দেশের আদিবাসীদের অধিকারের কথা সংবাদমাধ্যমে নিরপেক্ষভাবে তুলে ধরার দাবি

হিল ভয়েস, ১৭ আগস্ট ২০২৫, ঢাকা: আজ ১৭ আগস্ট ২০২৫ বাংলাদেশের আদিবাসীদের জাতীয় পর্যায়ের গণমাধ্যম আইপিনিউজ বিডি’র উদ্যোগে ঢাকার জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া মিলনায়তনে বাংলাদেশের আদিবাসীদের সামগ্রিক মানবাধিকার পরিস্থিতি ও গণমাধ্যমের ভূমিকা শীর্ষক এক আলোচনা সভা আয়োজন করা হয়।

উক্ত আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলনের যুগ্ম-সমন্বয়কারী ও নাগরিক উদ্যোগের প্রধান নির্বাহী জাকির হোসেন, দৈনিক সমকালের সহকারী সম্পাদক সাইফুর রহমান তপন, উন্নয়ন সংস্থা অবলম্বন এর নির্বাহী পরিচালক প্রবীর চক্রবর্তী, জয়েনশাহী আদিবাসী উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি ইউজিন নকরেক, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের শিক্ষা ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক উজ্জ্বল আজিম, সাহেবগঞ্জ-বাগদা ফার্ম ভূমি রক্ষা আন্দোলনের সভাপতি ড: ফিলিমন বাস্কে, বাংলাদেশ আদিবাসী নারী নেটওয়ার্কের সহ-সাধারণ সম্পাদক হেলেনা তালাং, বাংলাদেশ আদিবাসী যুব ফোরামের সহ-সভাপতি টনি ম্যাথিউ চিরানসহ বিভিন্ন প্রগতিশীল ছাত্র ও যুব সংগঠনের অর্ধশতাধিক নেতৃবৃন্দ ।

আলোচনা সভার শুরুতে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন আইপিনিউজের যুগ্ম-সম্পাদক অমর শান্তি চাকমা।

তিনি বলেন, দেশের ৫৪ টির অধিক আদিবাসী জাতিগোষ্ঠী তাদের স্বতন্ত্র রীতিনীতি, ঐতিহ্য ও প্রথাগত আচার-বিশ্বাস নিয়ে সুপ্রাচীনকাল ধরেই এ অঞ্চলে বসবাস করে আসছে। এদেশের প্রতিটি গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়ের সাথে জড়িয়ে রয়েছে এ সমস্ত আদিবাসী জনগোষ্ঠীর নাম। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলেও সত্য, ব্রিটিশ আমল, পাকিস্তান আমল, এমনকি স্বাধীন বাংলাদেশেও তারা রাষ্ট্র কর্তৃক সর্বদাই উপেক্ষিত রয়ে গেছে। যে বহুত্ববাদের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে আদিবাসী জনগোষ্ঠীরা মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলো তেমনি জুলাই অভ্যূত্থানেও সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছিলো। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী আদিবাসী জনগোষ্ঠীদের যেভাবে অস্বীকার করা হয়েছে ঠিক তেমনিভাবে জুলাই অভ্যূত্থানের পরও তাদের অবদানকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। সংবিধানের মূলনীতিতে “বহুত্ববাদ”- এর অন্তর্ভুক্তির বিপক্ষে ভোট দিয়েছে বর্তমানে দেশের প্রধান রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল, জামায়াতে ইসলাম এবং আশ্চর্যজনকভাবে যে তরুণদের নেতৃত্বে জুলাই অভ্যুত্থান ঘটেছে সেই বিভিন্ন মতের তরুণদের নিয়ে গড়া রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের আলোচনা সভাগুলোতেও আদিবাসীদের প্রতিনিধিত্বকারী রাজনৈতিক সংগঠনগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।

তিনি আরো বলেন, দেশের আদিবাসীদের উপর সংঘটিত এ সমস্ত ঘটনাগুলোর প্রচার ও প্রকাশে মূলধারার গণমাধ্যমগুলোকে প্রায়শই প্রশ্নবিদ্ধ ভূমিকা পালন করতে দেখা যায়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে সংবাদগুলো প্রকাশ করা হলেও তা বস্তুনিষ্ঠভাবে তুলে না ধরে প্রকৃত ঘটনাগুলোকে বিকৃতভাবে উপস্থাপনের চেষ্টা করা হয়। তিনি নৈতিকতার প্রশ্নে আপোষ না করে দেশের প্রান্তিক আদিবাসী জনগোষ্ঠীর উপর চলমান মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলোকে বস্তুনিষ্ঠ ও নিরপেক্ষ দৃষ্টিকোণ থেকে প্রচারের জন্য দেশের মূল ধারার সংবাদমাধ্যমগুলোকে আহ্বান জানান এবং ৬ দফা দাবিনামা উত্থাপন করেন:

