বগুড়ায় মুসলিম বাঙালি কর্তৃক জোরপূর্বক আদিবাসীদের পুকুর বেদখল, মাছ লুট ও মারধরের অভিযোগ

হিল ভয়েস, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, বিশেষ প্রতিবেদক: বগুড়া জেলার শেরপুর উপজেলায় কদিমুকুন্দ মৌজায় গত ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তিন আদিবাসী মাহাতো পরিবারের মোট ৩৩ বিঘা পুকুর স্থানীয় একদল মুসলিম বাঙালি কর্তৃক জোর পূর্বক বেদখল এবং পুকুরের অর্ধ কোটি টাকার মাছ লুট ও মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

জানা যায়, উক্ত পুকুরটি তিন আদিবাসী পরিবার যথাক্রমে সুবাস চন্দ্র মাহাতো (৬৩), প্রভাষ চন্দ্র মাহাতো (৩৫) ও দেবদাস চন্দ্র মাহাতো সরকারের সাথে সুপ্রিমকোর্টে ১৫৫/৯৮ মামলায় সত্ত্বঘোষণা করলে তারা উক্ত পুকুরটি শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোগদখল করে আসছিলেন। যেটি বগুড়া জেলার শেরপুর থানাধীন কদিমুকুন্দ মৌজার জেএল নং-৯১, খতিয়ান নং-১৪৯, সাবেক দাগ নং-৫৮০, জমির পরিমাণ ১১ একর ১৬ শতকের কাতে ১১ একর ০৮ শতক এলাকায় হারদিঘী পুকুর নামে পরিচিত।

কিন্তু হঠাৎ পুকুরটি স্থানীয় কিছু মুসলিম বাঙালি অবৈধভাবে নিজেদের দাবি করলে জোরপূর্বক দখলের পাঁয়তারা চালায় এবং সহকারী জজ আদালতে একটি মামলা দায়ের করা হয়। যেটির মামলা নং-৫৪/০৪।
উক্ত মামলাটি শুনানী শেষে আদালত জমির কাগজপত্র পর্যালোচনা করে ভিকটিমদের পক্ষে রায় প্রদান করলে ঐ রায়ের বিরুদ্ধে আবারো আপীল মামলা দায়ের করা হয়। কিন্তু উক্ত আপীল মামলা সংক্রান্ত জমির কাগজপত্র ও সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে ভিকটিমদের পক্ষে আদালত রায় প্রদান করে।

এই রায়ের ভিত্তিতে তারা আবারো উক্ত পুকুরে মাছ চাষ করতে আসলে দীর্ঘদিন ধরে মুসলিম বাঙালিরা বিভিন্ন রকম ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদর্শন দিতে থাকে।

এমতাবস্থায় গত ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ বিকাল অনুমানিক ০৩:০০ ঘটিকার সময়ে ধারালো হাসুয়া, রাম দা, চাকু, লোহার রড, বাঁশের লাঠি, কাঠ ইত্যাদি নিয়ে এসে ২৫-৩০ জনের অধিক মুসলিম বাঙালি পুকুরে জাল নিয়ে মাছ ধরে নিয়ে যায় এবং পুকুরের পাহারাদার মোঃ আজিজার রহমান (৫৭), পিতা-মৃত মেহের আলী প্রামানিক, মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন (৩৫), পিতা-মৃত হাফিজার রহমান এবং সুশীল চন্দ্র মাহাতো (৫৬) সকলকে বেধরক মারধর করে আহত অবস্থায় ফেলে রেখে চলে যায়।

বিষয়টি নিয়ে শেরপুর থানায় একটি ফৌজদারী মামলা দায়ের হয়েছে বলে জানা যায়। যেটির মামলা নং-১৩।

পুকুর দখলের চেষ্টাকারী ও হামলাকারী মুসলিম বাঙালিদের পরিচয় নিম্নরূপ:

