৬ কোটি টাকা মুক্তিপণের বিনিময়ে রবি নেটওয়ার্ক কর্মচারীদের ছেড়ে দিল ইউপিডিএফ

হিল ভয়েস, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, বিশেষ প্রতিবেদক: প্রায় সাড়ে ৭ মাস আগে অপহরণ করার পর মুক্তিপণ ও চাঁদাবাবদ ৬ কোটি টাকার বিনিময়ে রবি মোবাইল নেটওয়ার্ক কোম্পানির ৩ কর্মচারীকে পার্বত্য চুক্তি বিরোধী ইউপিডিএফ (প্রসিতপন্থী) সন্ত্রাসীরা ছেড়ে দিয়েছে বলে জানা গেছে। এদিকে অপহরণকারীদের কর্তৃক নিরাপদে চট্টগ্রাম থেকে মুক্তিপণ আদায়ের বিষয়টি নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।

গত পরশু (১৭ সেপ্টেম্বর) নগদ ৩ কোটি টাকা হাতে পাওয়ার পর অপহরণকারীরা চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ এলাকার একটি আবাসিক হোটেল থেকে অপহৃত তিন ব্যক্তিকে ছেড়ে দেয়।

উল্লেখ্য, গত ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ইউপিডিএফ (প্রসিতপন্থী) সন্ত্রাসীদের একটি দল খাগড়াছড়ি জেলাধীন পানছড়ি উপজেলার পুজগাং এলাকা থেকে রবি মোবাইল নেটওয়ার্ক কোম্পানির টাওয়ার অপারেটর বিকাশ চাকমা (৪৮), রবির মানিকছড়ি উপজেলার টেকনিশিয়ান মোঃ ইসমাইল মিয়া বাবু ও আব্রে মারমাকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। অপহরণের পর বিপুল পরিমাণ অর্থ মুক্তিপণ দাবি করে। এমনকি ঐ সময় পানছড়ি এলাকার বিভিন্ন মোবাইল টাওয়ারের তার কেটে দিয়ে নেটওয়ার্ক বন্ধ করে দেয়।

ইউপিডিএফ (প্রসিতপন্থী) সন্ত্রাসীদের সাথে রবি মোবাইল নেটওয়ার্ক কোম্পানির প্রতিনিধিদের ব্যাপক দর কষাকষির পর সর্বশেষ মুক্তিপণ বাবদ ও বকেয়া চাঁদা বাবদ মোট ৬ কোটি টাকার বিনিময়ে অপহৃতদের ছেড়ে দেয় ইউপিডিএফ।

জানা গেছে, ছেড়ে দেওয়ার সময় ইউপিডিএফ প্রতিনিধি নগদ ৩ কোটি গ্রহণ করে এবং বাকী ৩ কোটি টাকা থেকে ২৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে দেড় কোটি এবং বাকী দেড় কোটি পর্যায়ক্রমে দেওয়ার অঙ্গীকার করে রবি কোম্পানির প্রতিনিধি।

মুক্তি পাওয়ার পর অপহৃত ব্যক্তিরা সেইদিন (১৭ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম এলাকায় রবি কোম্পানির প্রতিনিধিদের তত্ত্বাবধানে ছিলেন বলে জানা যায়। গতকাল বা আজ (১৯ সেপ্টেম্বর) রবি কোম্পানির প্রতিনিধিদের কর্তৃক ভুক্তভোগীদের চট্টগ্রাম থেকে নিয়ে গিয়ে তাদের পরিবারের নিকট হস্তান্তর করার কথা বলে জানা যায়।

এদিকে, ইউপিডিএফ (প্রসিতপন্থী) সন্ত্রাসীদের কর্তৃক প্রায় সাড়ে ৭ মাস অপহরণ করে রাখার পর নিরাপদে চট্টগ্রাম থেকে বিপুল পরিমাণ মুক্তিপণ আদায়ের বিষয়টি অনেকের মনে প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। তাদের মতে, এই অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায় সেনাবাহিনী ও ইউপিডিএফের যৌথভাবে প্রয়োজিত চাঁদাবাজির নাটক।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক খাগড়াছড়ি সদর এলাকাবাসী বলেন, সেনাবাহিনী একদিকে সেনা অভিযানের নামে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করে। অথচ এত অভিযানের মুখেও ইউপিডিএফ (প্রসিতপন্থী) নিরাপদে অপহৃতদের আটক করে রাখে এবং কোটি কোটি টাকার মুক্তিপণের বিনিময়ে খোদ চট্টগ্রাম এলাকা থেকেই অপহৃতদের ছেড়ে দেয়। তার মতে, সেনাবাহিনী ও গোয়েন্দা বিভাগের লোকদের সম্পৃক্ততা না থাকলে এটা কখনো সম্ভব নয়।

More From Author

+ There are no comments

Add yours