হিল ভয়েস, ১৬ আগস্ট ২০২৪, রাঙ্গামাটি: সম্প্রতি দেশের অন্যান্য এলাকার ন্যায় রাঙ্গামাটি জেলার বাঘাইছড়িতেও জুম্ম ছাত্ররা দুই দিনব্যাপী গ্রাফীটি অংকন কর্মসূচি গ্রহণ করে। কিন্তু গ্রাফীটি অংকন শুরু করার পরপরই একদল সেটেলার যুবক সেখানে গ্রাফীটি অংকনে বাধা প্রদান করে, যা এলাকায় ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক জনগণের দৃষ্টি আকর্ষণ করে এবং জনগণকে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেছে। অনেকের কাছে প্রশ্ন ওঠে, সেখানে গ্রাফীটি অংকনে তারা বাধা দেওয়ার কে?
জানা গেছে, সেটেলারদের সাম্প্রদায়িক সংগঠন পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের সদস্য মোহাম্মদ খোরশেদ আলম এবং সেনা ও সেটেলারদের মদদপুষ্ট অনলাইন সংবাদ মাধ্যম ‘পার্বত্যনিউজ’ এর সাংবাদিক হিসেবে পরিচিত ও মারিশ্যা বাজারের দোকানদার মহিউদ্দিনের নেতৃত্বে ১০-১৫ জনের সেটেলার বাঙালিদের একটি দল এসে গ্রাফীটি অংকনের সময় জুম্ম ছাত্র-ছাত্রীদের বাধা প্রদান করে।
স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, গত ১৩ আগস্ট ২০২৪ থেকে ১৪ আগস্ট ২০২৪ পর্যন্ত সাধারণ শিক্ষার্থীরা বাঘাইছড়ি এলাকায় গ্রাফীটি অংকন কর্মসূচি গ্রহণ করে। প্রথমদিন বিকেলের দিকে কর্মসূচি মোতাবেক সাধারণ জুম্ম শিক্ষার্থীরা উপজেলা সদরের কাচালং ব্রিজের দেয়ালগুলোতে গ্রাফীটি অংকন শুরু করে।
কিছুক্ষণের মধ্যে বহিরাগত সেটেলার বাঙালিদের পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের সদস্য হিসেবে পরিচিত মোহাম্মদ খোরসেদ আলম এবং মারিশ্যা বাজারের দোকানদার ও পার্বত্য নিউজের সাংবাদিক মহিউদ্দিনের নেতৃত্বে ১০-১৫ জনের একটি দল সেখানে এসে গ্রাফীটি আঁকতে বাঁধা প্রদান করে। এসময় তারা সেনাবাহিনী এবং সেনা ও সেটেলার কর্তৃক অপহৃত তৎকালীন হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সাংগঠনিক সম্পাদক কল্পনার চাকমার ছবি অংকন করা যাবে না বলে উল্লে করে এবং করলে অসুবিধা হবে বলে হুমকি দেয়। এছাড়া উক্ত বাধা প্রদানকারী মোহাম্মদ খোরসেদ আলম বলতে থাকে যে, ‘কল্পনা চাকমা তার স্বামীর সাথে ভারতের অরুনাচলে বসবাস করছেন। সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করার জন্য এই ছবি আঁকা হচ্ছে।’
ঘটনার পর সেটেলারদের এই বক্তব্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পর অনেক নেটিজেন মোহাম্মদ খোরসেদ আলমকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নিয়ে গিয়ে কল্পনা চাকমার ব্যপারে জিজ্ঞাসাবাদ করার দাবি জানান।
পরবর্তীতে শিক্ষার্থীদের জোরালো প্রতিবাদ ও পাল্টা যুক্তিতে হেরে গিয়ে তারা সেখান থেকে চলে যেতে বাধ্য হয়।
জানা গেছে, শিক্ষার্থীরা ব্রিজের দেয়ালে কল্পনা চাকমার ছবি অংকন করলেও সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বা সাম্প্রদায়িকমূলক কোনো লেখা, শ্লোগান বা ছবি অংকন করেননি বলে জানা যায়।
আরও জানা গেছে, শিক্ষার্থীদের গ্রাফীটি অংকনে অন্যতম বাধা প্রদানকারী সেটেলার মোহাম্মদ খোরসেদ আলম পেশায় একজন রাজমিস্ট্রি। তার বাড়ি মারিশ্যার মুসলিমব্লক এলাকায়। তিনি এর আগে মোটরসাইকেলে স্থানীয় এক ব্যক্তিকে চাপা দিয়ে হত্যার অপরাধে অভিযুক্ত আসামী বলেও জানা গেছে।
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
            
                            
                            
                            
                                                    
                                                    
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
+ There are no comments
Add yours