+ There are no comments

Add yours