১। মোঃ রাজা ইসলাম (৬০), পিতা-মৃত আলম শেখ, সাং-ঘোলাগাড়ী কলোনী, ২। মোঃ লিটন মুন্সি (৪৮), পিতা-হেনা সরকার, সাং-খন্দকারটোলা, ৩। মোঃ দুলাল হোসেন (৩৫), পিতা-মৃত আব্দুল বাছেদ, ৪। মোঃ কোব্বাত আলী (২৯), পিতা-মৃত আব্দুল কুদ্দুস শেখ, ৫। মোঃ ইছা মন্ডল (২৫), ৬। মোঃ মুছা মন্ডল (২৫), উভয় পিতা-মোঃ মনির হোসেন মন্ডল, ৭। মোঃ রাজু (২৬), পিতা-আজিবুর রহমান কদম, ৮। মোঃ নাসির হোসেন (৩৫), পিতা-অজ্ঞাত, ৯। মোঃ সুমন (২৪), পিতা-আঃ হামিদ, ১০। মোঃ রাসেল (২২), পিতা-সোলায়মান, ১১। মোঃ আদম হোসেন (২৪), পিতা-জেল হোসেন, ১২। মোঃ রুবেল (২৪), পিতা-আঃ মালেক, ১৩। মোঃ সোহেল রানা (২৫), পিতা-আজিবর রহমান, ১৪। মোঃ জাবির হোসেন (৫৭), পিতা-মৃত পীর মোহাম্মদ, সাং-ঘোলাগাড়ী বিহারীপাড়া, ১৫ । মোঃ আরিফ হোসেন (৪৮), পিতা-মৃত হযরত মাষ্টার, সাং-খন্দকারটোলা, ১৬। মোঃ সবুজ হোসেন (২৪), পিতা- মজনু মহরী, সাং-কানাইকান্দর, ১৭। মোঃ সবুজ (২৪), পিতা-মৃত ইদ্রিস আলী, সাং-বাঘমারা, ১৮। মোঃ জেল হোসেন (৬০), পিতা-মৃত আব্দুল খালেক, সাং-বাঘমারা, ১৯। মোঃ আব্দুস সালাম (৬১), পিতা-মৃত আফছার আলী, সাং-বাঘমারা, ২০। শ্রী অমল (২৪), পিতা-শ্রী যতীন মাহাতো, সাং-বাঘমারা, ২১। মোঃ ঠান্ডু (৩৫), পিতা-শামছুল সরকার, সাং-বাঘমারা, ২২। মোঃ সুলতান মাহমুদ (৪৫), পিতা-মৃত কেরামত আলী, সাং-বাঘমারা, ২৩। মোঃ শাহাদত হোসেন (১৯), পিতা-মোঃ আবুল কালাম, সাং-খন্দকারটোলা, ২৪। মোঃ সবুজ মিয়া (৩৩), পিতা-মৃত জুরান আলী শেখ, সাং-কানাইকান্দর, ২৫। মোঃ রাতুল (২৬), পিতা-মৃত বাবলু, সাং-খন্দকারটোলা, ২৬। মোঃ মারুফ সরকার (২৭), পিতা-উজ্জল সরকার, সাং-খন্দকারটোলা, ২৭। মোঃ শফি মির্জা (৬০), পিতা-অজ্ঞাত, সাং-খন্দকারটোলা, ২৮। মোঃ তারেক (২৮), পিতা-হযরত মাষ্টার, সাং-খন্দকারটোলা, ২৯। মোঃ মাসুদ (২৬), পিতা-অজ্ঞাত, সাং-খন্দকারটোলা, ৩০। মোঃ সাব্বির (২৮), পিতা-অজ্ঞাত, সাং-খন্দকারটোলা, ৩১। মোঃ রকি (২৬), পিতা-অজ্ঞাত, সাং-শেরুয়া বটতলা, ৩২। মোঃ মজিদ (২৭), পিতা-অজ্ঞাত, সাং-শেরুয়া বটতলা, ৩৩। মোঃ শান্ত (২৬), পিতা-অজ্ঞাত, সাং-শেরুয়া বটতলা।

More From Author

+ There are no comments

Add yours