বরকলে এম এন লারমার ৪২তম মৃত্যুবার্ষিকীতে স্মরণ সভা ও মোমবাতি প্রজ্জ্বলন অনুষ্ঠিত

হিল ভয়েস, ১০ নভেম্বর ২০২৫, বরকল: আজ সোমবার (১০ নভেম্বর) পাবর্ত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ বরকল থানা শাখার উদ্যোগে মহান নেতা মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার ৪২তম মৃত্যুবার্ষিকী ও স্মরণ সভার আয়োজন করা হয়।

উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পাবর্ত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির রাঙ্গামাটি জেলা কমিটির সদস্য বিধান চাকমা। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পাবর্ত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির রাঙ্গামাটি জেলা কমিটির সদস্য শ্যাম রতন চাকমা, কার্বারী এসোসিয়েশনের বরকল উপজেলার সভাপতি নন্দ বিকাশ চাকমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের বরকল থানা শাখার সদস্য বিশাখা চাকমা ও সাবেক ছাত্র নেতা লক্ষী মন চাকমা।

পাবর্ত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের বরকল থানা শাখার সাধারণ সম্পাদক নিশান তালুকদারের সঞ্চালনায় স্মরণ সভায় সভাপতিত্ব করেন পাবর্ত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের বরকল থানা শাখার সভাপতি ইলেন চাকমা। স্মরণ সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের বরকল থানা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক রিন্টু চাকমা ও শোক প্রস্তাব পাঠ করেন পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের বরকল থানা শাখার সহ-সাধারণ সম্পাদক জিতেশ চাকমা।

প্রধান অতিথি বিধান চাকমা বলেন, পাবর্ত্য চট্টগ্রামে রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা’র ভূমিকা অপরিসীম। রাজনৈতিক অধিকার ছাড়া পাবর্ত্য চট্টগ্রামে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আমাদের জুম্ম জনগণকে লড়াই সংগ্ৰাম করতে হবে। যারা প্রত্যেক্ষভাবে পার্টির সাথে জড়িত শুধু তারাই সংগ্ৰাম করতে পারে এমন কোনো কথা নেয়। পার্বত্য চট্টগ্রামে ভিন্ন ভাষাভাষী ১৪ টি জাতিসত্ত্বার উচিত এই আত্মনিয়ন্ত্রানিধার আদায়ের সংগ্ৰামে সামিল হওয়া।

বিশেষ অতিথি নন্দ বিকাশ চাকমা বলেন, মহান নেতা এম এন লারমার দেখানো পথ প্রতিটি জুম্ম জনগণের ধারণ করতে হবে। পাবর্ত্য চট্টগ্রামে ছাত্র ও যুব সমাজকে পাবর্ত্য চট্টগ্রামের ইতিহাস জেনে, আগামী দিনের সংগ্ৰামের পথচলায় সামিল হতে হবে।

বিশেষ অতিথি লক্ষী মন চাকমা বলেন, মহান নেতা এম এন লারমার আদর্শ, চিন্তা চেতনা প্রতিটি জুম্ম জনগণের ধারণ করা উচিত। এম এন লারমা দেখিয়ে গেছেন কিভাবে সংগ্ৰাম করতে হয়, কিভাবে অধিকার ছিনিয়ে আনতে হয়। কারোর বক্তব্য শুনে যতটুকু জানা সম্ভব তার চেয়ে বেশি সম্ভব বই পড়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম ইতিহাস পড়ে। তরুণ ছাত্র সমাজ যদি এগিয়ে না আসে, তাহলে অদূর ভবিষ্যতে টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়ে। পাবর্ত্য চট্টগ্রামের মানুষ যদি রাজনৈতিক সচেতন হতে না পারে তাহলে শাসকগোষ্ঠী পার্বত্য চট্টগ্রামকে শাসন-শোষন জারি রাখবে। তাই সকলকে অধিকার আদায়ে সোচ্চার হতে হবে।

বিশেষ অতিথি বিশাখা চাকমা বলেন, ১৯৮৩ সালের আজকের এই দিনে মহান নেতা মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা সহ আট সহযোদ্ধাকে বিভেদপন্থী চার কুচক্রী গিরি-প্রকাশ-দেবেন-পলাশ নৃশংসভাবে হত্যা করেন। তিনি ১৯৮৩ সালের এই দিনে মহান নেতা এম এন লারমাসহ যারা মৃত্যুবরণ করেন এবং অধিকার আদায়ের সংগ্রামে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের সকলকে বিনম্র শ্রদ্ধা জানান।

সকালে সভাপতির বক্তব্য’র মাধ্যমে স্মরণ সভা অনুষ্ঠানটি সমাপ্তি ঘোষণা করেন। স্মরণ সভার আগে, অস্থায়ী শহীদ বেদিতে পুষ্পামাল্য দিয়ে মহান নেতা এম এন লারমা ও সকল শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয় এবং দুই মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। বিকালে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন ও ফানুস উড়ানো হয়।

More From Author