হিল ভয়েস, ১১ ডিসেম্বর ২০২১, রাঙ্গামাটি: উচ্চ আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পাওয়ার পরও রাঙ্গামাটি জেলার জেল গেইট থেকে দুই জুম্মকে আটক করে নিয়ে গেল সেনাবাহিনী এবং সেনা মদদপুষ্ট সন্ত্রাসীদের একটি দল। ঐ রাতে রাঙ্গামাটি সেনা জোনে আটক রাখার পরদিন সেনা সদস্যরা আবার নতুন একটি মামলায় জড়িত করে ওই দুই জুম্মকে থানায় হস্তান্তর করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ভুক্তভোগী দুই জুম্ম হলেন- সোনারাম তঞ্চঙ্গ্যা (২৮), পীং- ভালাধন তঞ্চঙ্গ্যা, গ্রাম- ঘিলামুখ আমতলি পাড়া, গাইন্দ্যা ইউনিয়ন, রাজস্থলী উপজেলা ও সুজন তালুকদার (৩২), পীং- অনিল তালুকদার, গ্রাম- ভালুকিয়া মধ্যপাড়া, রাইখালী ইউনিয়ন, কাপ্তাই উপজেলা।
পারিবারিক ও কারাগার সূত্রে জানা গেছে, প্রায় বছর খানেক ধরে রাঙ্গামাটি জেলা কারাগারে অন্তরীণ সোনারাম তঞ্চঙ্গ্যা ও সুজন তালুকদার গত ১৮ নভেম্বর ২০২১ উচ্চ আদালত থেকে জামিনের আদেশ পান।
জামিনের আদেশ অনুযায়ী গত ২৯ নভেম্বর ২০২১ সন্ধ্যা ৭.৪০ টার দিকে রাঙ্গামাটি জেল কর্তৃপক্ষ সোনারাম তঞ্চঙ্গ্যা ও সুজন তালকদারকে মুক্তি দেয়। এই সময় সোনারাম তঞ্চঙ্গ্যার মা মুরুঙ্গি তঞ্চঙ্গ্যা (৫৮), সুজন তালুকদারের পিতা অনিল তালুকদার ও তাদের আইনজীবী এ্যাডভোকেট শাহ আলমসহ গ্রামের কয়েকজন মুরুব্বিও উপস্থিত হন। কিন্তু ঐ সময়ে সোনারাম তঞ্চঙ্গ্যা ও সুজন তালকদার জেল গেইট থেকে বের হওয়ার পরপরই সেখানে উপস্থিত হয় সাদা পেশাক পরিহিত সেনাবাহিনী ও গোয়েন্দা বাহিনীর ১৫ জন সশস্ত্র সদস্য এবং তাদের সাথে সংস্কারপন্থী ও ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) সন্ত্রাসী দলের দুই সদস্য।
সাথে সাথে সেনা সদস্যরা সোনারাম তঞ্চঙ্গ্যা ও সুজন তালুকদারকে আটক করে। এসময় সোনারাম তঞ্চঙ্গ্যার মা ও সুজন তালুকদারের পিতা সেনা সদস্যদের নিকট তাদের সন্তানদের মুক্তি দেওয়ার অনুরোধ জানান। কিন্তু সেনা সদস্যরা মুক্তি দিতে অস্বীকার করেন এবং সোনারাম তঞ্চঙ্গ্যার মা ও সুজন তালুকদারের পিতাকে এই বলে হুমকী দেন যে, তাদের কাজে বাধা দিলে তারা সবাইকে গ্রেফতার করতে বাধ্য হবে।
এরপরই সেনা সদস্যরা সোনারাম তঞ্চঙ্গ্যা ও সুজন তালুকদারকে সেখান থেকে তুলে নিয়ে যায় এবং ঐদিন সারারাত রাঙ্গামাটি সেনা জোনে আটক করে রাখে। পরদিন ৩০ নভেম্বর ২০২১ সেনা সদস্যরা রাজস্থলীর এক পুরনো দুর্জয় তঞ্চঙ্গ্যা হত্যা মামলায় জড়িত করে আটককৃতদের রাঙ্গামাটি কোতোয়ালী থানায় হস্তান্তর করে।
উল্লেখ্য, প্রায় বছর খানেক আগে সেনাবাহিনীর একদল সদস্য সোনারাম তঞ্চঙ্গ্যা ও সুজন তালকদারকে আটক করে মিথ্যাভাবে চাঁদাবাজি ও অস্ত্র মামলায় জড়িত করে পুলিশের নিকট হস্তান্তর করে। তারা উভয়েই নিরীহ ব্যক্তি। এর পূর্বে সোনারাম তঞ্চঙ্গ্যা চট্টগ্রামে গার্মেন্টে চাকরি করতেন। চট্টগ্রাম থেকে গ্রামের বাড়িতে আসলে সেনাবাহিনীর গ্রেফতার ও মিথ্যা মামলার শিকার হন।
 
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
             
             
                             
                             
                             
                                                     
                                                     
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                        