১) বাংলাদেশে আদিবাসীদের আত্মপরিচয় এবং আদিবাসী গণমাধ্যম এর স্বীকৃতি নিশ্চিত করা,
২) আদিবাসীদের উপর সংঘটিত ঘটনাগুলো সংবেদনশীল, নিরপেক্ষ ও বস্তুনিষ্ঠভাবে গণমাধ্যমে প্রচার ও প্রকাশ নিশ্চিত করা,
৩) গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সুপারিশকৃত ২১.১৮ এর সুপারিশমালা বাস্তবায়ন করা,
৪) গণমাধ্যমের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে আদিবাসীদের অর্থপূর্ণ অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা,
৫) পার্বত্য এলাকার অধিবাসীদের মানবাধিকার সুরক্ষায় অবিলম্বে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি যথাযথ ও পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন করা এবং
৬) সমতল অঞ্চলের আদিবাসীদের মানবাধিকার সুরক্ষার জন্য পৃথক মন্ত্রণালয় ও ভূমি কমিশন গঠন করা।

সঞ্জীব দ্রং বলেন, আদিবাসীদের প্রতি রাষ্ট্রের এবং বৃহৎ জনগোষ্ঠীর দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনের কাজে মিডিয়া বিরাট ভুমিকা রাখতে পারে। জাতিসংঘে বলা হয়েছে, আদিবাসীরা চাইলে গণমাধ্যমে নিজেদের ভাষায় সংবাদ প্রকাশ করার অধিকার রাখে। তিনি নিরীহ বম জনগোষ্ঠীর উপর মিথ্যা মামলা দিয়ে যে মানবাধিকার লঙ্গন করা হচ্ছে, সেসব তথ্য নিরপেক্ষভাবে গণমাধ্যমগুলোকে তুলে ধরতে আহ্বান জানান।

তিনি আরো বলেন, বিগত সরকারগুলো ক্ষমতায় আসার আগে আদিবাসীদের আদিবাসী হিসেবে সম্বোধন করতো কিন্তু ক্ষমতায় আসার পরে তা আর থাকে না। তারা এদেশের বহুত্ববাদ শব্দটিকে স্বীকার করে না। একটা সময় সংবাদ মাধ্যমগুলোতে আদিবাসীদের নিয়ে আলোচনা হলেও কিন্তু কয়েক বছর ধরে সেরকম আলোচনা বের হয় না। এছাড়া বাংলাদেশে যে-সকল প্রান্তিক জনগোষ্ঠী এবং আদিবাসী জনগোষ্ঠী রয়েছে তাদের ভাষা, সংস্কৃতি, সামাজিক রীতিনীতি রক্ষার ক্ষেত্রে সেগুলো মিডিয়ায় প্রচার করে সঠিক তথ্যগুলো তুলে ধরতে মিডিয়া গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখতে পারবে বলে তিনি মনে করেন।

টনি ম্যাথিউ চিরান বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানের পরে আমরা মনে করেছিলাম এদেশের নিপীড়িত শোষিত আদিবাসী জনগোষ্ঠীরা তাদের অধিকার ফিরে পাবে। গণমাধ্যম আদিবাসীদের সম্পর্কে সঠিক এবং বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশ ও প্রচার করবে। কিন্তু আদিবাসীদের সেই আশা ভঙ্গ হতে বেশী সময় লাগে নি । জুলাই অভ্যুত্থানের এক বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পরেও মূল ধারার গণমাধ্যমগুলোতে আদিবাসীদের খবরগুলো গুরুত্ব সহকারে উঠে আসছে না। একটি গোষ্ঠী সবসময় আদিবাসীদের উপর সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলোকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে।

তিনি আরো বলেন, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা না হলে দেশের উন্নয়ন হবে না। মানবিক মর্যাদা ও ন্যায্যতার ভিত্তিতে বাংলাদেশ গঠন করতে হলে গণমাধ্যম ও রাষ্ট্রের সাথে প্রান্তিক মানুষের যোগসূত্র স্থাপন করতে হবে।

