রোয়াংছড়িতে কেএনএফ সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের কার্যক্রম বন্ধের দাবিতে বম জনগোষ্ঠীর প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন

0
84

হিল ভয়েস, ১২ জুন ২০২৪, বান্দরবান:বান্দরবান জেলার রোয়াংছড়ি উপজেলায় বম জনগোষ্ঠী কর্তৃক বম পার্টি নামে খ্যাত কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠনের কার্যক্রম বন্ধের দাবিতে রোয়াংছড়ি বাজারে এক প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন আয়োজন করা হয়েছে।

গত ১০ জুন ২০২৪, সোমবার সকাল ৯টার দিকে রোয়াংছড়ি উপজেলা বাজারে উক্ত প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন হয়।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, কেন এফ এর ক্রমবর্ধমান বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের কারণে এলাকায় স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। আমাদের মা-বোন আবাল-বৃদ্ধ বনিতা তোমাদের অপরাধের ভুক্তভোগী হতে চায় না। আজ বম জনগোষ্ঠী অধিকাংশ গ্রাম জনশূন্য। শত শত মানুষ দেশান্তরিত হচ্ছে। স্কুল কলেজ ভার্সিটি শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা বন্ধ হচ্ছে। স্বাভাবিক গৃহস্থালী কাজ, আর্থ সামাজিক, জীবন জীবিকা নির্বাহ কাজ ব্যাহত হচ্ছে। এলাকায় সাধারণ মানুষ অনাহারে অর্ধাহারে মানবেতার জীবন যাপন করছে। এসবের দায়ভার KNF কে নিতে হবে। বম জনগোষ্ঠীর প্রধান আয়ের উৎস হচ্ছে ফলজ বাগান বাগান ও জুম চাষ। ফলজ বাগান করে শত শত পরিবার জীবিকার নির্বাহ করে থাকে। ফলমূল বিক্রি করার এই মৌসুমে KNF সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে এলাকায় অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে ব্যবসায়ীরা বম পাড়ায় আসতে না পারায় শত একর ফলজ বাগান নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বলে প্রতীয়মান হয়।

তাই KNF সংগঠনের প্রতি আমাদের অনুরোধ, তোমরা যদি সমাজে শান্তি চাও, লুন্ঠিত সরকারি অস্ত্র ফেরত দিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসো। তোমাদের অযৌক্তিক ও অবান্তর চিন্তা, জাতি নিশ্চিহ্ন, সামাজিক অবক্ষয় বিশৃঙ্খলা, অর্থনৈতিক ধ্বংস ও এলাকায় ক্ষতি ছাড়া কেবল সুফল বয়ে আনবে না।

উক্ত সমাবেশের মাধ্যমে বম সমাজের পক্ষ থেকে নিম্নোক্ত দাবি উত্থাপন করা হয়-

১) অবিলম্বে KNF কর্তৃক লুট করা অস্ত্র ও গোলাবারুদ ফিরিয়ে দাও

২) KNF এর সমস্ত কার্যক্রম বন্ধ কর।

৩) অবাস্তব স্বপ্ন থেকে বেরিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।

উল্লেখ্য, গত ২ ও ৩ এপ্রিল পরপর রুমার সোনালী ব্যাংক শাখা এবং থানচির সোনালী ব্যাংক ও কৃষি ব্যাংক শাখায় ডাকাতি করে কেএনএফ সন্ত্রাসীরা অর্থ সহ ১৪টি অস্ত্র লুট করলে সেনাবাহিনী ও ডিজিএফআই-এর নেতৃত্বে যৌথবাহিনী কেএনএফের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে।

আরো উল্লেখ্য যে, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের আন্দোলনকে বাধাগ্রস্ত করতে এবং ভাগ করো শাসন করো উপনিবেশিক নীতির ভিত্তিতে একের পর এক সশস্ত্র সন্ত্রাসী গ্রুপ গঠনের ষড়যন্ত্র হিসেবে সেনাবাহিনী কর্তৃক কেএনএফ সৃষ্টি করা হয়। পরে অর্থের বিনিময়ে কেএনএফ কর্তৃক ইসলামী জঙ্গী গোষ্ঠীকে আশ্রয় ও সামরিক প্রশিক্ষণের তথ্য ফাঁস হলে আন্তর্জাতিক চাপে পড়ে সেনাবাহিনী তথা বাংলাদেশ সরকার বাধ্য হয় কেএনএফের সামরিক অভিযান পরিচালনা করতে। যার ফলশ্রুতিতে পাহাড়ের শান্ত পরিবেশ দিন দিন অবনতির দিকে ধাবিত হচ্ছে।