পার্বত্য চট্টগ্রামে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় সিএইচটি কমিশনের গভীর উদ্বেগ প্রকাশ

0
411

হিল ভয়েস, ১২ এপ্রিল ২০২৩, আন্তর্জাতিক ডেস্ক: এক বিবৃতিতে, আন্তর্জাতিক পার্বত্য চট্টগ্রাম কমিশন আটজন আদিবাসী বম ব্যক্তির মৃত্যুতে মর্মাহত বলে উল্লেখ করেছে এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে অব্যাহত মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

বিবৃতিতে আটজন বম আদিবাসী হত্যার বিচার বিভাগীয় তদন্ত, অপরাধীদের চিহ্নিত করা, ন্যায়বিচার ও পার্বত্য চট্টগ্রামের বেসামরিকীকরণ নিশ্চিত করা, ১৯৯৭ সালের পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি পূর্ণাঙ্গভাবে বাস্তবায়নে পদক্ষেপ গ্রহণ এবং সকল প্রকার চুক্তি বিরোধী নির্দেশনা ও কার্যক্রম প্রতিরোধের দাবি জানানো হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘৬ এপ্রিল বান্দরবানের রোয়াংছড়ি উপজেলায় কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ আট আদিবাসী বম ব্যক্তির মৃত্যুর ঘটনায় আন্তর্জাতিক পার্বত্য চট্টগ্রাম কমিশন (সিএইচটিসি) গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে, বিভিন্ন গণমাধ্যম রিপোর্ট করা হয়েছে যে, নিহত ব্যক্তিরা সকলেই আদিবাসী বম খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের এবং কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সদস্য। কেএনএফ এবং ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) এর মধ্যে বন্দুকযুদ্ধ শুরু হলে তারা মারা যায় বলে অভিযোগ করা হয়েছে। নিউএজবিডি আরও উল্লেখ করেছে যে, কেএনএফ নিহতদের তাদের সদস্য বলে অস্বীকার করেছে এবং তারা দাবি করেছে যে, নিহতরা নিরীহ গ্রামবাসী।

আরো পড়ুন

রোয়াংছড়িতে সেনা-মদদপুষ্ট সশস্ত্র গোষ্ঠী কর্তৃক ৮ জনকে গুলি করে নৃশংসভাবে হত্যা

‘এটি পার্বত্য চট্টগ্রামের ক্ষুদ্রতম আদিবাসী গোষ্ঠীগুলির মধ্যে একটি বম সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে একটি ইচ্ছাকৃত এবং উদ্দেশ্যমূলক গণহত্যা। পার্বত্য চট্টগ্রাম কমিশন ঘটনার সঠিক পরিস্থিতির অবিলম্বে এবং নিরপেক্ষ বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করে।’

এতে বলা হয়েছে, ‘পার্বত্য চট্টগ্রামে এই সব অস্থিরতা এবং ক্রমাগত মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় পার্বত্য চট্টগ্রাম কমিশন খুবই উদ্বিগ্ন। আমরা বিশ্বাস করি যে, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি স্বাক্ষরের পর সিকি শতাব্দী পেরিয়ে গেলেও তা বাস্তবায়ন না হওয়ার ফলে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রামে দীর্ঘস্থায়ী শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে আমরা বাংলাদেশ সরকারের কাছে নিম্নলিখিত সুপারিশ করছি:

● আট বম আদিবাসীদের হত্যার বিচার বিভাগীয় তদন্ত শুরু করা, অপরাধীদের চিহ্নিত করা এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা।

● স্থানীয় বম আদিবাসী সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং গত অক্টোবর থেকে ভারতে পালিয়ে আসা কয়েকশ বম উদ্বাস্তুকে ফিরিয়ে আনার জন্য অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়া এবং অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হওয়া লোকদের জরুরি সহায়তা প্রদান করা।

● আদিবাসী অধিকার কর্মীদের অপরাধীকরণ বন্ধ করতে, তাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা সমস্ত বানোয়াট আদালতের মামলা প্রত্যাহার করা এবং তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আনা।

● পার্বত্য চট্টগ্রামে অব্যাহত কথিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে নিরপেক্ষ ও দ্রুত তদন্ত পরিচালনা করা এবং ক্ষতিগ্রস্তদের ন্যায়বিচার ও দায়ীদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা।

● পার্বত্য চট্টগ্রামকে বেসামরিকীকরণ করা এবং ১৯৯৭ সালের পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি সম্পূর্ণরূপে বাস্তবায়নের জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা এবং সকল প্রকার চুক্তি বিরোধী নির্দেশনা ও কার্যক্রম প্রতিরোধ করা।

আরো পড়ুন

বান্দরবানে ৮ হত্যাকান্ডের পর জনশূন্য বম ও খিয়াং পাড়া

বান্দরবানে নৃশংস ৮ হত্যাকান্ডে ঐক্য পরিষদের বিচারবিভাগীয় তদন্তের দাবি

নাইক্ষ্যংছড়িতে সীগাল হোটেল কর্তৃপক্ষ কর্তৃক স্কুল স্থাপনের নামে জুম্মদের ভূমি দখলের প্রক্রিয়া বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি