আদিবাসী নারীর উপর সহিংসতা বন্ধে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে: ঢাকায় নারী নেটওয়ার্কের সমাবেশে নেতৃবৃন্দ

হিল ভয়েস, ১০ মার্চ ২০২৪, ঢাকা: গতকাল (৯ মার্চ) বিকেল চারটায় রাজধানীর শাহবাগ এলাকায় জাতীয় জাদুঘরের সামনে বাংলাদেশ আদিবাসী নারী নেটওয়ার্কের উদ্যোগে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষ্যে একটি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সমাবেশে জাতীয় আদিবাসী পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এবং বাংলাদেশ আদিবাসী নারী নেটওয়ার্কের সদস্য বিচিত্রা তির্কীর সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আদিবাসী যুব ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মনিরা ত্রিপুরা।

সমাবেশে সংহতি বক্তব্য প্রদান করেন, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সহ সভাপতি রেখা চৌধুরী, সিপিবি নারী সেল এর এডভোকেট লুনা নূর, বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের সমন্বয়কারী সঞ্জয় মজুমদার, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক স্নিগ্ধা রিজওয়ানা, কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক ফারহা তানজীম তিতিল, কাপেং ফাউন্ডেশন এর প্রতিনিধি উজ্জ্বল আজিম, বহ্নি শিখার প্রতিনিধি আল আমিন হোসাইন জয়, বাংলাদেশ আদিবাসী যুব ফোরামের সভাপতি আন্তনী রেমা, বাংলাদেশ আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অলিক মৃ, পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সহ সভাপতি অনন্ত তঞ্চঙ্গ্যা প্রমুখ।

সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে বিচিত্রা তীর্কি বলেন, পাহাড়ে ও সমতলের নারীদের উপর যে নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে রাষ্ট্র কি সেই ঘটনা দেখতে পায় না? প্রান্তিক আদিবাসী নারীরা বনে জঙ্গলে কাজ করার সময় বনের জন্তুদের ভয় পায় না, তারা ভয় পায় মানুষ রূপী জানোয়ারদের। আজ স্বাধীন দেশে নিজেদের অধিকার আদায়ের জন্য কেন আন্দোলন করতে হবে? এই ব্যর্থ শোষক রাষ্ট্রকে আমরা আজকের এই সমাবেশ থেকে ধিক্কার জানাই।

আদিবাসী নারীদের আন্দোলনে সকলকে একত্রিত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি আরও বলেন, আমরা আমাদের আন্দোলন করে যাব, আমাদের আন্দোলন দিনকে দিন আরও জোড়ালো হচ্ছে। আমাদের হারানোর আর কিছু নেই, আমরা আমাদের সমস্ত হারিয়ে ফেলেছি। দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে, এখন আমাদের সময় রুখে দাঁড়াবার।

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সহ সভাপতি রেখা চৌধুরী বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধে দেশের বাঙালিদের পাশাপাশি দেশের সকল শ্রেণিপেশার এবং আদিবাসীদের অংশগ্রহণ থাকলেও সবার সমঅধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়নি। নারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চলে আসলেও রাষ্ট্রীয় কাঠামো এবং নারীদের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন না হওয়ায় আদিবাসী নারীদের অবস্থা এখনো অপরিবর্তিত রয়ে গেছে। পুরো দেশ এখন কেমন যেন একটা স্থবির সময় পার করছে। আমাদের অসাম্প্রদায়িক ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য একত্রিত হয়ে আন্দোলন জরুরি।

