হিল ভয়েস, ২১ মে ২০২৫; বান্দরবান: গতকাল ২০ মে ২০২৫ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুসের বরাবর স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের চূড়ান্ত প্রতিবেদন আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হয়েছে।
এতে স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনের দ্বিতীয় খণ্ডে, বম, লুসাই ও পাংখোয়া—তিন জনগোষ্ঠীর জন্য সংরক্ষিত জেলা পরিষদের সদস্য পদটি শুধু বম জনগোষ্ঠীর জন্য সংরক্ষণ করা উচিত বলে সুপারিশ করা হয়। লুসাই ও পাংখোয়া এই দুই জনগোষ্ঠীর আদি নিবাস রাঙ্গামাটি। তাই বান্দরবানে তাদের আসনের প্রয়োজন নেই। এ জন্য আইন সংশোধনেরও প্রস্তাব করা হয়েছে। এমন প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছেন প্রবীণ শিক্ষাবিদ ও বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান থানজামা লুসাই।
তিনি বলেন, আমি কলেজের শিক্ষক ছিলাম। জেলা পরিষদে এখন দ্বিতীয় মেয়াদে চেয়ারম্যান। এরপরও বান্দরবানে লুসাই ও পাংখোয়া নেই বলে উপস্থাপন করা অত্যন্ত দুঃখজনক। বান্দরবানে ১১টি আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীর বসবাস, যার মধ্যে লুসাই ও পাংখোয়া ঐতিহাসিকভাবে বসবাস করে আসছে। ১৯৮৯ সালের সংশোধিত আইনেও তাদের জন্য আসন সংরক্ষণের বিধান রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, কমিশনের এই তথ্য সম্পূর্ণ ভুল ও বিভ্রান্তিমূলক। বাস্তবে একমাত্র বান্দরবান পার্বত্য জেলাতেই ১১টি পাহাড়ি জাতিগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে। ১১ জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে লুসাই ও পাংখোয়ারাও আদিকাল থেকে বসবাস করে আসছেন। জনসংখ্যা কম হওয়ায় বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদে বম, লুসাই ও পাংখোয়া জনগোষ্ঠীর জন্য একটি সদস্যপদ রাখা হয়েছে। বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ আইনে (সংশোধিত ১৯৮৯) তা সুস্পষ্টভাবে বলা আছে। এ ছাড়া ১৯০০ সালের পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসনবিধিসহ বিভিন্ন আইনেও দুই জনগোষ্ঠীর নাম রয়েছে।
তিনি আশঙ্কা করে বলেন, স্থানীয় সরকার কমিশনের প্রস্তাব বাস্তবায়িত হলে চেয়ারম্যান হওয়া দূরের কথা, সদস্য হিসেবে নির্বাচন করার অধিকার থেকেও লুসাই-পাংখোয়াদের বঞ্চিত করা হবে। এমনকি চাকরিবাকরিসহ সব উন্নয়ন অংশীদারত্বের বঞ্চনার শিকার হবে।
সূত্র: প্রথম আলো