বনযোগীছড়া জোন কম্যান্ডার কর্তৃক রাঙ্গামাটির জুম্ম ইউপি সদস্যকে হয়রানি ও নির্যাতন

0
828
ছবি: প্রতীকী

হিল ভয়েস, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২১, রাঙ্গামাটি: সম্প্রতি রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলাধীন জুরাছড়ি উপজেলায় অবস্থিত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বনযোগীছড়া সেনা জোনের ৭ বেঙ্গল জোন কম্যান্ডার লেঃ কর্নেল আকতার উজ্জামান ফয়সাল কর্তৃক রাঙ্গামাটির এক নির্বাচিত জুম্ম ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্যকে হয়রানি ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ভুক্তভোগী ইউপি সদস্যের নাম সঞ্চয় চাকমা (৫৫), পীং-গুলমুয়া চাকমা, গ্রাম-এগুজ্যাছড়ি, বালুখালি ইউনিয়ন, রাঙ্গামাটি সদর উপজেলা। তিনি বালুখালি ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নং ওয়ার্ডের একজন নির্বাচিত সদস্য।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বনযোগীছড়া সেনা জোনের জোন কম্যান্ডার লেঃ কর্নেল আকতার উজ্জামান ফয়সাল ইউপি সদস্য সঞ্চয় চাকমাকে খবর পাঠান যে, তিনি যেন গত ২৫ আগস্ট ২০২১ তারিখের মধ্যে তার সাথে জোনে গিয়ে দেখা করেন। জোন কম্যান্ডারের নির্দেশ অনুযায়ী, সঞ্চয় চাকমা তার দুই সঙ্গী আনন্দ চাকমা ও লক্ষীময় চাকমাকে সঙ্গে নিয়ে ঐ দিনই সকাল ৯:০০ টায় বাড়ি থেকে বনযোগীছড়ার উদ্দেশে ট্রলার বোট যোগে রওনা দেন। ট্রলার বোটে যার দূরত্ব প্রায় দুই ঘন্টার পথ।

সঞ্চয় চাকমা ও তার দুই সঙ্গী বেলা প্রায় ১১:৩০ টা-১২:০০ টার দিকে বনযোগীছড়া সেনা জোনে পৌঁছেন এবং জোন কম্যান্ডারের সাথে দেখা করার বিষয়ে জোনের অফিসে জানান। কিন্তু জোন অফিসে জোন কম্যান্ডারের জন্য অপেক্ষা করতে করতে সন্ধ্যা প্রায় ৬:৩০ টা বেজে যায়। তারপরও জোন কম্যান্ডারের সাথে দেখা করতে পারেননি। এরপর জোনের একজন সৈনিক এসে সঞ্চয় চাকমাকে জানায় যে, ‘জোন কম্যান্ডার দেখা করতে পারবেন না, পরবর্তীতে দেখা করার বিষয়টি জানানো হবে এবং এখন যেতে পারবেন।’

এরপর অভুক্ত সঞ্চয় চাকমা ও তার দুই সঙ্গী ক্লান্ত শরীর নিয়ে রাতের মধ্যে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন। প্রায় ঘন্টা খানেক আসার পর চিবেরেগা সেনা ক্যাম্প এর কাছে এসে পৌঁছলে আবার বনযোগীছড়া সেনা জোন থেকে সঞ্চয় চাকমাকে ফোন করা হয়। সেনা জোন থেকে ফোনে বলা হয়, জোন কম্যান্ডার দেখা করবেন।

নিরুপায় সঞ্চয় চাকমা ও তার দুই সঙ্গী আবার বনযোগীছড়া সেনা জোনের উদ্দেশে রওনা দেন। সেনা জোনে গিয়ে অপেক্ষা করতে করতে রাত ১০:০০ টায় সঞ্চয় চাকমা জোন কম্যান্ডার সাথে দেখা করার অনুমতি পান।

দেখা হওয়ার সাথে সাথে জোন কম্যান্ডার লেঃ কর্নেল আকতার উজ্জামান ফয়সাল ‘সাইমন, কার্জন, দুলাল ও মিন্টু চাকমা’রা কোথায় থাকে বলে জিজ্ঞাসা করতে থাকেন এবং অকথ্য ভাষায় সঞ্চয় চাকমাকে গালিগালাজ করেন। এক পর্যায়ে জোন কম্যান্ডার সঞ্চয় চাকমাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে ও বিভিন্ন হুমকি দিয়ে ছেড়ে দেন। এরপর সঞ্চয় চাকমা ও তার সঙ্গীরা ঐ রাতেই রাঙ্গামাটিতে ফিরে আসেন।

বর্তমানে ইউপি সদস্য সঞ্চয় চাকমা জোন কম্যান্ডারের হুমকিতে গভীর উদ্বেগ ও উৎকন্ঠার মধ্যে রয়েছেন বলে জানা গেছে।