বান্দরবানে মহান নেতা মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার ৮৬তম জন্মবার্ষিকী অনুষ্ঠিত

হিল ভয়েস, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, বান্দরবান: আজ ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ সকাল ১০ ঘটিকায় বান্দরবান সদরে কে এস মং ভবনের নিচ তলায় মহান নেতা মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার ৮৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে এক আলোচনা সভা ও স্মরণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ডা. মংউষাথোয়াই, সভাপতি, আদিবাসী ফোরাম, বান্দরবান জেলা কমিটি; উবাসিং মারমা, সাধারণ সম্পাদক , বান্দরবান জেলা শাখা, পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি; উলিসিং মারমা, সভাপতি, বান্দরবান জেলা কমিটি, হিল উইমেন্স ফেডারেশন।

অনুষ্ঠানে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের নেতৃত্ববৃন্দও উপস্থিত ছিলেন।

ডা. মংউষাথোয়াই বলেন, মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা আমাদের কাছে অনুপ্রেরণার এক অমলিন নাম। তাঁর সংগ্রামী চেতনা আগামী প্রজন্মকে পথ দেখাবে।

তিনি আরো বলেন,  ছাত্র জীবনে মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার সাথে আমার পড়াশোনা ও রাজনীতি করার সুযোগ হয়েছে। তার আর্দশকে ধারণ করে আজ জুম্ম জনগণ তার পথে পরিচালিত হচ্ছে। তৎকালীন গণপরিষদের সদস্য মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা সর্বহারা, নিপীড়িত, অধিকারহারা মানুষের কথা তুলে ধরেছেন। পাহাড়ের মানুষের একদিন মুক্তি মিলবে, তারা তাদের স্বতন্ত্র অধিকার নিয়ে পৃথিবীর বুকে মাথা উঁচু করে বেঁচে থাকবে।

উবাসিং মারমা তাঁর বক্তব্যে বলেন, মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা পাহাড়ি জনগণের অস্তিত্ব রক্ষার লড়াইয়ে সবসময় অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি শুধু একজন নেতা নন, তিনি ছিলেন একজন সাহসী স্বপ্নদ্রষ্টা। তাঁর স্বপ্ন পূরণে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। তাঁর আন্দোলনের ফলে আজ পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন হয়েছে। ছাত্র, যুব সমাজ সবাইকে সেই ঐতিহাসিক পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নে অধিকতর দায়িত্ব পালন করতে হবে। তিনি বলেন, সরকার আমাদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে রেখেছে।

উবাসিং আরও বলেন, আজকের প্রজন্মকে লারমার আদর্শ অনুসরণ করতে হবে। তিনি শিখিয়েছেন, ত্যাগ ছাড়া অধিকার আদায় করা যায় না। তাই আমরা তাঁর সংগ্রামী পথ ধরে এগিয়ে গেলে নিশ্চয়ই আমাদের সমাজ অগ্রগতির পথে এগোবে।

উলিসিং মারমা বলেন, মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা ও তার পরিবার পাহাড়ি জনগণের অধিকার রক্ষার আন্দোলনের অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। লারমার সবচেয়ে বড় অবদান হলো তিনি পাহাড়ি জনগণের আত্মপরিচয়কে জাগ্রত করেছিলেন। তিনি বুঝিয়ে দিয়েছিলেন-অধিকার আদায় করতে হলে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে, সংগ্রামের পথ বেছে নিতে হবে। তাঁর নেতৃত্বে পাহাড়ি জনগণ আত্মবিশ্বাস পেয়েছিল, নিজেদের ভবিষ্যৎ গড়ার শক্তি খুঁজে পেয়েছিল।উলিসিং তার বক্তব্যে বলেন যে, সামন্ত সমাজের রাজাদের দোষেই আজ পাহাড়ি জনগণ অশিক্ষিত অবস্থায় রয়েছে।

তিনি উল্লেখ করে বলেন, অতীতে শাসক শ্রেণি নিজেদের স্বার্থে পাহাড়ি সমাজকে শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত করেছে। এর ফলে যুগের পর যুগ পাহাড়ি জনগণ শিক্ষা ও উন্নয়নের মূলধারা থেকে পিছিয়ে পড়েছে।

উক্ত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সিংওয়াইমং মারমা, সহ-সভাপতি, পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ, বান্দরবান জেলা কমিটি এবং সঞ্চালনা করেন জামাধন তঞ্চঙ্গ্যা, সাধারণ সম্পাদক, পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ, বান্দরবান জেলা কমিটি।

More From Author