হেলেনা তালাং বলেন, যেখানেই বন সেখানেই আদিবাসী। বনের সাথে আদিবাসীদের রয়েছে আত্মার সম্পর্ক। এ বনভূমিগুলোকে কেড়ে নেওয়ার জন্য বনবিভাগসহ বিভিন্ন গোষ্ঠী সর্বদা লেগে রয়েছে। মিডিয়া এ বিষয়গুলোকে তুলে নিয়ে আসতে পারে। মূল স্রোতধারার মিডিয়া যদি আদিবাসীদের সম্পর্কে না লিখে তাহলে আদিবাসীরা হারিয়ে যাবে। শুধু কালচারাল বিষয়গুলো বেশী ফোকাস না করে আদিবাসীদের দুঃখ দুর্দশাগুলোকেও মিডিয়ায় নিয়ে আসা জরুরী। দেশের জীববৈচিত্র্য, বনভূমিগুলো রক্ষা করার জন্য হলেও আদিবাসীদের অধিকার নিয়ে লিখুন । কেননা আদিবাসীরাই দেশের বেশীরভাগ বনভূমি ও জীববৈচিত্র্যকে রক্ষা করে চলেছে।

প্রবীর চক্রবর্তী বলেন, পাহাড়ের আদিবাসীদের চলাফেরার স্বাধীনতা নেই। দৈনন্দিন কর্মকান্ড পরিচালনা করার জন্য বিভিন্ন ধরনের হস্তক্ষেপ কখনো কাম্য নয়। সমতলের আদিবাসীরাও ভূমি থেকে উচ্ছেদ হতে হতে প্রান্তিকতার শেষ সীমানায় চলে গিয়েছে। তাদের অধিকাংশের এখন ভূমির মালিকানা নেই। এ বিষয়গুলো মিডিয়াতে যেভাবে আসা জরুরী ছিলো সেভাবে আসছে না। যার কারণে তারা ভূমির অধিকার পাচ্ছে না। ভূয়া দলিল বানিয়ে ভূমিদস্যুরা আদিবাসীদের ভূমি কেড়ে নিচ্ছে প্রতিনিয়ত।

তিনি বলেন, বাসযোগ্য পৃথিবী গড়ার জন্য আদিবাসীদের ভূমি অধিকার, বনের অধিকার সর্বোপরি মৌলিক মানবাধিকারগুলোর বাস্তবায়ন করতে হবে।

ইউজিন নকরেক বলেন, মিডিয়ার সহযোগিতার কারণে মধুপুরের আন্দোলন বেগবান হয়েছে এবং ভূমি বেদখল কিছুটা হলেও ঠেকানো গিয়েছে। আদিবাসী আন্দোলনকারীরা কিছুটা হলেও স্বস্তি পেয়েছে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে গণমাধ্যম আদিবাসীদের কথাগুলো আর প্রকাশ ও প্রচার করতে চায় না। তিনি আদিবাসীদের দুঃখ দুর্দশাগুলো তুলে নিয়ে আসার জন্য মিডিয়ার প্রতি আহ্বান জানান ।

ফিলিমন বাস্কে বলেন, ২০১৫ সাল হতে গাইবান্ধার সাহেবগঞ্জ-বাগদা ফার্মের আদিবাসী ও প্রান্তিক বাঙালিদের তিন ফসলি জমি দখল করার জন্য স্বার্থান্বেষী মহল বিভিন্ন ধরনের পাঁয়তারা করে চলছে। যে চুক্তি অনুযায়ী জমিগুলো লিজ নেওয়া হয়েছিলো সেগুলো চুক্তি অনুযায়ী ফেরত দিতে হবে। তিনি এনসিপির নেতা সার্জিস আলমের বক্তব্য “ইপিজেড নির্মাণের বিরুদ্ধে যারা দাঁড়াবে তাদেরকে দেখে নেওয়া হবে”-এর তীব্র সমালোচনা করে বলেন, নতুন রাজনৈতিক দলের নেতার এ ধরনের বক্তব্য অত্যন্ত হতাশাজনক। আদিবাসীরা তার এ বক্তব্যে শঙ্কিত, বিব্রত ও অত্যন্ত ক্ষুব্ধ। তিনি গাইবান্ধার সাহেবগঞ্জ-বাগদা ফার্মের আদিবাসী ও প্রান্তিক বাঙালিদের তিন ফসলি জমি অবিলম্বে ভূমির প্রকৃত মালিকদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার জোর দাবি জানান ।

