ভান লাল রোয়াল বম এর মৃত্যুর ঘটনায় রাষ্ট্রীয় নিপীড়নের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছে-বিএসএ

হিল ভয়েস, ১৭ জুলাই ২০২৫, বান্দরবান: আজ ১৭ জুলাই ২০২৫ চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে ভান লাল রোয়াল বম (৩৫) নামের এক কারাবন্দির মৃত্যুর ঘটনায় বম স্টুডেন্ট এসোসিয়েশন নিন্দা প্রতিবাদ ও ক্ষোভ জানিয়ে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে।

বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, দীর্ঘ দুই বছরের অধিক বিনা বিচারে চট্টগ্রাম জেলা কারাগারে আটক থাকা অবস্থায় আজ ১৭ জুলাই ২০২৫ সকাল সাড়ে ১০ টায় ভান লাল রোয়াল বম (৩৫) মৃত্যুবরণ করেন। এটা স্পষ্টতই জেল হেফাজতে তাকে অমানবিক পরিবেশে, চিকিৎসা সুবিধাবঞ্চিত অবস্থায় রাখা হয় যা শেষ পর্যন্ত তার মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায়। আমরা এই মৃত্যুকে কোনো স্বাভাবিক ঘটনা বা দুর্ঘটনা হিসেবে দেখি না। এটি স্পষ্টতই রাষ্ট্রীয় অবহেলা ও নিপীড়নের ধারাবাহিক পরিণতি। এর আগে একই ধরনের অবস্থায় বম জাতিগোষ্ঠীর আরও অনেক সদস্য বিচারবহির্ভূত ভাবে বন্দি অবস্থায় প্রাণ হারিয়েছেন। কিন্তু এসব মৃত্যুর কোনো বিচার হয়নি, হয়নি কোনো নিরপেক্ষ তদন্ত।যার কোনো স্বাধীন তদন্ত বা বিচার হয়নি। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানসমূহের এই নিরবতা ও নিষ্ক্রিয়তা একটি পদ্ধতিগত নিপীড়ন ও ধ্বংসের নীতির ইঙ্গিত দেয়। আমরা মনে করি, এ এক স্লো জেনোসাইড যেখানে আদিবাসী বম জাতিগোষ্ঠীকে লক্ষ্য করে পরিকল্পিতভাবে দমননীতি প্রয়োগ করা হচ্ছে।

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, চব্বিশের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশে অর্ন্তর্বতীকালীন সরকার গঠিত হলে দেশে সাজাপ্রাপ্ত জঙ্গীসহ অনেক কুখ্যাত সন্ত্রাস, যুদ্ধাপরাধী রাজাকার খ্যাত চিহ্নিত অপরাধী ও মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামীদের দায়হীনভাবে মুক্তি দেয়া হলেও বছরের পর বছর ধরে বিনা বিচারে আটক থাকা বম জাতির নিরপরাধ শিশু-কিশোর ও নারী-পুরুষদের এখনো মুক্তি দেয়া হচ্ছে না।

রাষ্টীয় হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনায় বম স্টুডেন্ট এসোসিয়েশন (বিএসএ) এর পক্ষে থেকে সরকারের কাছে নিমোক্ত দাবিসমূহ উল্লেখ করা হয়:
১. চট্রগ্রাম জেলা কারাগারে ভান লাল রোয়াত বম সহ লালসাংময় এবং লালত্লেং কিম বমের মৃত্যু বিচার বিভাগীয় তদন্ত সাপেক্ষে দায়ীদের বিচারের আওতায় আনুন।
২. নিরপরাধ নারী ও শিশু, পুরুষ আটককৃত বমদের মুক্তি দিতে হবে।
৩. বম জনগণের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন, মিথ্যা মামলা ও জেল হয়রানি বন্ধ করতে হবে।

বম স্টুডেন্ট এসোসিয়েশন এর নেতৃদ্বয় বলেন, অবিলম্বে উক্ত দাবির কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। একের পর এক মৃত্যু ঘটনায় রাষ্ট্রের উদাসীনতা ও নীরবতা কোনো ভাবে কাম্য নয়।

More From Author

+ There are no comments

Add yours