টেকনাফে ছাত্রলীগ ও স্থানীয় উগ্র মুসল্লীদের দ্বারা বৌদ্ধ বিহারে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, আহত ১৫

0
710

হিলভয়েস, ২৪ অক্টোবর ২০২১, টেকনাফ: টেকনাফ উপজেলার ১নং হোয়াইক্যং ইউনিয়নের কাটাখালী চাকমা পাড়ার অরন্য বৌদ্ধ বিহারে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সমর্থিত ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কর্মীসহ স্থানীয় মুসলীম যুবক দ্বারা হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা সংঘঠিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

ঘটনাটি আজ রবিবার (২৪ অক্টোবর ২০২১) বিকেল ৪ টার সময় ঘটে। এতে তিন জন হামলাকারী মুসলিমসহ চাকমা জনগোষ্ঠীর ১৫ জন নারী-পুরুষ আহত হয়েছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায় যে, এ হামলার নেতৃত্ব দিয়েছেন স্থানীয় ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতি তোফায়েল সম্রাট ও তার ভাই কায়সারসহ ২০ জন।

তাৎক্ষণিকভাবে আহতদের পরিচয় না মিললেও তাদের মধ্যে ১০ জন পুরুষ ও ৫ জন নারী রয়েছেন বলে জানা গেছে। তারা কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

আহতদের মধ্যে যাদের নাম পাওয়া গেছে তারা হলেন– হোয়াইক্যং কাটাখালীর জ্যোতি চাকমার ছেলে বলি চাকমা (৩৫), আপোষ চাকমা (২৪) ও মেয়ে বিকি চাকমা, জোদিল চাকমার ছেলে বোবল চাকমা (২৭), কাজল চাকমার ছেলে মংবুচিল চাকমা (৩০), কালুর ছেলে মো. সেলিম (২৮), আব্দুল মজিদের ছেলে মানিক (২০) ও আব্দুল শুক্কুরের ছেলে রশিদ আমিন (১৯)।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চাকমা মেয়েদের ইভটিজিংয়ের জের ধরে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সমর্থিত ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কর্মীসহ স্থানীয় কিছু মুসলিম যুবক রোববার সকালে চাকমা যুবকদের সঙ্গে বাকবিণ্ডায় জড়ায়। পরে উভয় পক্ষের স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে বসে মীমাংসা করা হয়। কিন্তু মধ্যস্থতা সভায় দুটি গ্রুপের মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে তোফায়েল সম্রাট ও তার ভাই কায়সারের নেতৃত্বে ছাত্রলীগ কর্মী এবং স্থানীয় উগ্র মুসলীম যুবকরা বৌদ্ধ মন্দির এবং ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বাড়িতে হামলা চালায়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, উগ্রবাদী মুসল্লীরা বিহারে হামলার সময় স্থানীয় বৌদ্ধরা বাধা দিতে গেলে তাদেরকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মারাত্মক আহত করে। বেশ কিছু সংখ্যক গ্রামবাসী আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেলেও, তিনজনের অবস্থা খুবই গুরুতর ও আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে হোয়াইক্যং পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মাহবুবুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। সেখানে চাকমা জনগোষ্ঠীর কিছু লোককে মারধর করা হয়েছে। বাকিটা আমি অবগত নই।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পারভেজ চৌধুরী বলেন, মূলত ইভটিজিংকে কেন্দ্র করে এ হামলার ঘটনা ঘটেছে। যেখানে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে, সেটা বৌদ্ধবিহারের একটি অংশ। তবে কারা অগ্নিসংযোগ করেছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

এ ঘটনার পর স্থানীয় বৌদ্ধরা আতংকের মধ্যে রয়েছেন বলে জানা গেছে।