আলীকদমে উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম কর্তৃক জুম্মদের ভূমি বেদখলের অভিযোগ

0
1050
ছবি: জুম্মদের ভূমি বেদখলকারী আলীকদম উপজেলা চেয়ারম্যান মো: আবুল কালাম

হিল ভয়েস, ৭ অক্টোবর ২০২১, বান্দরবান: বান্দরবান পার্বত্য জেলার আলীকদম উপজেলা চেয়ারম্যান ও পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি মো: আবুল কালাম কর্তৃক উপজেলার থানচি সড়কে অবস্থিত স্থানীয় জুম্মদের ব্যাপক ভোগদখলীয় ও জুম ভূমি বেদখল এবং বহিরাগত বাঙালিদের নিকট অবৈধভাবে সেসব ভূমি বিক্রি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

জানা গেছে, আলীকদমের থানচি সড়কে ১০ কিলো সেনা ক্যাম্পের পর হতে ২০ কিলো পর্যন্ত এলাকায় আদিবাসী ম্রো, তঞ্চঙ্গ্যা ও ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের যুগ যুগ ধরে ভোগদখলকৃত প্রায় ১ হাজার একরের অধিক পরিমাণ ভূমি রয়েছে। যেসব ভূমিতে জুম্মরা যুগ যুগ ধরে বাগান-বাগিচা ও জুমচাষের জন্য ব্যবহার করে আসছে।

কিন্তু ২০১১ সালে ভূমিদস্যু বদিউল আলমের নেতৃত্বে একটি গোষ্ঠী জোরপূর্বকভাবে আলীকদম উপজেলার ২৯১ নং তৈফা মৌজাধীন আদিবাসী জুম্মদের উক্ত ভূমিসমূহ বেদখল করে। তবে এরপর উপজেলা চেয়ারম্যান মো: আবুল কালাম ও অন্যান্য আদিবাসী নেতাদের সহযোগিতায় স্থানীয় আদিবাসী জুম্মরা ঐ ভূমিসমূহ বদিউল আলম নেতৃত্বাধীন ভূমিদস্যু চক্রের হাত থেকে উদ্ধার করেন।

সম্প্রতি স্থানীয় জুম্মরা অভিযোগ করেছেন, উপজেলা চেয়ারম্যান ও পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি মো: আবুল কালাম নিজেই উদ্ধারকৃত জুম্মদের এইসব ভূমি দীর্ঘদিন যাবৎ নিজের দখলে রেখেছেন। এমনকি তিনি ইচ্ছেমত বহিরাগত সেটেলার ও বাঙালিদের নিকট এসব ভূমি বিক্রয় শুরু করেছেন। সম্প্রতি আলীকদম থেকে থানচি সড়কের উক্ত এলাকার উভয় পাশে অনেক বহিরাগত বাঙালি ভূমি দখল ও ক্রয় করে সেখানে বিভিন্ন ধরনের বাগান সৃজন করছেন।

স্থানীয় জুম্মরা বলেন, ২৯১ নং তৈনফা মৌজাধীন উক্ত এলাকায় উক্লিনং পাড়া, সোনং পাড়া, ধর্মচর পাড়া, দমচিং পাড়া, প্রভাত পাড়া, মেন কারবারি পাড়াসহ আরো অনেক গ্রাম অবস্থিত। যেখানে আদিবাসী সম্প্রদায়ের অনেক লোকজন বসবাস করেন। এই গ্রামের লোকজন উক্ত ১ হাজার একর ভূমির উপর জুম চাষ ও বাগান সৃজন করে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ধর্মচর পাড়া ও প্রভাত পাড়ার কয়েকজন গ্রামবাসী বলেন, বিগত বছরে আলীকদম উপজেলা চেয়ারম্যান ও পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি মো: আবুল কালাম এই জিম্মি করে রাখা পাহাড়ি ভূমি ও বন থেকে প্রতি বছর অনেক টাকার গাছ বিক্রি করেন। গত বছরে তিনি পান বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সভাপতি ও পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের আলীকদম উপজেলা থানা শাখার এক নেতা মো: উমর ফারুকের নিকট ৫/৬ লক্ষ টাকার বিভিন্ন প্রজাতির গাছ বিক্রি করেছেন। এছাড়াও আলীকদম থানচি সড়কের পাশে ১২ কিলো এলাকায় কটেজ নির্মাণ করার জন্য পাহাড় কেটেছেন তিনি।