সিপিবি নারী সেল এর এডভোকেট লুনা নূর বলেন, বাংলাদেশে আদিবাসী নারীদের অধিকার খর্ব হচ্ছে। বৈচিত্র্য অপরিহার্য্য বিষয় কিন্তু রাষ্ট্রীয় কাঠামোর দৃষ্টিভঙ্গি বৈচিত্র্যকে বিভেদ এবং বৈষম্যের মোড়কে প্রকাশ করে তাদের ফায়দা লুটে নিচ্ছে। যখন একটি দেশে ন্যূনতম গণতন্ত্র ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠিত না হয়, তখন নিপীড়ন চলতে থাকবে। এই অবস্থার পরিবর্তন করতে হলে রাষ্ট্রের দৃষ্টিভঙ্গি এবং রাষ্ট্রের পুরো কাঠামো এবং বিদ্যমান সমাজব্যবস্থাকে পরিবর্তন করতে হবে। সমতার পৃথিবী গড়ে তুলতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন আরও জোরদার করতে হবে।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক স্নিগ্ধা রিজওয়ানা বলেন, স্বাধীনতার এত বছর পরে এসেও রাজপথে দাঁড়িয়ে আদিবাসী ও প্রান্তিক নারীদের অধিকারের কথা বলতে হচ্ছে, এটি অত্যন্ত লজ্জার। বাংলাদেশে নারী ক্ষমতায়নের নামে রাষ্ট্রের ভন্ডামী দেখতে দেখতে আমরা ক্লান্ত হয়ে গেছি। আদিবাসী নারীরা যখন সহিংসতার ঘটনা ঘটে তখন রাষ্ট্র কোনো ধরনের পদক্ষেপ নেন না। বাংলাদেশ একক কোনো ধর্ম বা বর্নের মানুষের জন্য স্বাধীন হয়নি, কিন্তু বাংলাদেশ আজকে একক একটি জাতি, ধর্ম ও ভাষার রাষ্ট্র হয়ে উঠেছে। এটি আমাদের কাম্য নয়, বাংলাদেশের বিভিন্ন জাতি, ধর্ম ও সংস্কৃতির বৈচিত্র্যকে অস্বীকার করে আগামীর বাংলাদেশ রচনা সম্ভব নয়। আদিবাসী ও প্রান্তিক নারীসহ সবার সমঅধিকার নিশ্চিত করলেই সবার বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হবে।

কাপেং ফাউন্ডেশনের প্রতিনিধি উজ্জ্বল আজিম বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য নারী-পুরুষের সমভাবে এগিয়ে আসার বিকল্প নেই। কিন্তু দেশের বাস্তবতায় নারীদের অগ্রযাত্রা নানাভাবে ব্যাহত হচ্ছে। নারীরা খুন, ধর্ষণ ও বঞ্চনার শিকার হচ্ছে কিন্তু সেসব ঘটনায় ন্যায্য বিচার পাচ্ছে না। নারী-পুরুষের বৈষম্য দূর করার জন্য রাষ্ট্র এবং পুরুষদের এগিয়ে আসতে হবে।

কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক ফারহা তানজীম তিতিল বলেন, প্রীতি ওরাং চা শ্রমিক পরিবার থেকে জীবিকার তাগিদে ঢাকা এসে হত্যার শিকার হয়েছে। নারী পরিচয়ের কারণে দেশের নারীরা নানাবিধ সংকটের মধ্যে বসবাস করছেন, এর মধ্যে আদিবাসী ও প্রান্তিক নারীদের সংকট অসীম। এই সংকট কাটাতে আদিবাসী নারীদের এবং দেশের সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।

আদিবাসী নারী সংগঠক রাখী ম্রং বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে আদিবাসীরা অংশ নিয়েছিল দেশের সকল মানুষের সমঅধিকার প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখে। কিন্তু স্বাধীনতার পরেই সংবিধানে আদিবাসীদের অধিকার খর্ব করা হয়েছিল। এরপর মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা সংসদে প্রতিবাদ করেছিলেন। এরপর আজ এতদিন পেরিয়ে গেলেও আদিবাসীদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়নি। সেখানে আদিবাসী ও প্রান্তিক নারীদের অবস্থা আরও শোচনীয়।

বাংলাদেশ আদিবাসী যুব ফোরামের সভাপতি আন্তনী রেমা বলেন, বাংলাদেশে বাঙালি নারীরাও এখনো তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় আন্দোলন করে যাচ্ছেন। সেখানে আদিবাসী ও প্রান্তিক নারীদের অধিকার ও নিরাপত্তা এখনো অলিক কল্পনা। রাষ্ট্রকে দেশের সকল মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে না আসলে আগামী দিনের বাংলাদেশ আরো অনেক বেশি অনিরাপদ ও বৈষম্যের বাংলাদেশ হয়ে উঠবে।

বাংলাদেশ আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অলিক মৃ বলেন, দেশের আদিবাসী ও প্রান্তিক নারীরা শুধুমাত্র তাদের পরিচয়ের কারণে অনিরাপত্তায় বসবাস করছে। আদিবাসী নারীরা ধর্ষণের শিকার হলেও রাষ্ট্র তাদের সুষ্ঠু বিচার দিতে ব্যর্থ। রাষ্ট্রকে অবশ্যই আদিবাসীসহ প্রান্তিক নারীদের অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

