১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা মুক্তিপণ নিয়ে পূর্ণলালকে ছেড়ে দিয়েছে সেনামদদপুষ্ট সন্ত্রাসীরা

0
894

হিল ভয়েস, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১, রাঙ্গামাটি: ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা মুক্তিপণ নিয়ে সেনামদদপুষ্ট সংস্কারপন্থী ও ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) সন্ত্রাসীরা রাঙ্গামাটি জেলাধীন কাপ্তাই উপজেলার কাপ্তাই নতুন বাজার থেকে অপহৃত পূর্ণলাল চাকমাকে (৩২) অপহরণের পরদিন ছেড়ে দিয়েছে বলে জানা গেছে। গত ৩০ জানুয়ারি ২০২১ রাত আনুমানিক ৯:০০ টার দিকে সন্ত্রাসীরা রাঙ্গামাটি শহরের আসামবস্তী এলাকা থেকে পূর্ণলাল চাকমাকে ছেড়ে দেয়।

উল্লেখ্য, গত ২৯ জানুয়ারি ২০২১ সকালের দিকে রাঙ্গামাটির বিলাইছড়ি উপজেলার কেংড়াছড়ি ইউনিয়নের শামুকছড়ি গ্রামের বাসিন্দা পূর্ণলাল চাকমা (৩২), পীং-অনিন্দ্য চাকমা ব্যবসার কাজে কাপ্তাই বাজারে গেলে দুপুর ১:০০ টার দিকে সন্ত্রাসীরা পিস্তল ঠেকিয়ে তাকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। অপহরণের পর সন্ত্রাসীরা পূর্ণলাল চাকমার পরিবারের লোকদের কাছে মুক্তিপণ হিসেবে ১,৫০,০০০ টাকা দাবি করে। ৩১ জানুয়ারি ২০২১ এর মধ্যে ঐ টাকা না দিলে তারা পূর্ণলালকে মেরে ফেলা হবে বলে হুমকি দেয়।

অপহৃতের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে জানা গেছে, তারা অনেক কষ্টে ১ লক্ষ ১০ হাজার যোগাড় করে সেগুলো বিকাশের মাধ্যমে ৩০ জানুয়ারি ২০২১ সন্ত্রাসীদের কাছে পাঠান। অপরদিকে, সন্ত্রাসীরা ইতোমধ্যে অপহৃত পূর্ণলাল চাকমার কাছে থাকা ১০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। সেই হিসেবে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা মুক্তিপণ আদায় করার পর সন্ত্রাসীরা অপহৃত পূর্ণলাল চাকমাকে ছেড়ে দেয়।

অপহৃত পূর্ণলাল চাকমা জানান, অপহরণকারীরা তাকে মারধর ও হয়রানিও করে। তার বুকে লাঠি মারে এবং গালে একাধিক ঘুষি মারে। এছাড়া, চোখ বেঁধে অনেক দূর পথ হাঁটিয়ে নিয়ে যায়। এসময় পায়ে লাঠি দিয়ে আঘাত করে।

এদিকে বাড়িতে ফিরে আসার পর বিলাইছড়ি সদর সেনা জোনের সেনাবাহিনী পূর্ণলাল চাকমাকে জোনে ডেকে নিয়ে যায় এবং নানা প্রশ্ন জিজ্ঞাসাবাদ করে বলে জানা যায়। কিন্তু সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে উক্ত সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপের কথা জানা যায়নি।

উল্লেখ্য, রাঙ্গামাটি জেলাধীন সদর উপজেলার জীবতলি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পাড়া নামক গ্রামে গত প্রায় বছরখানেক আগে সেনাবাহিনীর ছত্রছায়ায় সংস্কারপন্থী ও ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) সন্ত্রাসীদের একটি দল অবস্থান গ্রহণ করে। এরপর থেকেই তারা জীবতলিসহ আশেপাশের এলাকায় হত্যাসহ অপহরণ, মারধর, চাঁদাবাজি ইত্যাদি সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে। আরও উল্লেখ্য যে, সন্ত্রাসীদের আস্তানা থেকে জীবতলী আনসার ক্যাম্প ও জীবতলী সেনা ক্যাম্পের দূরত্ব বেশি দূরে নয় বলে জানা গেছে।