রাজস্থলীতে সেনাবাহিনী কর্তৃক ৪ জুম্ম গ্রামবাসীকে বেদম মারধর, ন্যান্যাচরে ১ জনকে আটক

0
590

হিল ভয়েস, ৮ মে ২০২১, রাঙ্গামাটি: সেনাবাহিনী কর্তৃক রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার রাজস্থলীতে ৪ জন নিরীহ জুম্ম গ্রামবাসীকে মারধর এবং ন্যান্যাচরে ১ জন জুম্মকে আটক করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল ৭ মে ২০২১ শুক্রবার রাত আনুমানিক ১০:০০ টার দিকে রাজস্থলী উপজেলার রাজস্থলী সেনা ক্যাম্প থেকে একদল সেনা সদস্য ১নং ঘিলাছড়ি ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের মুবাছড়ি গ্রামে টহল অভিযানে যায়। এসময় সেনা সদস্যরা প্রথমে তিন জুমচাষীর বাড়িতে ঢুকে ‘সন্ত্রাসী কোথায় আছে’ বলে জিজ্ঞেস করে এবং সন্ত্রাসীদের দেখিয়ে দিতে হবে বলে চাপ দেয়। এসময় ৩ নিরীহ গ্রামবাসী ‘আমরা গ্রামবাসী, সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত জুমে থাকি, আমরা কোন সন্ত্রাসী চিনি না’ বলে উত্তর দেয়। একথা শুনে সেনা সদস্যরা রেগে গিয়ে ৩ জনকে বেঁধে নিয়ে পার্শ্ববর্তী গ্রাম বারখাইয়া পাড়াতে নিয়ে যায়। সেখানে গিয়ে সেনা সদস্যরা আরেক বাড়িতে ঢুকে, তাকেও সন্ত্রাসীর ঠিকানা, কোথায় থাকে ইত্যাদি বলার জন্য চাপ দেয়। ঐ ব্যক্তিও সন্ত্রাসী চিনি না, দেখিও নাই বলে উত্তর দেয়।

এরপর সেনা সদস্যরা উক্ত ৪ জুম্ম গ্রামবাসীকে বেঁধে বেদম মারধর করে। প্রায় একঘন্টা যাবত মারধর করে। এক পর্যায়ে ৪ জনকে গুরুতর জখম অবস্থায় রেখে সেনা সদস্যরা ক্যাম্পে চলে যায়।

মারধরের শিকার ৪ জুমচাষীরা হলেন- মুবাছড়ি গ্রামের বাসিন্দা (১) গোবিন্দ তঞ্চঙ্গ্যা (৩৫), পীং-এরাই মোহন তঞ্চঙ্গ্যা; (২) ছত্র কুমার তঞ্চঙ্গ্যা (৩৪), পীং-অয়ন্ত তংচঙ্গ্যা; (৩) বীরচান তঞ্চঙ্গ্যা (৪৫), পীং-অজ্ঞাত এবং বারখাইয়া পাড়ার বাসিন্দা (৪) স্বপন কুমার তঞ্চঙ্গ্যা (৩৫), পীং-কালিনয়া তঞ্চঙ্গ্যা।

অপরদিকে সেনাবাহিনী কর্তৃক নান্যাচর উপজেলার বেতছড়ি এলাকার সোনারাম কার্বারী পাড়া গ্রামের বাসিন্দা মিন্টু চাকমা (৩৬) নামে এক জুম্মকে তুলে নিয়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আটক মিন্টু চাকমা সোনারাম কার্বারী পাড়ার পদ্ম মোহন চাকমার ছেলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, একই তারিখ ভোররাত আনুমানিক ২:৩০ টার দিকে সেনাবাহিনীর নান্যাচর সেনা জোনের একদল সেনা সদস্য মিন্টু চাকমাকে নিজ বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়। আটকের পর সেনা সদস্যরা বাড়িতে কথিত অবৈধ গোলা-বারুদ রাখার অভিযোগে মিন্টু চাকমাকে ন্যান্যাচর থানায় হস্তান্তর করেছে বলে পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে।

জানা গেছে, নান্যাচর উপজেলা চেয়ারম্যান শক্তিমান চাকমার হত্যাকান্ডের মামলায় দীর্ঘদিন কারাভোগের পর গত ফেব্রুয়ারি মাসে জামিনে মুক্তি লাভ করে বলে পারিবারিক সূত্র জানায়। পরিবারের দাবি, মিন্টু চাকমাকে সম্পূর্ণ মিথ্যাভাবে শক্তিমান চাকমার হত্যাকান্ডের মামলায় জড়িত করে গ্রেফতার করা হয়।