সাইফুর রহমান তপন বলেন, মিডিয়ার একটি নিজস্ব রাজনীতি থাকে । তথাকথিত ইডিটরিয়াল পলিসির নামে সংবাদগুলোর নানান সেন্সরশিপ হয়। কোন খবরগুলো প্রচার করা হবে, প্রকাশ করা হবে তা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। যার ফলে সকল সংবাদগুলো প্রকাশ করা যায় না। সরকার, মালিক, ম্যানেজমেন্ট, ইডিটরিয়াল পলিসি প্রত্যেক ধাপ পেরিয়ে একটি লেখা প্রকাশ ও প্রচার করতে হয়। শুধু তাই নয়, কিছু কিছু সংবাদ প্রকাশ ও প্রচারে রাষ্ট্র কর্তৃক বিভিন্ন ধরনের বাধাও প্রদান করা হয়। পার্বত্য চট্টগ্রামের মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলোতে নিরাপত্তা বাহিনী, রাষ্ট্রীয় বাহিনী প্রভৃতি শব্দগুলো এখনো আমরা লিখতে পারি না। জাতীয় দৈনিকগুলোর রিপোর্টাররাও বিভিন্ন গোষ্ঠীর সাথে জড়িত থাকে যার ফলে অনেক খবর প্রচারিত হয় না।

তিনি আরো বলেন, রাষ্ট্রের পলিসিগুলো ঠিক করে দেয় সামরিক ও বেসামরিক আমলারা। রাজনীতিবিদরা এক্ষেত্রে মূল ভূমিকা পালন করতে পারে না। যার ফলে রাজনৈতিক দলগুলোর অনেক প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয় না। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র যদি আমরা গড়ে তুলতে না পারি তবে আদিবাসীদের উপর এ ধরনের নিপীড়ন নির্যাতন চলতে থাকবে। রাষ্ট্রের জনপ্রতিনিধিরা যদি পলিসিগুলো নির্ধারণ করতে পারে তাহলেই কেবল প্রান্তিক মানুষের মানবাধিকার নিশ্চিত হবে।

উজ্জ্বল আজিম বলেন, দেশে আদিবাসীরা এখনো দেশহীন মানুষ হিসেবে বেঁচে রয়েছে। পাহাড়ে দীর্ঘ দুই দশক লড়াই সংগ্রাম করে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি করা হয়েছে যেটির মৌলিক ধারাগুলোও এখনো বাস্তবায়িত করা হয়নি। এ চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন খুব বেশী জরুরী। একই সাথে দেশের ৪০ লক্ষাধিক আদিবাসীর দুই- তৃতীয়াংশ সমতলের বিভিন্ন অঞ্চলে বসবাস করে। তাদের ভূমি সম্পর্কিত কোন ধরনের আইন, লিগ্যাল ডকুমেন্টস নেই বললেই চলে। পাহাড়-সমতলের আদিবাসীদের মূল সমস্যা হলো ভূমি সমস্যা।

তিনি বলেন, পাহাড়ে ভূমি বিরোধ নিস্পত্তি কমিশনকে ক্ষমতায়ন এবং সমতলের আদিবাসীদের জন্য পৃথক ভূমি কমিশন গঠন করার মাধ্যমেই আদিবাসীদের মানবাধিকারের স্বীকৃতি পাবে। এক্ষেত্রে মিডিয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। ইলেকট্রনিক্স এবং প্রিন্ট মিডিয়াগুলো যেভাবে আগে আদিবাসীদের সম্পর্কে প্রচার করতো সেটি সাম্প্রতিক হচ্ছে না। বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা আগে যেভাবে আদিবাসী শব্দটি লিখতো এখন আর সেভাবে লেখে না। তিনি আদিবাসীদের মানবিক মর্যাদার স্বীকৃতি ও তাদের অধিকার আদায়ের আন্দোলন সংগ্রামে মিডিয়া সর্বদা পাশে থাকবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।

জাকির হোসেন বলেন, আদিবাসীদের সম্পর্কে মিডিয়ায় অপতথ্য প্রচার করা হচ্ছে প্রতিনিয়ত। যার ফলে সাধারণ মানুষদের কাছে তাদের সম্পর্কে মিথ্যে ধারণা তৈরী হচ্ছে। তিনি বলেন, মানবাধিকার এবং সামাজিক আন্দোলনের মানুষদের অংশগ্রহণ করানো গেলে মিডিয়া বাধ্য হবে খবরগুলো প্রচার করতে। জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোকে মিডিয়া কখনো পরিহার করতে পারে না। তবে যেকোনো ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘনের খবরগুলো প্রচারের পর সেগুলোর নিয়মিত ফলো-আপ করতে হবে। এজন্য সিভিল সোসাইটি এবং মানবাধিকার কর্মীদের মধ্যে সম্পর্ক বৃদ্ধি করা খুবই জরুরী। এক্ষেত্রে মিডিয়া গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। ভয়েস রেইস করতে হবে।

আইপিনিউজ বিডি’র সম্পাদক আন্তনী রেমা’র সভাপতিত্বে উক্ত অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন আইপিনিউজ বিডি’র নির্বাহী সম্পাদক সতেজ চাকমা।

More From Author

+ There are no comments

Add yours