হিল ভয়েস, ১৯ জানুয়ারি ২০২২, বান্দরবান: বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নে সক্রিয় রোহিঙ্গা মুসলিম জঙ্গী সশস্ত্র গ্রুপ, আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মী (আরসা) ও রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন (আরএসও) কর্তৃক ঘুমঘুম ইউনিয়নের বিভিন্ন জায়গায় স্থানীয় জুম্ম অধিবাসীদের উপর নানা ধরনের হয়রানি ও নির্যাতন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
স্থানীয় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশে (বিজিবি) ও নিরাপত্তা বাহিনীর আশ্রয়-প্রশ্রয়ে বাংলাদেশ-মিয়ানমার আন্তর্জাতিক সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করে রোহিঙ্গা মুসলিম জঙ্গী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো এসব অপতৎপরতা চালাচ্ছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায় যে, ঘুমধুম ইউনিয়ন ও রেজু মৌজার অধীন জামিরতলী খালে অবস্থানকারী রোহিঙ্গা আরসা/আরএসও সশস্ত্র গোষ্ঠীর নানা নিপীড়ন-নির্যাতনের কারণে স্থানীয় জুম্ম নারী ও পুরুষরা চলাফেরা করতে ভয় পাচ্ছে।
২০২১ সালে ১৫ নভেম্বর সকালে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জামিরতলী পাড়ার দুই জুম্ম নারী হিল ভয়েসকে বলেন যে, সেদিন সকালে বরইতলী বাজারে আসার সময় জামিরতলী খালে পৌঁছার মাত্রই কোন অজুহাত ছাড়াই আরসা/আরএসও সশস্ত্র জঙ্গীরা তাদের সমস্ত জিনিসপত্র তল্লাশি করেছিল।
এর পূর্ব থেকে দীর্ঘদিন ধরে আরসা/আরএসও সদস্যরা এভাবে বাজারে আসা-যাওয়া করার সময় জুম্ম নারী-পুরুষদেরকে সমস্ত জিনিসপত্র তল্লাশি করে আসছে বলে তারা অভিযোগ করে।
এভাবে তল্লাসীর নামে হয়রানির ফলে স্থানীয় জুম্ম অধিবাসীদের আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। ভয়ে তারা কোন কিছু বলতেও সাহস করছে না।
অন্যদিকে স্থানীয় আইন-শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা বাহিনী দেখেও না দেখার ভান করে রয়েছে বলে তারা অভিযোগ করেন।
জামিরতলী খালে নুরু বাড়ি, কবিরা বাড়ি ও থোয়াইহ্লাচিং তঞ্চঙ্গ্যার খালি বাড়িতে আরসা/আরএসও জঙ্গীরা অবস্থান করেছিল।
উল্লেখ্য যে, ২০১৬ সালের ২৪ নভেম্বর নাইক্ষ্যংছড়ির দোছড়ি ইউনিয়নের কামিছড়া মাসিবা পাড়া থেকে মংহ্লা চিং মারমা (৪৫), থুইহ্লা মং মারমা (৩২) ও ক্যাচিং থোয়াই মারমা (২২) নামে তিনজন মারমা গ্রামবাসীকে রোহিঙ্গা সশস্ত্র গোষ্ঠী কর্তৃক অপহরণের পর হত্যা করা হয় বলে জানা যায়।
জানা যায় যে, ঘটনার শিকার তিনজন সেদিন পাহাড়ি ছড়ায় মাছ ধরতে গেলে আর ফিরে আসেনি। উক্ত এলাকাটি রোহিঙ্গা সশস্ত্র গ্রুপদের অবস্থান রয়েছে। উক্ত অপহৃতদের উদ্ধারে বিজিবি ও পুলিশ বাহিনীসহ স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের নিকট দাবি জানিয়ে তারা কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি বলে অভিযোগ রয়েছে।
এভাবে রোহিঙ্গা জঙ্গী সশস্ত্র সংগঠনগুলো এযাবৎ ৮/১০ স্থানীয় জুমচাষী ও আদিবাসী জুম্ম গ্রামবাসীদের অপহরণ করে হত্যা করেছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছে।