লামায় ভূয়া পরিচয়ে মাসুদ ও কোয়ান্টামের বিরুদ্ধে জালিয়াতি করে জমি ক্রয়ের অভিযোগ

হিল ভয়েস, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, বিশেষ প্রতিবেদক: সাম্প্রতিক সময়ে বান্দরবান জেলাধীন লামা উপজেলায় ভূয়া পরিচয় দিয়ে খুলনা নিবাসী মাসুদ পারভেজ নামে একজন ব্যক্তি ও তার আশ্রয়-প্রশ্রয় দাতা কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের বিরুদ্ধে ভূয়া পরিচয় দিয়ে পাহাড়ে জমি কেনার চাঞ্চল্যকর জালিয়াতির অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে।

জানা যায়, বরিশাল নিবাসী মাসুদ পারভেজ ও তাকে আশ্রয় দেওয়া কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন দীর্ঘদিন যাবৎ বান্দরবানে বিভিন্ন উপজেলায় জমি কেনার নামে সুপরিকল্পিত প্রতারণার ফাঁদ পেতেছিলেন। এমনকি ভূয়া পরিচয়ে পরিচিত মাসুদ পারভেজ নামে উক্ত ব্যক্তি নিজেকে লামার স্থায়ী বাসিন্দা দাবি করে ২০২২ সালে ৩০৬ নং ফাইতং মৌজায় জমি ক্রয়ের বায়না দলিল (নং ১১৮/২০২২) সম্পাদন করেন।

আরো জানা যায়, জমির বায়না নামা দলিল রেজিস্ট্রেশনের সময় ভূয়া মাসুদ পারভেজ তার পিতা হিসেবে মো. ইউনুস আলী একটি জবানবন্দি জমা দেন। কিন্তু বাস্তবে সেই ব্যক্তির হুকুমনামা রেকর্ডে মাসুদ নামে কোনো সন্তানের অস্তিত্ব নেই।

এছাড়াও ভূয়া মাসুদ পারভেজ স্থায়ী বাসিন্দা পরিচয় দেখানোর জন্য একটি রাজা (সার্কেল চীফ)-এর স্থায়ী বাসিন্দার সনদ দাখিল করেছিলেন। উক্ত ১৭৮৩০ নম্বরের ওই সনদ ছিল সম্পূর্ণ ভূয়া এবং মাসুদ পারভেজ নামে কাউকে কোনো রাজার স্থায়ী বাসিন্দার সনদ ইস্যু করা হয়নি। ফলে তার স্থানীয় পরিচয় প্রমাণের নথিটিও জাল বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত পাওয়া যায়।

পরিচয় যাচাইয়ের জন্য দাখিল করা ইউনিয়ন পরিষদের জাতীয়তা সনদটিও সঠিক নয় বলে জানা গেছে।

স্থানীয় সচেতন মহলের অভিযোগ, মাসুদ পারভেজকে আশ্রয় ও প্রশ্রয় দিয়েছে লামা কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পরও প্রতিষ্ঠানটি তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো তাকে আশ্রয় দিয়েছে।

এই বিষয়ে বান্দরবান জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলমগীর চৌধুরী স্পষ্ট জানান, পার্বত্য চট্টগ্রাম রেগুলেশন ১৯০০ অনুযায়ী, বাইরের কোনো জেলার লোক পাহাড়ে জমির মালিক হতে পারেন না। ভূয়া পরিচয়ে জমি কেনা এবং এতে সহযোগিতাকারীরা দুর্নীতি দমন আইনের আওতায় অপরাধী হিসেবে গণ্য হবে।

ঘটনার পর থেকেই লাপাত্তা অভিযুক্ত মাসুদ পারভেজ। তার ফোনও বন্ধ। স্থানীয় সাংবাদিক ও সচেতন নাগরিকদের মতে, এটি নিছক কোনো জমি কেনা-বেচা নয়, বরং রাষ্ট্রীয় রেকর্ড জালিয়াতির এক ঘৃণ্য দৃষ্টান্ত।

More From Author