হিল ভয়েস, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, খাগড়াছড়ি: গতকাল ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ রাত আনুমানিক ৮:৩০ ঘটিকার সময়ে উক্যনু মারমা নামে এক জুম্ম যুবককে খাগড়াছড়ি সদরস্থ মধুপুর বাজারের একটি মুন্ডির দোকান থেকে সেনাবাহিনীর একটি দল জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যাওয়ার খবর পাওয়া যায়।
এই সময় বন্ধুবান্ধবের সামনে থেকে জোরপূর্বক তাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। খাগড়াছড়ি সদরস্থ ২০৩ পদাতিক ব্রিগেড থেকে দুটি গাড়িতে এসে সেনাবাহিনীর দলটি উক্যনুকে ধরে নিয়ে যায় বলে জানা যায়।
সূত্র মোতাবেক, গতকাল মধুপুর বাজারের পাশে একটি দোকানে বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে উক্যনু মারমা মুন্ডি খাচ্ছিলেন। পরে হঠাৎ সেনাবাহিনীর দুটি গাড়ি এসে উক্যনু মারমাকে কোনো কারণ ছাড়া জোরপূর্বক টেনেহিঁচড়ে তুলে নিয়ে যায়। এই সময় তার পরনে থাকা শার্ট, প্যান্ট ছিঁড়ে যায়।
জানা যায়, উক্যনু মারমাকে সেনাবাহিনীর গাড়িতে তুলে নিয়ে যাওয়ার সময় ব্যাপক মারধর করা হয়। পরে তাকে সেনাবাহিনীর ক্যান্টনমেন্টে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখানে জোন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল খাদেমুল ইসলাম ও দুই জন উচ্চ পদস্থ সেনা কর্মকর্তা উপস্থিতিতে তাকে বিভিন্ন প্রশ্ন করা হয়।
এই সময় উক্ত ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে ছাত্র সমাজের পক্ষ থেকে উক্যনু মারমাকে ছেড়ে না দিলে আল্টিমেটাম দিয়ে জোরালো কর্মসূচি ঘোষণা করা হলে এবং ব্যাপক জনরোষে সেনাবাহিনী তাকে রাত আনুমানিক ১০ ঘটিকার সময়ে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়।
উক্যনু মারমা বাংলাদেশ মারমা স্টুডেন্টস কাউন্সিলের (বিএমএসসি) খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক বলে জানা যায়।
উল্লেখ্য গত ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ রাত ৯টা হতে রাত ১১টার মধ্যে খাগড়াছড়ি পৌরসভার সিঙ্গিনালা ১নং ওয়ার্ডের শাসন রক্ষিত বৌদ্ধ বিহারের পূর্ব পাশে খাগড়াছড়ি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির ছাত্রীকে তিন সেটেলার বাঙালি কর্তৃক গণধর্ষণের ফলে তিন পার্বত্য জেলা সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। উক্যনু মারমা উক্ত ঘটনায় খাগড়াছড়িতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বলে জানা যায়।
অনেকের ধারণা, উক্যনু মারমা ধর্ষণের প্রতিবাদ করায় সেনাবাহিনী তাকে তুলে নিয়ে যায়।
উক্ত ঘটনায় পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ ও হিল উইমেন্স ফেডারেশনের একটি যৌথ বিবৃতিতে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়। সেই সাথে বাংলাদেশ মারমা স্টুডেন্টস কাউন্সিল (বিএমএসসি)-এর পক্ষ থেকেও তীব্র নিন্দা জানানো হয়।
+ There are no comments
Add yours