More From Author

আদিবাসী নারীর উপর সহিংসতা বন্ধে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে

হিল ভয়েস, ৭ ডিসেম্বর ২০২২, ঢাকা: এসব বৈষম্যের প্রতিরোধ শুধু আদিবাসী সমাজ করলেই হবে না। সবাইকে নিয়ে প্রতিবাদ প্রতিরোধ গড়তে হবে। নারীর প্রতি আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করতে হবে। নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধে শুধু নারী নয়, পুরুষদেরও এগিয়ে আসতে হবে, তাদেরকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

গতকাল বুধবার (৭ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ আদিবাসী নারী নেটওয়ার্ক কর্তৃক ঢাকার মোহাম্মদপুরস্থ আসাদ গেইট-ওয়াইডব্লিউসিএ-এর মিলনায়তনে আয়োজিত 16 days Activism-এর অংশ হিসেবে “আদিবাসী নারী ও শিশুর উপর সহিংসতা বন্ধ করুন” শীর্ষক একটি সেমিনারে বক্তারা এসব অভিমত তুলে ধরেন।

উক্ত সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ আদিবাসী নারী নেটওয়ার্কের যুগ্ম আহ্বায়ক চৈতালী ত্রিপুরা এবং লিখিত প্রবন্ধ পাঠ করেন বাংলাদেশ আদিবাসী নারী নেটওয়ার্ক এর সমন্বয়কারী ফাল্গুনী ত্রিপুরা ও শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন বাংলাদেশ আদিবাসী নারী নেটওয়ার্ক এর সদস্য সুজয়া ঘাগ্রা।

আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এএলআরডি এর ব্যবস্থাপক সানজিদা খান রিপা, ইন্টারন্যাশাল ল্যান্ড কোয়ালিশন এর এশিয়া রিজিওনাল কো-অর্ডিটর মিস মিরগুল আমানালিভা, বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের উপ-পরিচালক শাহনাজ সুমী, কাপেং ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক পল্লব চাকমা, আদিবাসী ও সংখ্যালঘু বিষয়ক সংসদীয় ককাসের যুগ্ম সমন্বয়ক এবং গবেষণা ও উন্নয়ন কালেকটিভ-এর সাধারণ সম্পাদক জান্নাত-এ ফেরদৌসী এবং বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং প্রমুখ।

শুভেচ্ছা বক্তব্যে সুজয়া ঘাগ্রা বলেন, বাংলাদেশে আদিবাসী নারীর উপর বিভিন্ন সহিংসতা, নিপীড়ন নির্যাতন যেমন ধর্ষণ, ধর্ষণের চেষ্টা ধর্ষনের পর হত্যা ইত্যাদি ঘটনা প্রায় দেখি। পিতৃতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থাসহ আদিবাসীদের ভূমির সমস্যা, বিচারহীনতা সংস্কৃতি, আদিবাসী নারী ও মেয়ে শিশুর প্রতি নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির কারণে তারা বিভিন্ন ধরনের যৌন, শারীরিক ও মানসিক সহিংসতার শিকার হয়।

তিনি আরো বলেন, শুধু তাই নয় আদিবাসী, সংখ্যালঘু ও লিঙ্গের কারণে প্রায়শই তারা বিভিন্ন বৈষম্যের সম্মুখীন হচ্ছে। এসব বৈষম্যের প্রতিরোধ শুধু আদিবাসী সমাজ করলেই হবে না। সবাইকে নিয়ে প্রতিবাদ প্রতিরোধ গড়তে হবে। সকলে মিলে পরিবার, সমাজ, বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা, সরকারী বেসরকারী সংস্থা, বিভিন্ন গনমাধ্যমকে নিয়ে আদিবাসী নারীসহ বাংলাদেশের নারীর উপর সহিংসতা নির্যাতন, নিপীড়ন বন্ধে কাজ করার আহ্বান জানান।

বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং বলেন, আদিবাসী নারীর প্রতি আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টাতে হবে। তিনি আরো বলেন, মেঘালয়ের খাসি মেয়ে, গারো মেয়ে আর বাংলাদেশের খাসি মেয়েরা একই অধিকার নিয়ে জন্মায় না। তিনি আদিবাসী নারী সংগঠনগুলোর আর্থিক সহযোগিতা দিয়ে তাদের সহযোগিতা করার জন্য সবার প্রতি আহ্বান করেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আদিবাসী নারীদের সহায়তা করতে হবে, তাদের উৎসাহ দিতে হবে। আর আদিবাসী নারীদের সহযোগিতার মাধ্যমেই আমরা সমাজকে পরিবর্তন করতে পারব।

সানজিদা খান রিপা বলেন, নারীর প্রতি সহিংসতা দূর করার ব্যাপক প্রচারাভিযান চালাতে হবে। নারীর প্রতি আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করতে হবে। নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধে মিডিয়া গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে বলে তিনি মনে করেন। সিভিল সোসাইটির ভুমিকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আদিবাসী নারীদের ওপর সহিংসতা বন্ধের জন্য সিভিল সোসাইটিকে আরো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে।

ইন্টারন্যাশনাল ল্যান্ড কোয়ালিশনের প্রতিনিধি মিরগুল আমানিলাভা বলেন, নারী শুধু পুরুষকে বাঁচায় না, তারা বিশ্বকেই বাঁচাতে পারে। তিনি আয়োজকদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা বন্ধের লক্ষ্যে তারা ৩০ বছর ধরে বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি দিয়ে আসছে। বিশ্ব শান্তিতে নারীদের ভূমিকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নারীরাই এই পৃথিবীকে সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে পারে। তার আগে নারীদের প্রতি সকল ধরনের নির্যাতন বন্ধ করার জন্য তিনি সবাইকে এগিয়ে আসার অনুরোধ জানান।

শাহনাজ সুমী বলেন, নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধে সবার সাথে মিলে নিরাপত্তা বলয় তৈরি করতে হবে। পাড়ার তরুণদের সহিংসতা বন্ধে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। তিনি বলেন নারীরা শুধু বাইরে নয়, ঘরের ভিতরেও নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। শুধু তাই নয়, আত্মীয়-স্বজন দ্বারাও নারীরা নির্যাতনের শিকার হয়। নির্যাতনের শিকার নারীরা মুখ খুলেও কথা বলতে পারেননা সামাজিকতার ভয়ে। তিনি নারীর প্রতি সহিংসতার বন্ধে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

পল্লব চাকমা বলেন, নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধে শুধু নারী নয়, পুরুষদেরও এগিয়ে আসতে হবে, তাদেরকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। আমাদের নারীরা আমাদের মায়েরা যে সংগ্রাম করেন তা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। আমরা যদি আমাদের সমাজ ব্যবস্থাকে জেনে নিজেকে বদলাতে পারি আলো জ্বেলে জীবনকে সুন্দর করতে পারি তাহলে সমাজ একটি অবশ্যই পরিবর্তন হতে বাধ্য।

জান্নাতুল-এ ফেরদৌসি বলেন, তিনি বলেন মুক্তিযুদ্ধে আদিবাসী নারীদের অবদান আছে। তিনি বলেন তিনি মুক্তিযুদ্ধে আদিবাসী নারীদের অংশগ্রহনের ওপর গবেষনা করতে গিয়ে দেখেন যে ত্রিপুরা আদিবাসী নারী লাকড়ির ভিতর অস্ত্র লুকিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের অস্ত্র সরবরাহ করেছিলেন কিন্তু কেউ জানতে চায়নি তার নাম। এভাবেই অনেক নারী আদিবাসীর নাম কোন তালিকায় অন্তর্ভূক্ত হয়নি।

সভাপতির বক্তব্যে চৈতালি ত্রিপুরা বলেন, যে সুপারিশমালা এসেছে সেগুলো দীর্ঘদিন ধরে আদিবাসীরা দাবি জানিয়ে এসেছে। কিন্তু এই দাবিনামাগুলো সরকারের নীতি-নির্ধারকদের কাছে পৌঁছে না। হয়ত আমরা সরকারকে বুঝাতে পারছি না বা সরকার আমাদের দাবিগুলো এড়িয়ে চলছে। তাই আমাদের হয়ত সংগ্রামের কৌশল বদলাতে হবে।

More From Author