কোভিড-১৯ পরিস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে পাথর উত্তোলন করছে আলিকদম স্বেচ্ছাসেবকলীগের নেতা

0
1205

হিল ভয়েস, ৬ মে ২০২০, বান্দরবান:  বান্দরবান জেলার আলিকদম উপজেলায় করোনাভাইরাসের পরিস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে ২৮৭নং তৈন মৌজার ৩নং নয়াপড়া ইউনিয়নের এলাকা হতে প্রতিদিন হাজার হাজার ঘনফুট পাথর অবৈধভাবে উত্তোলন করে পাচর করে দিচ্ছে একজন প্রভাবশালী স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাবেক সভাপতি জয়নাল আবেদিন। এ প্রভাবশালী পাথর দস্যুরা পাহাড় কেটে আর মাটি খুঁড়ে এসব পাথর উত্তোলন করছে৷

অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন করার অপরাধে গেল ৪/৫ মাস আগে আলিকদম উপজেলার বন বিভাগ, পুলিশ ও সেনাবাহিনী ভ্রাম্যমান অভিযান চালিয়ে কয়েক হাজার ঘনফুট পাথর ও মেশিনজব্দ করেছেন৷ এদিকে আলিকদম উপজেলা প্রশাসন শুরু থেকে অবৈধভাবে পাথর জব্দের অভিযান অব্যাহত রাখলেও বর্তমানে তা বন্ধ থাকায় কোভিড-১৯ মহামারী পরিস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে পাথর পাচারকারীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে প্রকাশ্যে দিবালোকে পাথর উত্তোলন করে পাচার করে দিচ্ছে।

অনুসন্ধানে গিয়ে দেখা যায়, আলিকদম উপজেলার রোয়াম্ভু এলাকার রোয়াম্ভু ঝিরি ও নুনা ঝিরি থেকে পাথর উত্তোলনের জন্য পারমিট না থাকা সত্ত্বেও তারা পাথর তুলছেন। উক্ত পারমিটের অনুকূলে পাথরগুলো পরিবহনের কোন অনুমোদন নেই এবং পারমিটের কোন পাথর উল্লেখিত স্থান থেকে পরিবহন করা সম্পূর্ণ অবৈধ, সেহেতু আলিকদম উপজেলার যে কোন স্থান থেকে পাথর উত্তোলন করা সম্পূর্ণ অবৈধ৷ দিবাগত রাতের আধারে পাথর পাচার কালে যোগেন্দ্র পাড়াবাসীর প্রতিরোধ করে পাথর ভর্তি গাড়ী জব্দ করে আলিকদম থানাপুলিশের কাছে সোর্পদ করে।

আলিকদম উপজেলা থেকে পাথর উত্তোলন সম্পূর্ণ অবৈধ বলে জানালেও বর্তমানে আলিকদম উপজেলার ২৮৭নং তৈন মৌজার নুনাঝিরি, রোয়াম্ভু খাল, ০১নং পুনর্বাসনসহ কয়েকটি ঝিরি থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার ঘনফুট পাথর উত্তোলন করছে এ পাথর উত্তোলনকারী স্হানীয় প্রভাবশালী নেতা জয়নাল আবেদিন। তারা এইসব স্থানে ঝিরির পাশে স্তুপে স্তুপে জড়ো করে রেখেছে পাথর৷ এসব পাথরগুলো ছোট ট্রাক যোগে পাচার করে দিচ্ছে পাথর খেকোরা। এর কারণে যেমন পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে৷

অনুসন্ধানে গিয়ে জানা যায় যে, আলিকদমে বিগত এক বছর ধরে পাথর উত্তোলন করে চলছে উপজেলা সদরের প্রভাবশালী নেতা।পাথর উত্তোলনের কারণে এলাকাবাসীর নানা ধরনের সমস্যা হয় বলে জানান তঞ্চঙ্গ্যাঁ সম্প্রদায়ের লোকজন। তারা বলেন, “এখন চৈত্রমাস কোন ঝিরিতে এক ফোটাও পানি নাই। পাথর উত্তোলনের ফলে সব ঝিরি শুকিয়ে মরে গেছে। পানি না থাকলে আমরা কি দিয়ে বাঁচবো। আমরা বাধা দিলে তারা বাধা শুনে না এবং উল্টা আমাদেরকে অপমানজনক কথা বলেন বিভিন্ন ধরনের মারধর ও হুমকি দিচ্ছেন।”

প্রতিদিন ট্রাক যোগে প্রায় থেকে এক থেকে দুইটি গাড়িতে করে পাথর বোঝাই করে রাস্তার কাজে নিয়ে যাচ্ছে৷ বিভিন্ন স্থানে মজুদ করেছে লক্ষাধিক ঘনফুট পাথর। আলিকদম উপজেলাবাসীর দাবি হচ্ছে, প্রশাসন অভিযান চালালেই পাথরগুলো জব্দ করা সম্ভব হবে এবং পাথর উত্তোলন দ্রুত সময়ে বন্ধ করা সম্ভব হবে। যদি পাথর উত্তোলন বন্ধ না হয় তাহলে আলিকদমে পরিবেশ বিপর্যস্ত হবে। মরুভূমি হবে পাহাড় ও বনাঞ্চল বলে মত প্রকাশ করেন বিশিষ্ট জনেরা।