বিলাইছড়িতে সেনাবাহিনী কর্তৃক ২ জুম্ম গ্রামবাসী ব্যাপক মারধর ও আটকের শিকার

0
1367
ছবি: প্রতীকী

হিল ভয়েস, ২৩ আগস্ট ২০২২, রাঙ্গামাটি: রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলাধীন বিলাইছড়ি উপজেলার কেংড়াছড়ি ইউনিয়নে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কর্তৃক দুই নিরীহ গ্রামবাসী অমানুষিক মারধর ও আটকের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সেনাবাহিনী দুই গ্রামবাসীকে মারধরের পর বিলাইছড়ি সেনা জোনে ৫ ঘন্টার অধিক আটক রাখার পর ছেড়ে দেয় বলে জানা যায়।

মারধর ও আটকের শিকার দুই গ্রামবাসী হলেন- মিন্টু চাকমা (৪০), পীং-মৃত হীরালাল চাকমা, গ্রাম-বাঙালকাটা, কেংড়াছড়ি ইউনিয়ন ও সন্তু চাকমা (৩৫), পীং- মৃত হীরালাল চাকমা, গ্রাম-ঐ। তারা দুই আপন ভাই।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আজ ২৩ আগস্ট ২০২২, সকাল আনুমানিক ১০:০০ টার দিকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিলাইছড়ি সেনা জোনের ৩২ বীর ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের ২১ জনের একটি দল বাঙালকাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অবস্থান নেয়। এদের মধ্য থেকে ৭ জনের একটি সেনাদল হঠাৎ কেংড়াছড়ি ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের বাঙালকাটা চৌমুহনি এলাকায় যায় এবং সেখানে একটি দোকানের ভিতরে অবস্থানরত মিন্টু চাকমাকে জোরপূর্বক টেনেহেঁচড়ে দোকানের বাইরে নিয়ে আসে। এরপর সেনা সদস্যরা মিন্টু চাকমাকে তার বসতভিটায় নিয়ে গিয়ে তার হাত-পা বেঁধে অমানুষিকভাবে মারধর করে। এসময় সেনা সদস্যরা মিন্টু চাকমার বাড়িতেও ব্যাপক তল্লাশি চালায় এবং জিনিসপত্র তছনছ করে দেয়।

এরপর সকাল আনুমানিক ১১:১০ টার দিকে সেনা সদস্যরা মিন্টু চাকমাকে ধরে নিয়ে তার ছোট ভাই সন্তু চাকমার চায়ের দোকানে যায়। এসময় সেনা সদস্যরা সন্তু চাকমাকে তার নিজের চায়ের দোকান থেকে একই কায়দায় টেনেহেঁচড়ে বাইরে এনে ব্যাপক মারধর করে। এরপর সেনা সদস্যরা প্রথমে সন্তু চাকমার বাড়ি এবং পরে এর পার্শ্ববর্তী সন্তু চাকমার ছোট ভাই মন্টু চাকমার বাড়িতে ব্যাপক তল্লাশি চালায়। এসময় মন্টু চাকমা বাড়িতে ছিলেন না।

প্রত্যক্ষদর্শীরা আরো জানায়, তল্লাশির সময় সেনা সদস্যরা মন্টু চাকমার বাড়িতে পালিত শুকরের খাদ্য এবং ১০ লিটার করে ২০ লিটার পানি খুঁজে পায়। এরপর সেনা সদস্যরা মিন্টু চাকমা ও সন্তু চাকমার প্রত্যেকের কাঁধে ১০ লিটার পানি তুলে দিয়ে এলাকায় তাদের সাথে ঘুরতে বাধ্য করে।

দুপুর ১:০০ টার দিকে সেনা সদস্যরা মিন্টু চাকমা ও সন্তু চাকমাকে বিলাইছড়ি সেনা জোনে নিয়ে যায়।

পরে কেংড়াছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য সাধন চাকমা ও ১২৭ নং কেরনছড়ি মোজার হেডম্যান সুনিক জ্যোতি তালুকদার বিলাইছড়ি সেনা জোনে যান এবং দুই নিরীহ গ্রামবাসীর মুক্তি চান।

প্রায় ৫ ঘন্টার অধিক সময় ধরে বিলাইছড়ি সেনা জোনে আটক রাখার পর বিকাল আনুমানিক ৫:২০ টার দিকে সেনা সদস্যরা মিন্টু চাকমা ও সন্তু চাকমাকে ইউপি সদস্য সাধন চাকমা ও হেডম্যান সুনিক জ্যোতি তালুকদারের নিকট ছেড়ে দেয় বলে জানা গেছে।

জিজ্ঞেস করলে একাধিক গ্রামবাসী এবং ভুক্তভোগীর পরিবারের সদস্যরা জানাতে পারেনি কেন সেনাবাহিনী তাদেরকে মারধর করল এবং সেনা ক্যাম্পে আটক রাখল।