বান্দরবানে চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লার বাসভবনের পাশে মগ পার্টি সন্ত্রাসীদের ঘোরাঘুরি, জনমনে আতঙ্ক

0
630
ছবি: বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের বাসভবন

হিল ভয়েস, ২৩ মার্চ ২০২২, বান্দরবান: সর্বশেষ বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও বান্দরবান জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ক্যশৈহ্লা মারমার বাসভবনের পাশেই সশস্ত্র মগ পার্টি সন্ত্রাসীদের ঘোরাঘুরি করতে দেখা গেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সূত্রটির মতে, চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা মারমার আশ্রয়-প্রশ্রয়েই তারা সেখানে এসেছে এবং অবস্থান করছে।

এদিকে বিশেষ করে গতকাল ২২ মার্চ বান্দরবানের জামছড়ি ইউনিয়নে এএলপি ও মগ পার্টির সন্ত্রাসীদের সাথে প্রতিপক্ষ দলের ভয়াবহ বন্দুকযুদ্ধের পরপরই খোদ বান্দরবান সদরে চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা মারমার বাড়ির পাশেই সশস্ত্র অবস্থায় চিহ্নিত মগ পার্টি সন্ত্রাসীদের দেখে স্থানীয় লোকজনের মধ্যে গভীর উদ্বেগ ও আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বন্দুকযুদ্ধের পরই সন্ধ্যা আনুমানিক ৬:৩০ টার দিকে চার চাকার সাদা রঙের মাহেন্দ্র গাড়িতে করে মগ পার্টির উক্ত সশস্ত্র দলটি বান্দরবান শহরে প্রবেশ করে। শহরে প্রবেশ করেই মগ পার্টির সন্ত্রাসীরা আশেপাশের এলাকায় জনসংহতি সমিতির নেতাকর্মীদের খোঁজ করে। এছাড়া তারা সন্ধ্যা ৭:০০ টার দিকে শহরের মগ বাজার এলাকায় এক বাঙালি মোবাইল দোকানদারের কাছে দশ হাজার টাকার খুচরা চায়। উক্ত দোকানদার অপারগতা প্রকাশ করলে পরে মগ পার্টির সদস্যরা নিজেদের মগ পার্টির লোক পরিচয় দিয়ে উক্ত দোকানদারকে সাঙ্গী নদীর তীরে নিয়ে যায়। এক পর্যায়ে মগ পার্টির সদস্যরা ওই বাঙালি দোকানদারকে মারধর করে এবং হুমকি দিয়ে ছেড়ে দেয়।

এর পরপরই মগ পার্টির সন্ত্রাসীরা একই গাড়িযোগে মেঘলা এলাকায় চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা মারমার বাসভবনের দিকে চলে যায়।
সূত্রটির মতে, স্থানীয়দের ধারণা, মগ পার্টির অন্যতম পৃষ্ঠপোষক চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা মারমাই মগ পার্টির সন্ত্রাসীদের সেখানে ডেকে এনেছেন এবং নিজের বাসভবনে অথবা তার আশেপাশে জায়গায় আশ্রয় দিয়েছেন। ধারণা করা হচ্ছে, অচিরেই মগ পার্টির সন্ত্রাসীদের সেখান থেকে রাজস্থলীর দিকে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে।

বিশেষ একটি গোপন সূত্রমতে, গতকাল সন্ধ্যায় চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা মারমার সরকারি বাসভবনের পেছনে লেকের পাশে মারমা ন্যাশনাল পার্টির (মগ পার্টি) অন্তত ১৪ জন সশস্ত্র সদস্যকে দেখা গেছে। সূত্রটির মতে, গতকাল সকালের দিকে জামছড়িতে বন্দুকযুদ্ধের পরপরই উক্ত সন্ত্রাসীরা চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা মারমার বাসভবনে আশ্রয় নিয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীর মতে, শহরের তালুকদার পাড়ার অনেক অধিবাসী ও লুম্বিনী ফ্যাক্টরিতে কর্মরত অনেক কর্মচারী যাতায়াতের সময় মগ পার্টির সন্ত্রাসীদের দেখে ভীতসন্ত্রত হয়ে পড়ে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা সন্ত্রাসীদের মধ্যে অন্তত ৩ সদস্যকে চিনতে পেরেছে বলে জানা গেছে। চিহ্নিত উক্ত তিন সন্ত্রাসী হল- (১) উসিংমং মারমা, ঠিকানা-বেতছড়া এলাকা, তারাছা ইউনিয়ন, রোয়াংছড়ি উপজেলা; (২) ক্যউচিং মারমা ওরফে মুছুই, ঠিকানা-ঐ; (৩) হ্লাসিংঅং রাখাইন, ঠিকানা-নতুন পাড়া, রোয়াংছড়ি সদর।

উল্লেখ্য, গতকাল ২২ মার্চ সকাল আনুমানিক ৯:০০ টার দিকে বান্দরবান সদর উপজেলার জামছড়ি ইউনিয়নে প্রতিপক্ষের সাথে এক বন্দুকযুদ্ধে সেনাবাহিনী ও স্থানীয় আওয়ামীলীগ মদদপুষ্ট আরাকান লিবারেশন পার্টি (এএলপি) ও মগ পার্টির ৩ সন্ত্রাসী ঘটনাস্থলে নিহত হন বলে খবর পাওয়া যায়।