হিল ভয়েস, ১১ আগস্ট ২০২২, আন্তর্জাতিক ডেস্ক: বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামে মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ সশস্ত্রবাহিনীর নিয়োগ বন্ধ করার জন্য ছয়টি জুম্ম অধিকার সংগঠন জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী কার্যক্রম বিষয়ক দপ্তর (ডিপিকেও) এর কাছে আহ্বান করেছে।
গতকাল (১০ আগস্ট ২০২২) জুম্ম প্রবাসী সংগঠনগুলি নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সচিবালয়ের শান্তিরক্ষা মিশন বিভাগের শান্তিরক্ষা অপারেশনের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল মি: জিন পিয়েরে ল্যাক্রোইক্স সহ জাতিসংঘের নিকট যোগাযোগ করেছে। আহ্বানটির অনুলিপি প্রদান করা হয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিসেল ব্যাচেলেট, আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীর অধিকার বিষয়ক স্পেশাল র্যাপোটিয়র মিঃ ফ্রান্সিসকো ক্যালি জে এবং জেনেভায় জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনার কার্যালয়ের বাংলাদেশ ফোকাল পার্সন এর কাছে।
আহ্বান জানিয়ে স্মারকলিপি দাখিলকারী সংগঠনগুলো হল কানাডার পার্বত্য চট্টগ্রাম আদিবাসী পরিষদ, নিউইয়র্কে অবস্থিত আমেরিকান জুম্ম নেটওয়ার্ক, প্যারিসে অবস্থিত ইউরোপীয় জুম্ম আদিবাসী কাউন্সিল, দক্ষিণ কোরিয়ায় অবস্থিত জুম্ম পিপলস নেটওয়ার্ক কোরিয়া, ভারতের আগরতলায় অবস্থিত চাকমা ন্যাশনাল কাউন্সিল এবং এবং জাপান ভিত্তিক জুম্ম পিপলস নেটওয়ার্ক।
জুম্ম সংগঠনগুলো আবেদনে উল্লেখ করেছে, বাংলাদেশ সরকার ও তার সংস্থা, বাংলাদেশের সামরিক বাহিনী সব সময় জুম্ম জনগণের ওপর মানবাধিকার লঙ্ঘন করে থাকে। যদিও ২ ডিসেম্বর ১৯৯৭, বাংলাদেশ সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসীদের জন্য সীমিত আত্মনিয়ন্ত্রণের নিশ্চয়তা দিতে আদিবাসী জুম্ম জনগণের সাথে একটি শান্তি চুক্তি করেছিল, কিন্তু সরকার তার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেনি। বরং চুক্তির আগের মতোই সামরিকভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে। এখন এটা খুবই স্পষ্ট যে, বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীই হচ্ছে আদিবাসী জুম্ম জনগণের (১৩ জনগোষ্ঠী ঐক্যবদ্ধভাবে জুম্ম হিসেবে) দমন ও নিপীড়নের প্রধান অনুঘটক।
প্রয়োজনীয় দলিল সংযুক্ত করে প্রমাণ হিসেবে আদিবাসী শব্দ ব্যবহারে বিধিনিষেধ আরোপ করে প্রতিরক্ষা গোয়েন্দার মহাপরিচালকের সদর দপ্তরের নির্দেশনা এবং মিলন চাকমাকে বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড সহ সাম্প্রতিক কিছু ঘটনাবলী তুলে ধরে উল্লেখ করেছে যে, জুম্ম জনগণের উপর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে সামরিক বাহিনীই প্রধান লঙ্ঘনকারী। বাংলাদেশের সামরিক বাহিনী বর্ণবাদ, বৈষম্য এবং ধর্মীয় পরিহানি সংক্রান্ত এই সমস্ত মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাবলী সংঘটিত করে চলেছে।
জুম্ম অধিকার সংগঠনগুলো যতক্ষণ না বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ব্যাপক অর্থে মানবতা ও আদিবাসীদের অধিকারকে সম্মান প্রদর্শনে এগিয়ে আসছে ততক্ষণ পর্যন্ত ভবিষ্যতে শান্তিরক্ষী বাহিনীতে তাদের কোনো সেনা সদস্য নিয়োগ না করার মধ্য দিয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘন, বৈষম্য, বর্ণবাদ এবং বিলুপ্তির শিকার হওয়া থেকে জুম্ম জনগণকে রক্ষা করার জন্য জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী সংক্রান্ত দপ্তরের কাছে আবেদন জানিয়েছে।
 
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
             
             
                             
                             
                             
                                                     
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                        