হিল ভয়েস, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, বিশেষ প্রতিবেদক: গত ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তিন সেটেলার বাঙালি কর্তৃক এক আদিবাসী কিশোরী ধর্ষণের শিকার হন। এতে প্রশাসন সকল অপরাধীদের গ্রেফতার এবং বিচারের আওতায় আনতে না পারায় আদিবাসী শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সমাবেশ এবং পরবর্তীতে শান্তিপূর্ণ অবরোধ কর্মসূচি পালন করার সময় গত ২৭ ও ২৮ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়ি জেলার সদর ও গুইমারা উপজেলায় আদিবাসী জুম্মদের ওপর সেনাবাহিনী গুলি ও সেটেলার বাঙালিরা সাম্প্রদায়িক হামলা চালায়।
উক্ত হামলার প্রতিবাদে এবং রাষ্ট্রের নীরব ভূমিকার বিরুদ্ধে শিল্পীরা মিলে ঢাকার শাহবাগে গড়ে তুলেছেন ‘দ্রোহের ক্যানভাস’। বাংলাদেশ ইন্ডিজেনাস আর্টিস্টস ইউনিটির উদ্যোগে গতকাল ২৮ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় এ সাংস্কৃতিক প্রতিবাদ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
খাগড়াছড়িতে সংঘটিত সহিংসতায় নিহত ও ক্ষতিগ্রস্তদের স্মরণে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে পাহাড় ও সমতলের আদিবাসী শিল্পীসহ একঝাঁক বাঙালি শিল্পীও অংশ নেন। তাঁদের তুলির আঁচড়ে ফুটে ওঠে বিক্ষোভ ও সংহতির বার্তা। চিত্রকর্মের পাশাপাশি অনুষ্ঠানে কবিতা পাঠ, গান ও বক্তৃতার মধ্য দিয়ে প্রতিবাদের সুর বেজে ওঠে।
অনুষ্ঠানে প্রতিবাদী কবিতা পাঠ করেন শিল্পী সায়ান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) নির্বাহী সদস্য হেমা চাকমা। এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জুম্ম শিক্ষার্থীরা, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা তুহিন কান্তি দাশ, সোমান্তর চাকমাসহ বিভিন্ন আদিবাসী শিল্পী গানের মাধ্যমে তাদের কণ্ঠস্বর মেলান।
বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ (পিসিপি)-এর কেন্দ্রীয় নেতা রেং ইয়ং ম্রো, মানবাধিকার কর্মী অলিউর সান ও শিল্পী জয়তু চাকমা।
বক্তারা খাগড়াছড়িতে সংঘটিত ঘটনাগুলোকে বর্বরোচিত আখ্যা দিয়ে এর নিরপেক্ষ ও দ্রুত তদন্তের পাশাপাশি দোষীদের বিচারের দাবি জানান।
‘দ্রোহের ক্যানভাস’ ছিল না কেবল শিল্পের মঞ্চ, বরং একটি শক্তিশালী সামাজিক-রাজনৈতিক বার্তাবাহক। এটি দেখিয়ে দিয়েছে যে, শিল্প ও সংস্কৃতির মাধ্যমেও সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ও রাষ্ট্রীয় নেতিবাচক ভূমিকার বিরুদ্ধে জোরালো প্রতিরোধ গড়ে তোলা সম্ভব।