সেনাবাহিনী কর্তৃক মগপার্টি সন্ত্রাসীদের বান্দরবান শহরে আশ্রয় প্রদান, জনমনে আতঙ্ক

0
2073

হিল ভয়েস, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২২, বান্দরবান: বান্দরবান সেনা ব্রিগেডের নিরাপত্তায় মগপার্টি নামে খ্যাত মারমা লিবারেশন পার্টি (এমএনপি)-এর ২৫ জন সশস্ত্র সন্ত্রাসী সদস্যদেরকে প্রকাশ্যে বান্দরবান শহরের প্রাণকেন্দ্র উজানী পাড়ার পাড়া কেন্দ্র স্কুলে একরাত রাখার ব্যবস্থা করা হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এই ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল রবিবার (১৮ সেপ্টেম্বর)। প্রকাশ্যে শহরের ঘন জনবসতির মধ্যে ইউনিফর্ম পরিহিত অবস্থায় অস্ত্রশস্ত্র সমেত মগপার্টি সন্ত্রাসীদেরকে এভাবে সেনাবাহিনীর উদ্যোগে আশ্রয় দেয়ায় জনমনে ব্যাপক আতঙ্ক ও উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে যে, রবিবার ১৮ সেপ্টেম্বর বিকাল ৪:০০ টায় মগপার্টির উক্ত ২৫ জন সশস্ত্র সন্ত্রাসী সদস্যদেরকে বান্দরবান সেনা ব্রিগেডের নিয়োজিত তিনজন গোয়েন্দা সদস্যের তত্ত্বাবধানে বান্দরবান শহরের উজানী পাড়ার পাড়া কেন্দ্র স্কুলে আনা হয়। সেখানে তাদের জন্য খাওয়া-দাওয়া ও থাকার ব্যবস্থা করা হয়।

এরপর সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) ভোর ৪:৩০ টার দিকে গোয়েন্দা বাহিনীর উক্ত তিনজন সদস্যের তত্ত্বাবধানে শহরের বড়ুয়া টেক হয়ে তাম্রু এলাকার দিকে নিয়ে যাওয়া হয়। যাওয়ার সময় সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা বড়ুয়া টেক এলাকায় নির্মাণ কাজে নিয়োজিত বাঙালি শ্রমিকদের কাছ থেকে চাঁদা দাবি করে এবং এক পর্যায়ে কয়েকজনকে মারধর করে বলে জানা যায়।

প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, মগপার্টির ২৫ জন সন্ত্রাসীর মধ্যে ১১ জনকে স্বয়ংক্রিয় আধুনিক অস্ত্র বহন করতে দেখা গিয়েছিল। আর অবশিষ্ট সন্ত্রাসীদের হাতে পয়েন্ট ২২ রাইফেল ও এসবিবিএল বন্দুক ছিল।

স্থানীয় সূত্রে আরো জানা যায় যে, গত আগষ্টের শেষান্তে সেনাবাহিনী কর্তৃক মগপার্টির সশস্ত্র সদস্যদেরকে খুন, অপহরণ, চাঁদাবাজিসহ সন্ত্রাসী কাজে লেলিয়ে দেয়ার জন্য রাঙ্গামাটি জেলার কাপ্তাই উপজেলার চিৎমরম এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেসময় বিহার কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতিরেকে জোর করে সন্ত্রাসীদেরকে সশস্ত্র অবস্থায় চিৎমরম বৌদ্ধ বিহারের বিশ্রামাগারে রাখা হয়।

চিৎমরম বৌদ্ধ বিহারের বিশ্রামাগারে অবস্থানকালে ১ সেপ্টেম্বর ২০২২ সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত প্রতিপক্ষের পর পর কয়েক দফা হামলায় মগপার্টির ৪ জন সশস্ত্র সন্ত্রাসী সদস্য নিহত হয়। এতে আতঙ্কিত হয়ে মগপার্টির সদস্যরা সেনাবাহিনীর নিরাপত্তা বেষ্টনী সহকারে কাপ্তাই সদরের দিকে পালিয়ে যায়।

উল্লেখ্য যে, ‘ভাগ করো শাসন করো’ উপনিবেশিক নীতির ভিত্তিতে সেনাবাহিনী প্রসিত-সমর্থিত ইউপিডিএফ, ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক), সংস্কারপন্থী জেএসএস, মগপার্টি খ্যাত এমএনপি, বম পার্টি খ্যাত কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট, শামীম মাহফুজের নেতৃত্বাধীন জামায়াতে আরাকান, আরএসও, আরসা প্রভৃতি সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোকে আশ্রয়-প্রশ্রয় ও মদদ দিয়ে চলেছে এবং জনসংহতি সমিতির নেতৃত্বে চলমান পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন তথা আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার আন্দোলনের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিয়ে চলেছে।