হিল ভয়েস, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২২, ঢাকা: সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায় ধুমঘাটে নরেন্দ্রনাথ মুন্ডা হত্যার ঘটনায় ন্যায়বিচার দাবি করেছে মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)। গত ১৯ আগস্ট মুন্ডা জাতিগোষ্ঠীর এই ব্যক্তি দুষ্কৃতকারীদের হামলায় আহত হন। পরদিন তিনি মারা যান।
এ ঘটনার পর গত শুক্রবার আসকের নির্বাহী পরিচালক নূর খানের নেতৃত্বে একটি দল ধুমঘাট মুন্ডাপাড়া পরিদর্শনে যায়। আসক গতকাল সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) গণমাধ্যমে দেওয়া বিজ্ঞপ্তিতে সেই পরিদর্শনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে।
পরিদর্শনের বর্ণনা দিয়ে আসকের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ধুমঘাট মুন্ডাপল্লিতে ২২টি মুন্ডা পরিবার বসবাস করে। ঘটনার দিন শুক্রবার সকালে রাশিদুল ও এবাদুলের নেতৃত্বে দুই শ’ থেকে আড়াই শ’ সন্ত্রাসী ধুমঘাট মুন্ডাপল্লি ঘিরে ফেলেন। এ সময় হামলার সঙ্গে জড়িত সন্ত্রাসীরা প্রতিটি পরিবারকে অস্ত্রের মুখে বসতঘরে অবরুদ্ধ করে রেখে তাদের ভোগদখলে থাকা আট বিঘা জমিতে কলের লাঙল নামিয়ে চাষ শুরু করেন এবং বেড়ে ওঠা ধানের চারা সম্পূর্ণ নষ্ট করে দেন।
এ সময় চাষের জমিতে কাজ করা নরেন্দ্রনাথ মুন্ডা এবং তাঁর তিন পুত্রবধূ সন্ত্রাসীদের বাধা দিতে গেলে জমির মধ্যেই পিটিয়ে ও কুপিয়ে তাঁদের গুরুতর আহত করা হয়। আহত অবস্থায় তাঁদের ফেলে রেখেই জমিতে চাষ সম্পন্ন করেন সন্ত্রাসীরা। পরে ৯৯৯–এ ফোন দিয়ে পুলিশকে জানানো হয়। তবে পুলিশ আসার আগেই ঘটনাস্থল ছেড়ে চলে যান হামলার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা।
আদিবাসী মুন্ডারা জানান, এর আগেও বিভিন্ন সময় ফসল তোলার সময় হলে সন্ত্রাসীরা এসে ফসল কেটে নিয়ে যেতেন। এবারও ৪-৫ দিন আগে থেকেই জানা যাচ্ছিল, তাঁরা জোর করে হলেও জমিতে চাষ দেবেন। গ্রামবাসীর মধ্যে আতঙ্ক ছিল এবং এখনো আতঙ্ক রয়েছে। হামলাকারীরা অত্যন্ত প্রভাবশালী ও ক্ষমতাবান বলে স্থানীয়ভাবে পরিচিত।
আসক জানায়, এ ঘটনায় ফণীন্দ্র মুন্ডা বাদী হয়ে ৩০ জন এজাহারনামীয় ও ১৬০ থেকে ১৭০ জন অজ্ঞাতনামা আসামি করে শ্যামনগর থানায় মামলা করেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আদিবাসী মুন্ডাদের ওপর হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের মধ্যে নেতৃত্ব দেওয়া রাশিদুল ও এবাদুলকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। ঘটনার পর থেকে এ পর্যন্ত এজাহারনামীয় চারজনসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আসকের বিজ্ঞপ্তিতে ছয় দফা দাবি তুলে ধরা হয়। সেগুলো হলো, নরেন্দ্রনাথ মুন্ডা হত্যার ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে আসামিদের দ্রুততার সঙ্গে গ্রেপ্তার, মুন্ডা নারী নির্যাতনকারীদের বিচার, জমি জবরদখলকারীদের বিচার, নষ্ট হওয়া আট বিঘা জমির ধানের ন্যায্য ক্ষতিপূরণ, ধুমঘাট গ্রামে পুলিশ ক্যাম্প স্থাপনসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ ও ভূমিদস্যুদের দৌরাত্ম্য বন্ধে জেলা প্রশাসনের যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ।
 
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
             
             
                             
                             
                             
                                                     
                                                     
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                        